আবার বাঁকুড়ায় নির্বাচনী প্রচারে আসছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষ্ণুপুর এবং বাঁকুড়া লোকসভা আসনের জন্য মমতার দুটি পৃথক কর্মসূচি রয়েছে শনি এবং রবিবার। অন্য দিকে, রবিবার বাঁকুড়া জেলায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। সপ্তাহ শেষে দুই ‘হেভিওয়েটের’ কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তেজনার পারদে ফুটছে তৃণমূল এবং বিজেপি। সভায় কারা বেশি লোক টানতে পারে, তাই নিয়েই ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে টক্কর।
লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে এক দফা সভা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বাঁকুড়া লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর সমর্থনে রাইপুরে এবং বিষ্ণুপুরের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলের সমর্থনে পাত্রসায়রে জনসভা করেছেন তিনি। ওই দুই কেন্দ্রে ভোটের আগে আবারও প্রচারে আসছেন মমতা। সুজাতার সমর্থনে শনিবার দুপুরে বিষ্ণুপুর হাই স্কুল মাঠে সভা করবেন তৃণমূলনেত্রী। রবিবার বিকেলে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী অরূপের প্রচারে লালবাজার থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করবেন।
রবিবার দুপুরে বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের নিকুঞ্জপুর হাই স্কুলের মাঠে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে একসঙ্গে বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ এবং বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের সমর্থনে সভা করবেন তিনি। সপ্তাহ শেষে মুখ্যমন্ত্রীর জোড়া সভা এবং প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে বাঁকুড়া জেলা জুড়ে সাজ সাজ রব।
বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখার কথায়, ‘‘এর আগে প্রধানমন্ত্রী দু’বার বাঁকুড়া লোকসভা এলাকায় এলেও এই প্রথম বিষ্ণুপুর লোকসভা এলাকায় আসছেন। স্বাভাবিক ভাবেই দলের কর্মীরা উচ্ছ্বসিত। প্রধানমন্ত্রীর সভায় দুই লোকসভা এলাকা থেকেই লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে।’’ অমরনাথ আরও বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের পর দু’টি আসনেই আমাদের দলের প্রার্থীদের জয় একশো শতাংশ নিশ্চিত হয়ে যাবে। মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর পাল্টা কর্মসূচী করলেও তাতে কিছু যায় আসে না।’’ বিজেপি জেলা নেতৃত্বের খোঁচা, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সভায় লোক আসবে না বুঝতে পেরে তৃণমূল বিষ্ণুপুরে একটি ছোট মাঠে সভার আয়োজন করেছে।’’
আরও পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি নিয়ে বিজেপিকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে তৃণমূলও। বড়জোড়ার বিধায়ক তথা তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক অলোক মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘বিজেপির জুমলাবাজি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে মানুষের কাছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর সভায় লোক হবে না। অন্যান্য বারের মতো পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলি থেকে দু’শো গাড়িতে লোক এনে সভা ভরাবে ওরা। সেই জায়গায় শুধুমাত্র বিষ্ণুপুর লোকসভা থেকেই প্রায় পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর সভায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে যোগ দেবেন। আর ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর নিঃসন্দেহে আমাদের কাছে বাড়তি পাওনা।’’ বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বাঁকুড়া লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সভায় যদি এক লক্ষ লোক হয় তা হলে, রবিবার বাঁকুড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রায় পাঁচ লক্ষ লোকের জমায়েত হবে। তিনি বলেন, ‘‘শুধু তো ভোটের সময় নয়। মুখ্যমন্ত্রী বার বার মানুষের জন্য উন্নয়নের ডালি নিয়ে বাঁকুড়ায় হাজির হয়েছেন। তা স্থানীয়েরা জানেন। সে জায়গায় বিজেপির প্রধানমন্ত্রী হোক বা বিজেপি প্রার্থী, এঁরা সকলেই ভোটপাখি। ভোট পেরোলেই আবার গা ঢাকা দেবেন।’’