Advertisement
E-Paper

ক্যানালের পাড় ভেঙে ডুবল জমি

ফের সেচ ক্যানালের বাঁধ ভাঙা জলে বিঘার পর বিঘা ধান জমি ডুবল। একটা ক্ষতি কোনওমতে সামলিয়ে ফের মাথায় হাত শতাধিক চাষির। এবং ক্ষতির জন্য সেচ দফতরের গাফিলতিকেই দায়ি করছেন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। তাঁদের খেদ, একবার আর্থিক দিক ক্ষতি সামাল দেওয়ার পরে পুনরায় তাঁরা বড় ক্ষতির মুখে পড়লেন

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ০২:১২
ভাসান: ফের ভেসে গেল জমি। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

ভাসান: ফের ভেসে গেল জমি। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

এক মাসের ব্যবধানে দু’বার!

ফের সেচ ক্যানালের বাঁধ ভাঙা জলে বিঘার পর বিঘা ধান জমি ডুবল। একটা ক্ষতি কোনওমতে সামলিয়ে ফের মাথায় হাত শতাধিক চাষির। এবং ক্ষতির জন্য সেচ দফতরের গাফিলতিকেই দায়ি করছেন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। তাঁদের খেদ, একবার আর্থিক দিক ক্ষতি সামাল দেওয়ার পরে পুনরায় তাঁরা বড় ক্ষতির মুখে পড়লেন। আর ঘুরে দাঁড়ানোর পথ নেই!

শুক্রবার বিকালে নলহাটি থানার কয়থা মহেষপুর সেচ ক্যানালের পাড়ের একাংশ ভেঙে কয়থা, মহেষপুর মৌজার প্রায় পঞ্চাশ থেকে ষাট একর জমির ধান জলের তলায়। এলাকার চাষিরা জানালেন সেচ ক্যানালের পাঁচ থেকে ছয় জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

তার মধ্যে বেলেমাঠ এলাকায় সব থেকে বড় একটি জায়গায় প্রায় ২০ ফুট লম্বা এলাকা জুড়ে সেচ ক্যানালের মাটি জলের তোড়ে ধুয়ে মুছে গিয়েছে। এর ফলে এলাকার ধান জমিতে তিন ফুট উচ্চতায় জল জমে গিয়েছে।

কয়থা গ্রামের নিমতলাপাড়ার চাষি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘এক মাস আগে অতিরিক্ত বৃষ্টির জলের সঙ্গে ক্যানাল দিয়ে জলের তোড়ে ক্যানাল পাড়ের মাটি সরে বিস্তীর্ণ এলাকার চাষ জমি জলে ডুবে ছিল। সেই সময় বিঘে প্রতি সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ করে ধান পুঁতেছিল চাষিরা। কিন্তু ধান চাষ করা জমি চারদিন জলের তলায় ডুবে থাকার জন্য ধানে গাছ পচে গিয়েছিল। চাষিরা কোনওক্রমে সেই ক্ষতি সামাল দেওয়ার পরে আবার এই ঘটনা ঘটল।’’

গ্রামের বাইরে মাড়গ্রাম, বাউটিয়া, চাচকা— এই সমস্ত জায়গা থেকে শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে ৫০০ টাকা দাম দিয়ে ধানের বীজ সংগ্রহ করে সাত দিন আগে এলাকার চাষিরা তাঁদের ধান পোঁতার কাজ শেষ করেছেন। সাদ্দাম হোসেনের দাবি, ‘‘শুক্রবার সেচ ক্যানালের পাড় ভেঙে প্রায় দশ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছে।’’

কয়থা গ্রামের মল্লিকপাড়ার বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘মাস খানেক আগে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা কোনওক্রমে ক্ষতি সামাল দিয়ে বাইরে থেকে বীজ সংগ্রহ করে নতুন করে আবার ধান চাষ করেছিল। কিন্তু এ বার আবার নতুন করে যে ক্ষতির সম্মুখীন হল চাষিরা তাতে আর ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও সুযোগ নাই।’’

কয়থা গ্রামের হাটতলা পাড়ার বাসিন্দা নাসিরউদ্দিন শেখ জানালেন, পাঁচ বিঘে জমিতে নতুন করে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু সেচ ক্যানালের পাড় ভেঙে ধান জমিতে জল ঢুকেছে। কয়েকদিন পরে জল সরলেও ধান গাছ পচে যাবে। কিন্তু নতুন করে চাষ শুরু চাষ করতে আর ধানের বীজ পাওয়া যাবে না। তাই ওই সমস্ত জমি এ বার পতিত রাখতে হবে।

অন্যদিকে এলাকার চাষিদের অভিযোগ, সেচ ক্যানাল সংস্কার না করার জন্য সেচের জল নীচের দিকে না গিয়ে এক জায়গায় জমা হয়ে থাকছে। এর ফলে জমে থাকা জলের তোড়ে দুর্বল সেচ বাঁধ ভেঙে পড়েছে। এ ছাড়াও মাস খানেক আগে সেচ ক্যানালের পাড় ভাঙার পরে সেচ দফতর থেকে ভালো ভাবে সেচ ক্যনালের পাড় পর্যাপ্ত মাটি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়নি।

সেচ দফতরের গাফিলতিতে পুনরায় বিস্তীর্ণ এলাকার ধানের জমি জলের তলায় চাষিরা জানান, শনিবার সকালে এ ব্যাপারে স্থানীয় বিধায়ককে অভিযোগ করা হয়েছে।

বিধায়ক মৈনউদ্দিন শামস বলেন, ‘‘এলাকাবাসী আমাকে ফোনে তাঁদের অসুবিধার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।’’ সেচ দফতরের ময়ূরাক্ষী উত্তর ক্যানালের নলহাটি বিভাগের সহকারি বাস্তুকার সুকান্ত দাস বলেন, ‘‘যতটা বলা হচ্ছে ততটা ঠিক ভাঙন নয়। বিষয়টি নজরে আছে।’’

Canal Land Submerged ক্যানাল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy