Advertisement
১৫ জানুয়ারি ২০২৫

মিছিল থেকে ঢিল, ভাঙল বাসের কাচ

ধর্মঘটের সমর্থকদের মিছিল থেকে উড়ে এল ঢিল। তাতে ভাঙল দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার একটি বাসের সামনের কাচ। অল্পের জন্য জখম হওয়া থেকে রক্ষা পেলেন চালক

সিউ়়ড়িতে সরকারি বাসে ভাঙচুর (উপরে)।

সিউ়়ড়িতে সরকারি বাসে ভাঙচুর (উপরে)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৪৭
Share: Save:

ধর্মঘটের সমর্থকদের মিছিল থেকে উড়ে এল ঢিল। তাতে ভাঙল দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার একটি বাসের সামনের কাচ। অল্পের জন্য জখম হওয়া থেকে রক্ষা পেলেন চালক। সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ সহ ১১টি ট্রেড ইউনিয়ন ও শিল্পভিত্তিক ফেডারেশনগুলির ডাকা দেশজুড়ে দু’দিন ব্যাপী ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন, বুধবার সকালে এমনটাই হল সিউড়ি শহরে।
এমনিতে দু’চারটি দোকানপাঠ বন্ধ ছিল। বেসরকারি বাস স্বাভাবিকের তুলনায় কম ছিল। ধর্মঘটের সমর্থনে একাধিক বার মিছিল হলেও মঙ্গলবার জেলা সদর সিউড়িতে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। স্কুল-কলেজ, অফিস কাছারি সবই খোলা ছিল। এ দিনও পরিস্থিতি মোটের উপরে স্বাভাবিক ছিল। ব্যতিক্রম কেবল বাস ভাঙচুর। বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘দু’দিনের ধর্মঘটে এমনিতে কোনও প্রভাব পড়েনি। তবে মিছিল থেকে বাস ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে দুই সমর্থককে গ্রেফতার করেছে।’’
দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থা সূত্রে খবর, বহরমপুর-দুর্গাপুর রুটের একটি বাস এ দিন বহরমপুর থেকে সকাল সাতটায় ছেড়ে বেলা সোয়া ১০টা নাগাদ সিউড়ি পুরসভার কাছে পৌঁছলে ঘটনাটি ঘটে। বাসের চালক রাধামাধব মণ্ডল বলছেন, ‘‘সিউড়িতে যখন ঢুকি, তখন ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল চলছে। মিছিল থেকেই বলা হয়, এক ধারে দাঁড়াতে। স্টার্ট চালু থাকলেও আমি দাঁড়িয়েই গিয়েছিলাম। অন্য যানবাহন সামনে ছিল। কিন্তু, হঠাৎ মিছিল থেকে একটি ঢিল ছোঁড়া হলে বাসের সামনের কাঁচ ভেঙে আমার কানের পাশ দিয়ে চলে যায়।’’ সরকারি পরিবহণ সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করা হচ্ছে।
সিআইটিউ-র জেলা সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর চক্রবর্তী অবশ্য মিছিল থেকে ঢিল ছোঁড়ার অভিযোগ মানেননি। তিনি বলছেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ মিছিল হয়েছে। আমাদের কেউ ভাঙচুর করেছে বলে খবর নেই।’’ সিটু নেতার বরং দাবি, ‘‘শাসকদল পুলিশ ও প্রশাসনকে চরম ভাবে কাজে লাগিয়েও ধর্মঘট ব্যর্থ করতে পারেনি। কোথাও দু’চারটে বেসরকারি বাস চলেছে। সামান্য কিছু দোকানপাঠ খোলা ছিল।’’
এ দিকে, মঙ্গলবার রামপুরহাটে বাস নিয়ে যে ছবি দেখা গিয়েছিল, এ দিন তার উল্টোটা দেখা গিয়েছে জেলা সদরে। বুধবার সমস্ত রুটের বেসরকারি বাস চলেছে। বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির রামপুরহাট শাখার সম্পাদক জামারুল ইসলাম জানিয়েছেন, বেসরকারি বাস চলাচলে কোনও অসুবিধা হয়নি। সিআইটিইউর পক্ষে জানানো হয়েছে, পরীক্ষা থাকায় বেসরকারি বাস বন্ধ থাকার সিদ্ধান্তে কিছুটা শিথিল মনোভাব নেওয়া হয়েছে। তাতেও সমস্ত বাস রাস্তায় নামেনি।
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ধর্মঘটের সমর্থনে বিভিন্ন কর্মসূচিতে যে ক’জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়। বুধবার রামপুরহাটে নতুন করে কোনও ঘটনা ঘটেনি। আগের দিন ধর্মঘটের পক্ষে থাকা সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ধটনা ঘটলেও এ দিন আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য মিছিলের পুরভাগে ছিল পুলিশ।
ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকল বোলপুরে। এ দিনও অন্য দিনের মতোই বাস পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল। তবে মঙ্গলবারের মতোই ধর্মঘটের সমর্থকেরা বুধবার বোলপুরে পদযাত্রা করেন। তপন সাহা সহ অন্য নেতৃত্বরা জানান, এলাকার মানুষ সাধারণ ভাবে যেটা মেনে নেবেন সেটাই করা হয়েছে। জোর-জুলুম করে কোনও দিনই কিছু করা হয়নি, হবেও না। ইলামবাজারে ১৪ নম্বর রাজ্য সড়ক কিছু সময়ের জন্য অবরোধ করেন ধর্মঘটের সমর্থকেরা। এতে যানজট হয়। পরে ইলামবাজার পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা।
এমনিতেই বুধবার বোলপুরের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকে। বুধবার বাজার বন্ধের দিন আর ধর্মঘটের দিন এক সঙ্গে থাকায় রাস্তায় লোকজনের সংখ্যা অন্য দিনের তুলনায় কম ছিল। ব্যাঙ্ক সহ বেশ কিছু এটিএম বন্ধ থাকায় অসুবিধায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Politics CPM Bharat Bandh 2019 Bandh Strike Conflicts
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy