মেধাবী: সৌরীশ। নিজস্ব চিত্র
টিভিতে মেধাতালিকা দেখানো শুরু হতেই তার সামনে বসে পড়েছিল বীরভূম জেলা স্কুলের ছাত্রটি। প্রথম থেকে নবম পর্যন্ত স্থানাধিকারীদের নাম দেখানো হয়ে যেতেই মনমরা গিয়েছিল সৌরীশ। উঠেও পড়েছিল। এ বারও কি তা হলে মেধাতালিকায় ঠাঁই হল না! তখনই টিভিতে ভেসে ওঠে নাম— দশম হয়েছে সৌরীশ বন্দ্যোপাধ্যায়!
মাধ্যমিকে স্কুলের সেরা হয়েছিল সৌরিশ। অল্পের জন্য স্থান হয়নি মেধা তালিকায়। সে আক্ষেপ ছিলই। এ বার স্কুল তো বটেই, জেলার সেরা হল বীরভূম জেলা স্কুলের এই ছাত্র। ভাল ফল করে খুব খুশি স্বামী বিবেকানন্দের ভক্ত সৌরীশ। আপ্লুত বাবা-মা, আত্মীয়-পরিজন থেকে বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশীরা। গর্বিত শিক্ষকেরাও।
এক দিকে জৈষ্ঠ্যমাসের মঙ্গলবার, মঙ্গলচণ্ডী পুজো। এ দিনেই আবার একমাত্র ছেলের উচ্চ মাধ্যমিক রেজাল্ট। সিউড়ির সমন্বয়পল্লির বাড়িতে উৎকণ্ঠায় ছিলেন সৌরীশের মা সুতপাদেবী। উদ্বিগ্ন ছিলেন বাবা সুশান্তবাবুও। পরিবার সূত্রেই জানা গেল, টিভিতে মেধা তালিকার নবম স্থান পর্যন্ত দেখে খানিকটা হতাশা তৈরি হয়েছিল সৌরীশের মনেও। তখনই ঘোষণা হয় তার নাম। মুহূর্তে আবেগে ভেসে যান উপস্থিত সকলে।
এত দিন নাওয়া-খাওয়া ভুলে পড়াশোনাকেই পাখির চোখ করে এসেছে সৌরীশ। ফুটবল, ক্রিকেট পছন্দের খেলা হলেও সে সব দেখার সময় কোথায়। সৌরীশের কথায়, ‘‘একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিকেলের দিকে একটু-আধটু খেলতে যেতাম। দ্বাদশ শ্রেণিতে উঠে সে সব বন্ধ। স্কুল, টিউশন এবং পড়ার মঝে বিনোদন বলতে গল্পের বই পড়া।’’ ইচ্ছে ইঞ্জিনিয়র হওয়া। দিনে ১০-১২ ঘণ্টা খুঁটিয়ে পড়েই সাফল্য, জানাচ্ছে সৌরীশ। জানাতে ভুলছে না, এমন ফলের নেপথ্যে দাদুর ভূমিকা অনেক।
আদতে রাজনগরের বাসিন্দা হলেও সিউড়িতে বাড়ি করেছিলেন পেশায় অধ্যাপক সৌরীশের দাদু। ছেলের পড়াশোনার জন্য পাকাপাকি ভাবে সিউড়িতে থাকছেন সৌরীশের বাবা সুশান্তবাবুও। তিনি বলছেন, ‘‘ছেলে পড়াশোনায় বরাবরই ভাল।’’ তিনি নিজে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করে দুর্গাপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষক। ছেলের আগ্রহ দেখে তিনি চান সেও আসুক এই পেশায়। তবে জয়েন্টে সৌরীশের খুব ভাল র্যাঙ্ক হয়নি। জুন মাসে আইআইটির ফলের অপেক্ষায় রয়েছে সে।
ছেলের ভাল দেখে মঙ্গলচণ্ডীর পুজোর প্রস্তুতি আর বহর বাড়িয়ে দিয়েছেন সুতপাদেবী। তাঁর ফাঁকে বললেন, ‘‘সত্যিই খুব ভাল লাগছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy