Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বিজেপির অতিরিক্ত ৯

গোড়ায় জেলা পরিষদে বিজেপির মনোনয়ন জমা পড়েছিল ৮০টি। গত বৃহস্পতি আর শুক্রবার অতিরিক্ত ৪২ জন প্রার্থীর মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলেন মোটে দু’জন। এই পরিস্থিতিতে শনিবার, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে কী হয়, সে দিকে তাকিয়ে ছিলেন দলের কর্মী সমর্থকেরা। দিনের শেষে আরও ৩১ জন মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন।

নদিয়ার চাঁদের নামে বিজেপির প্রতীকে প্রচার। নিজস্ব চিত্র

নদিয়ার চাঁদের নামে বিজেপির প্রতীকে প্রচার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:৩৫
Share: Save:

পুরুলিয়া জেলা পরিষদের ৩৮টি আসনে বিজেপির ৪৭ জন প্রার্থী রয়ে গেলেন।

গোড়ায় জেলা পরিষদে বিজেপির মনোনয়ন জমা পড়েছিল ৮০টি। গত বৃহস্পতি আর শুক্রবার অতিরিক্ত ৪২ জন প্রার্থীর মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলেন মোটে দু’জন। এই পরিস্থিতিতে শনিবার, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে কী হয়, সে দিকে তাকিয়ে ছিলেন দলের কর্মী সমর্থকেরা। দিনের শেষে আরও ৩১ জন মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন। গোঁজ-কাঁটা হয়ে লড়াইয়ে রইলেন ৯ জন।

এই ৯ জনের মধ্যে রয়েছেন নদিয়ার চাঁদ বাউড়ি। গত বিধানসভা নির্বাচনে পাড়া কেন্দ্র থেকে তিনি বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। দলের শীর্ষ নেতা রাজনাথ সিংহ তাঁর কেন্দ্রে নির্বাচনী প্রচারেও এসেছিলেন। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদের রঘুনাথপুর ২ ব্লকের ৩০ নম্বর আসনে প্রতীক না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। নদিয়ার চাঁদ বলেন, ‘‘মণ্ডল কমিটির সভাপতি, পর্যবেক্ষক— সবার সম্মতি নিয়েই মনোনয়ন জমা করেছিলাম। আমার এলাকায় দলের রাজ্য সভাপতির সভাও হয়েছে। সেখানে প্রার্থী হিসাবে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু দলের জেলা নেতৃত্বর একাংশ চক্রান্ত করে আমাকে প্রতীক দেননি।’’ অবশ্য দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী শনিবার বলেন, ‘‘নদিয়ার চাঁদ বাউড়ি দলকে না জানিয়ে মনোনয়ন জমা করেছিলেন। তাই এ ব্যাপারে আমাদের কোনও দায়িত্ব নেই।’’

জেলা পরিষদের পাড়া ব্লকের একটি আসনে নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির ওবিসি মোর্চার প্রাক্তন জেলা সভাপতি সনাতন মাহাতোর স্ত্রী নীলাক্ষি মাহাতো। সনাতনবাবু বলেন, ‘‘দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশ জানিয়েছিলেন, আমার স্ত্রীকে প্রতীক দেওয়া হবে। শেষে জানানো হয়, প্রতীক অন্য কাউকে দেওয়া হয়েছে। নিচুতলার কর্মীদের কথামতো মনোনয়ন প্রত্যহার করেননি আমার স্ত্রী।” নির্দল হিসাবে থেকে বাঘমুণ্ডির বিজেপি নেতা আশুতোষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘প্রতীক দেওয়া নিয়ে দুর্নীতি হওয়ায় বাধ্য হয়েই আমাকে নির্দল হিসাবে দাঁড়াতে হয়েছে।’’

কাশীপুর ব্লক বাদ দিলে, এই জেলার কোথাও বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠেনি। পুরুলিয়ায় বিরোধী দলের মধ্যে বিজেপির ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের মোট আসনের থেকে বেশি মনোনয়ন জমা পড়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ৪৪৬টি আসনের জন্য বিজেপির মনোনয়ন জমা পড়েছিল ৬৭০টি। আর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯৪৪টি আসনে মনোনয়ন জমা করেছিলেন বিজেপির ২৫৭৪ জন।

শনিবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। রাত পর্যন্ত হিসেব কষা চলেছে। তার আগে, শুক্রবার পর্যন্ত পাওয়া হিসেবে দেখা গিয়েছিল— পঞ্চায়েত সমিতির ২২৪ জন অতিরিক্ত প্রার্থীর মধ্যে মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন ৫৬ জন। গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির ৬৩০ জন অতিরিক্ত প্রার্থীর মধ্যে ৩৭৬ জন।

দলের এক নেতার দাবি, কোনও কারণে কেউ মনোনয়ন তুলে নিলে লড়াইয়ের ময়দানে যাতে দলের হয়ে অন্য কেউ এসে দাঁড়াতে পারেন, সেই কথা ভেবেই এক আসনে একাধিক প্রার্থী দিয়ে রাখার কথা ভাবা হয়। দলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের প্রতি আসনেই যাতে তৃণমূলের সঙ্গে আমাদের লড়াই হয়, সেটা নিশ্চিত করতে কৌশলগত ভাবে বহু আসনে ডামি (নকল) প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল।” কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ওই নকল প্রার্থীরাই কিছু জায়গায় গোঁজ হতে বসেছেন। পাশাপাশি, অনেক আসন থেকে বিক্ষুব্ধরাও সরতে নারাজ।

তবে দলের জেলা সভাপতি শনিবার বলেন, ‘‘দলের পদাধিকারী ও গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। না মানলে দলগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Elections 2018 Nomination BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE