প্রতীকী ছবি
বালিঘাটকে ঘিরে ফের তেতে উঠল অজয়-সংলগ্ন দুই পার।
স্থানীয়দের দাবি, রবিবার সকালে অজয় নদ থেকে ‘অন্যায়ভাবে’ বালি তুলেছে বর্ধমানের লোক। এই অভিযোগে বীরভূমের টিকরবেতা গ্রামের কিছু বাসিন্দা বালি তোলায় বাধা সৃষ্টি করলে দু’পক্ষের মধ্য বিবাদ শুরু হয়। অশান্ত হয়ে ওঠে ইলামবাজারের টিকরবেতা। ঘটনাস্থলে ছুটে আসতে হয় পুলিশকে।
বালিঘাটকে কেন্দ্র করে অজয় নদের দু’পারে গোলমাল নতুন নয়। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে নদী বক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে অনেক আগে। বর্তমানে সরকারি শর্ত পূরণ করে মোটা টাকার বিনিময়ে ই-অকশনের মাধ্যমে নির্বাচিত লিজপ্রাপ্তরাই বালি তোলার অধিকারী। টিকরবেতা গ্রামের বাসিন্দাদের কথায়, এতদিন বালি কারবারে যুক্ত থেকেও বালিঘাটের লিজ না পাওয়ায় গ্রামের লোক বালি তুলছেন না। কিন্তু যিনি লিজ পেয়েছেন তিনি অন্যজনকে বালি তুলতে দিয়েছেন। অভিযোগ, অজয় হাজরা নামে বর্ধমানের এক বালিকারবারী যন্ত্র লাগিয়ে বালি তুলছেন অন্যায়ভাবে। গ্রামবাসীদের দাবি, তাঁদের আপত্তি সেখানেই।
স্থানীয় বগলাপ্রসাদ দত্ত, স্বরাজ দাস, ঋষিকেষ হাজরা, উত্তম গড়াইরা বলছেন, গত ৪০ বছর ধরে তাঁরা বালি কারবারে যুক্ত। বলা যেতে পারে গোটা গ্রামের একটা বড় অংশের রুজিরুটি এই কারবার থেকেই এসেছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে তাঁরা যখন বালি তুলছেন না তখন অন্যায়ভাবে কাউকে বালি তুলতে দেবেন না। তাঁদের দাবি, এমন চললে তাঁরা অভিযোগ জানাবেন। বগলাপ্রসাদের দাবি, ‘‘যিনি লিজ নিয়েছেন তাঁর সঙ্গে সমঝোতা হলে গ্রামের কিছু মানুষ কাজ পান।’’
বগলাবাবুর এই দাবির ঠিক উল্টো কথা বলছেন বালিঘাটের লিজ পাওয়া ঝাড়খণ্ডে ঠিকাদার অনিল কুমার। তিনি বলেন, ‘‘৪ কোটি ২২ লক্ষ টাকা খরচ করে অজয়ের বালিঘাটের লিজ পেয়ে বালি তুলতে গিয়ে তিনি বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন গ্রামের বাসিন্দাদের দ্বারাই। গ্রামের লোকজনের হুমকি, এতদিন ধরে তাঁরা বালি ঘাট চালাতেন। এখান থেকে বালি তুলতে গেলে প্রতি লরি ৩০০০ টাকা কমিশন দিতে হবে। এই অন্যায় দাবি মানা সম্ভব হয়নি বলেই বাধা।’’ যদিও বাধা দেওয়ার অভিযোগ মানেননি টিকরবেতার বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, ‘‘একবারই ওই ভদ্রলোক গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে বসেছিলেন, আমাদের দাবি ছিল গ্রামের মানুষ টাকার বিনিময়ে বালি লরিতে লোড করে দেবে। তিনি জানাবেন বলেও আর কিছু জানাননি। এখন দেখছি বর্ধমানের লোক বালি তুলছে।’’
প্রশাসনের কর্তাদের ব্যাখ্যা, নদীর ধার ঘেঁষা গ্রামের মানুষ শ্রমের বিনিময়ে টাকা, এই চুক্তিতে বালি কারবারে যুক্ত ছিলেন। ই-অকশন চালু হওয়ায় ধাক্কা খেয়েছে দু’পক্ষই। ইলামবাজারের অশান্তির মূলে সেটাই। ওসি মাইনস পার্থ সরকার বলেন, ‘‘এখনও কেউ আমার কাছে এমন কোনও অভিযোগ করেননি।’’
বোলপুরের এসডিও শম্পা হাজরা বলছেন, ‘‘ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর লিজ সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখার পরেই এই নিয়ে কিছু বলা সম্ভব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy