Advertisement
০৫ মে ২০২৪

আস্থা একুশের সান্ত্বনাতেই

বাহাদুরপুর দাসপাড়ার মেয়ে সান্ত্বনা দাস এ বার নির্বাচনের ময়দানে। শাসকদলের প্রার্থী হিসেবে ইতিমধ্যেই বোলপুর বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্রও জমা করেছেন।

রূপপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী সান্ত্বনা দাস। নিজস্ব চিত্র

রূপপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী সান্ত্বনা দাস। নিজস্ব চিত্র

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়
বোলপুর শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২৭
Share: Save:

বয়স সবে একুশ পেরিয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করে কলেজ থেকে চলছে পড়াশোনাও। এরই মাঝে তিনি আবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থীও।

বাহাদুরপুর দাসপাড়ার মেয়ে সান্ত্বনা দাস এ বার নির্বাচনের ময়দানে। শাসকদলের প্রার্থী হিসেবে ইতিমধ্যেই বোলপুর বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্রও জমা করেছেন।

সান্ত্বনা বিনুরিয়া সুমিত্রা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এখন পূর্ণিদেবী চৌধুরী মহিলা মহাবিদ্যালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। ছোট থেকেই মন ছিল সমাজসেবায়। আর এই কারণেই এ বারে নির্বাচনের টিকিট তাঁর হাতে। বাহাদুরপুর, ইসলামপুর ও চকপালি গ্রাম মিলে বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। এই পঞ্চায়েতেরই তপসিলি জাতির মহিলার জন্য সংরক্ষিত আসনটিতে তৃণমূল কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন সান্ত্বনা। এখনও পর্যন্ত বিরোধী দলের কোনও মনোনয়ন জমা পড়েনি। তবে নির্বাচন যদি হয়ও সেক্ষেত্রে সান্ত্বনাই জিতবে বলে মনে করছেন গ্রামবাসীর অনেকেই।

সান্ত্বনার বাবা জগন্নাথ দাস ও মা মেনকা দাস পেশায় দিনমজুর। বাহাদুরপুর দাসপাড়া গ্রামে একচিলতে বাড়ি রয়েছে তাঁদের। সেই বাড়িতে থেকে অনেক কষ্টে পড়াশোনা করেছে সান্ত্বনা। তার সঙ্গে বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ শেখা, প্রয়োজনে গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজও করে গিয়েছেন। যেই বয়স একুশ পেরিয়েছে, অমনি হতে পেয়েছেন শাসকদলের টিকিট। সান্ত্বনার মা-বাবা বললেন, ‘‘মেয়ে যদি জেতে, আশা করছি ও গ্রামের জন্য ভাল কাজই করবে।’’ সান্ত্বনার কথায়, ‘‘প্রার্থী হয়ে ভাল লাগছে। তবে পড়াশোনাটা চালিয়ে যাব। ওটাকে এক জায়গায় রেখে তার পরে বাকি সব কাজ হবে।’’

গ্রামবাসী যাদব পাল, সোমনাথ পাল জানালেন, সান্ত্বনা ছোটবেলা থেকেই সমাজসেবী, মানবদরদী। বিভিন্ন সময় গ্রামের বিভিন্ন কাজে যুক্ত থেকেছে। তিনটে গ্রামের মানুষ এক জায়গায় বসে আলোচনা করার পরেই সান্ত্বনাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে বলে এলাকায় গিয়ে জানা গেল। এতে কারও কোনও বিরোধ ছিল না। সান্ত্বনা যদি নির্বাচনে জিতে যায়, গ্রামের মানুষ ওঁকে সব সময় পাশে পাবেন বলেই আশা রাখছেন। প্রশ্ন উঠেছে, বছর একুশের মেয়ে সান্ত্বনাই কেন?

অনেকেরই সাফ জবাব, আগে এই আসনটি সাধারণ মহিলা আসন ছিল। এ বারই তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। আগে গৃহবধূদের মনোনীত করা হয়েছে। কিন্তু, তাঁরা সব সময় বাড়ির কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। সই করা কিংবা সাধারণ বৈঠক ছাড়া অন্য কাজে পাওয়া যেত না। সে কারণেই তরুণ প্রজন্মকে সুযোগ দেওয়া হল। নতুন প্রার্থী দুর্নীতিগ্রস্ত হবেন না বলেও তাঁদের আশা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE