Advertisement
১৯ মে ২০২৪

তৃণমূলে যোগ ব্লক কংগ্রেস সভাপতির

জেলা কংগ্রেস সহ-সভাপতির পরে এ বার ব্লকের সভাপতি। ভোটের মুখে জোটকে ধাক্কা দিয়ে দলবদলের বাজারে ফের কংগ্রেসের এক নেতাকে তুলে নিল তৃণমূল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আদ্রা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৬ ০১:২৩
Share: Save:

জেলা কংগ্রেস সহ-সভাপতির পরে এ বার ব্লকের সভাপতি। ভোটের মুখে জোটকে ধাক্কা দিয়ে দলবদলের বাজারে ফের কংগ্রেসের এক নেতাকে তুলে নিল তৃণমূল।

বুধবার সন্ধ্যায় রঘুনাথপুর ১ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি বীরবল কর্মকার অনুগামী-সহ যোগ দিলেন শাসকদলে। আড়রা গ্রামে তৃণমূলের একটি সভায় বীরবলবাবুর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের সৃষ্টিধর মাহাতো। এ দিন বীরবলবাবুর সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন প্রায় শতাধিক কংগ্রেস কর্মী। বীরবলবাবুর দাবি, বামফ্রন্টের সঙ্গে কংগ্রেসের জোটের বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে তাঁরা দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে বীরবলবাবু বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে বামফ্রন্টের সঙ্গে লড়াই করার পরে ওদেরই সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে নামা নিয়ে প্রথম থেকেই আমাদের আপত্তি ছিল। এই জোট কংগ্রেসের অধিকাংশ বয়স্ক এবং নিচুতলার কর্মীই মেনে নিতে পারেননি। তাঁদের মতকে সম্মান দিতে সিপিএমের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে আমরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।” বীরবলবাবুর দাবি, গত বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমকে হারাতে তৃণমূলের সঙ্গে জোট এবং এ বারের নির্বাচনে ফের তৃণমূলকে হারাতে সিপিএমের সঙ্গে জোট আদপে কংগ্রেসের সংগঠনকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাঁর দাবি, ‘‘ক্ষমতা দখলের জন্য বার বার জোটসঙ্গী বদল মানতে পারছেন না আমাদের মত দীর্ঘ দিনের কংগ্রেসের কর্মীরা।”

নির্বাচনের মুখে কংগ্রেসে ভাঙন ধরায় স্বভাবতই খুশি শাসকশিবির। রঘুনাথপুর কেন্দ্রে এ বার লড়াইটা যে খুব একটা সহজ নয়, তা মেনে নিচ্ছেন শাসক দলের অনেক নেতাই। বস্তুত, এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের সংগঠন আহামরি কিছু নয়। পঞ্চায়েত সমিতি বা পুরসভা দূর অস্ত, একক ভাবে কোনও পঞ্চায়েতও কংগ্রেসের দখলে নেই। গত লোকসভা নির্বাচনে রঘুনাথপুর কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছিলেন মাত্র হাজার চারেক ভোট, যা কি না মোট ভোটের মাত্র ২.২৫ শতাংশ। কিন্তু ওই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীর কাছে বাম প্রার্থী পরাজিত হন মাত্র ২.৫৩ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে। ফলে এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে বাম এবং কংগ্রেসের জোট রীতিমত রঘুনাথপুর কেন্দ্রে রীতিমত কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি ফেলে দিয়েছে শাসকদলকে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস শিবিরে ভাঙন ধরাতে পেরে দৃশ্যতই খুশি তৃণমূল। রঘুনাথপুরের বিদায়ী বিধায়ক তথা এ বারের নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী পূর্ণচন্দ্র বাউরি জানান, আগেই রঘুনাথপুর পুরসভার বিজেপির এক মাত্র কাউন্সিলার-সহ শহরের বিজেপি কর্মীদের একাংশ যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। এ বার বীরবলবাবুর দলবদলের ফলে বিরোধী ভোটের একটা বড় অংশ তাঁদের ঝুলিতেই চলে আসবে বলে মনে করছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে পূর্ণচন্দ্রবাবু আক্রমণ করেছেন বাম-কংগ্রেস জোটকেও।

রঘুনাথপুর পুরসভা এলাকা বাদ দিয়ে ব্লক এলাকাগুলিতে বীরবল কর্মকার এবং তাঁর দাদা জহর কর্মকার পরিচিত মুখ ছিলেন। বীরবলবাবুর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার এলাকায় কংগ্রেসের সংগঠন বেশ কিছুটা ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও এই দলবদলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, বীরবলবাবু দলের ব্লক সভাপতি হলেও দলের কাজে বেশ কিছু দিন ধরেই দেখা যাচ্ছিল না তাঁকে। তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেসের সংগঠনে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই জেলা নেতৃত্বের দাবি। জোট হওয়ার পর দীর্ঘ দিন পেরিয়ে গেলেও নির্বাচনের ঠিক আগে এই দলবদল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। জেলার কংগ্রেস নেতাদের দাবি, এই দলবদল জোটের উপরও কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না।

এসইউসির সভা। দুই বিধানসভা কেন্দ্রে দলের প্রার্থীদের সমর্থনে নির্বাচনী সভা করল এসইউসিআই। বৃহস্পতিবার বিকেলে পাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের সাঁওতালডিহিতে দলীয় প্রার্থী মিহির সহিসের সমর্থনে একটি সভা হয়। আর একটি সভা হয় রঘুনাথপুর বিধানসভা কেন্দ্রের নিতুড়িয়ার সড়বড়ি মোড়ে ওই কেন্দ্রের প্রার্থী কিষ্ট বাউরির সমর্থনে। সাঁওতালডিহির সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের শ্রমিক সংগঠন এআইইউটিইউসির সর্বভারতীয় কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত্য সিংহ। সড়বড়ির সভায় ছিলেন দলের রাজ্য কমিটির সদস্য জয়দেব পাল। জেলার ন’টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে এসইউসিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

congress tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE