Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গলায় বেগুনি আটকে মৃত্যু, ভাঙচুর 

শিশুটির দাদু পরেশনাথ আঢ্যের দাবি, ‘‘নাতিকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার পরে সে নড়ে ওঠে। প্রস্রাবও করে। সে বেঁচে আছে মনে করে সঙ্গে সঙ্গে আমরা হাসপাতালে ছুটি। কিন্তু চিকিৎলসক ফের জানিয়ে দেন, আগেই মারা গিয়েছে।’’

হাসপাতালে ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৯ ০০:৩৮
Share: Save:

গলায় তেলেভাজার টুকরো আটকে গিয়েছিল আড়াই বছরের শিশুর। তাতেই শিশুটির মৃত্যু হয় বলে জানিয়ে দিয়েছিল হাসপাতাল। শ্মশানে নিয়ে গেলে সেই শিশু নড়ে ওঠে বলে দাবি করে পরিজনেরা ফিরে যান হাসপাতালে। চিকিৎসক ফের জানান, মৃত্যু হয়েছে শিশুটির। এরপরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে গোলমাল করার অভিযোগ ওঠে শিশুর পরিজনদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বিষ্ণুপুর হাসপাতালের ঘটনা।

এ দিন সকালে বিষ্ণুপুর শহরের কৃষ্ণগঞ্জের বধূ শিল্পী পাল তাঁর ছেলে শুভমকে নিয়ে বাপের বাড়ি তিলবাড়িতে গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, ছেলেকে বেগুনি খাওয়াচ্ছিলাম। সেই সময় একটি স্কুটার পড়ে গেলে সে খুব ভয় পেয়ে যায়। কোনও কারণে তেলেভাজার টুকরো তার গলায় আটকে যায়। বমি করে। শিল্পীর দাবি, ‘‘ছেলের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে দেখে সঙ্গে সঙ্গে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু চিকিৎসককে খুঁজে পেতেই অনেকখানি সময় চলে যায়। পরে চিকিৎসক এসে পরীক্ষা করে জানায়, ছেলে মারা গিয়েছে। আমি নিশ্চিত সময়মতো চিকিৎসা শুরু হলে আমার ছেলে বেঁচে যেত।’’

তা নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও গোলমাল তখন তেমন হয়নি। শিশুটির দাদু পরেশনাথ আঢ্যের দাবি, ‘‘নাতিকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার পরে সে নড়ে ওঠে। প্রস্রাবও করে। সে বেঁচে আছে মনে করে সঙ্গে সঙ্গে আমরা হাসপাতালে ছুটি। কিন্তু চিকিৎলসক ফের জানিয়ে দেন, আগেই মারা গিয়েছে।’’ তাঁদের প্রশ্ন, পর্যবেক্ষণে না রেখে কেন শিশুটিকে মৃত বলে ছেড়ে দেওয়া হল। হয়তো প্রাণ ফিরেছিল। হাসপাতালে থাকলেও কিছু একটা করাও যেত। সেই সুযোগ পাওয়া গেল না।

যদিও চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মৃত্যুর পরেও অনেক সময় শরীরের অঙ্গ নড়ে ওঠে। তাতে বেঁচে যাওয়ার ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়ে থাকতে পারে।

কিন্তু মৃত্যুর পরে ঘণ্টা চারেক হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রেখে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে বলে জানাচ্ছেন খোদ হাসপাতাল সুপার সুব্রত রায়। এ ক্ষেত্রে রাখা হয়নি কেন? সেই প্রশ্ন তুলেই রোগীর পরিজন ও অন্য রোগীর আত্মীয়েরা হাসপাতালে বিক্ষোভ শুরু করেন। অভিযোগ সেই সময় দু’-এক জন জরুরি বিভাগে একটি দরজায় ভাঙচুর চালায়।

সুপার বলেন, “শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা উচিত ছিল। কী হয়েছে, কোন চিকিৎসক শিশুটিকে দেখেছেন সব খোঁজ নিচ্ছি।’’

শিশুর পরিবারের সঙ্গে এসেছিলেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর দেবপ্রিয় বিশ্বাস। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘বিষ্ণুপুর হাসপাতালের নতুন ভবন তৈরি হলেও চিকিৎসার মান তলানিতেই। চিকিৎসকেরা নিজেদের মর্জিতে থাকেন। দায়িত্ববোধ থাকলে শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রেখে ন্যূনতম চিকিৎসা করার চেষ্টা করতেন। এই গাফিলতির তদন্ত দাবি করছি।’’ হাসপাতাল সুপার বলেন, ‘‘অভিযোগ থাকলে শিশুর পরিবারকে লিখিত ভাবে জানাতে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child Death Vandalism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE