Advertisement
১৮ মে ২০২৪

নয়া সংগঠন ঘিরে বিভ্রান্তি

শনিবার থেকে জয়পুরে নতুন এই সংগঠনের দু’দিন ব্যাপী প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভাও হল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুষেনচন্দ্র মাঝি, জয়পুরের তৃণমূল বিধায়ক শক্তিপদ মাহাতো, জেলা কমিটির নেতা কীর্তন মাহাতো-সহ অনেকেই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৬:০০
Share: Save:

তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের মধ্যে এ বার বিভেদ তৈরি হল পুরুলিয়ায়। দলের মতাদর্শ মেনেই তাঁরা চলবেন বলে জানিয়ে রবিবার পুরুলিয়ায় সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করা হল ‘পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ও শিক্ষা বিষয়ক কর্মচারী সমিতি’-র জেলা কমিটি। শনিবার থেকে জয়পুরে নতুন এই সংগঠনের দু’দিন ব্যাপী প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভাও হল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুষেনচন্দ্র মাঝি, জয়পুরের তৃণমূল বিধায়ক শক্তিপদ মাহাতো, জেলা কমিটির নেতা কীর্তন মাহাতো-সহ অনেকেই। এই ঘটনাকে শাসকদলের শিক্ষক সংগঠনের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ বলে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা।

এই জেলায় তৃণমূলের মতাদর্শ অনুসারী ‘তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’ থাকা সত্ত্বেও নতুন করে কেন এই সংগঠন তৈরি হল? পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ও শিক্ষা বিষয়ক কর্মচারী সমিতির জেলা সভাপতি পার্থসারথি দাসের অভিযোগ, ‘‘আগে বাম প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন থেকে যাঁরা একসময়ে নানা সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন, দেখা যাচ্ছে, তাঁদের একটা বড় অংশই এখন তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি-তে প্রাধান্য পাচ্ছেন। তাঁরা এখানেও নানা সুযোগ নিচ্ছেন। অথচ আমরা যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বামবিরোধী শিক্ষক সংগঠন করে এসেছি, তাঁরাই পিছনের সারিতে চলে গিয়েছি।’’

সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সুব্রত চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেখিয়ে ব্যবসা চাই না। তাই যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর নীতি ও আদর্শ নিয়ে রয়েছেন, তাঁদের নিয়েই আমরা রাজ্যের ১৪টি জেলায় এই সংগঠন গড়ে তুলে জেলা কমিটি গঠন করেছি।’’ পার্থসারথিবাবু বলেন, ‘‘আমাদের সংগঠন গড়ায় কারও অনুমতি নেই ঠিকই, তবে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর মতাদর্শ মেনে চলি। সে কথা আমাদের প্যাডেও উল্লেখ রয়েছে।’’

তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি সত্যকিঙ্কর মাহাতো বলেন, ‘‘এই সংগঠনের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। আমাদের সংগঠনের জেলা সম্মেলন ফেব্রুয়ারি মাসে। সেখানে সরকারের চার জন মন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। নবগঠিত এই সংগঠনের তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’

নতুন সংগঠনের সভা উপলক্ষে বিলি করা প্রচারপত্রে দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, জেলা নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, সৃষ্টিধর মাহাতো, নবেন্দু মাহালি থেকে শুরু করে ১৯ জন তৃণমূল নেতানেত্রীর নাম রয়েছে। তাঁদের অনেককেই অবশ্য সভায় দেখা যায়নি। যদিও পার্থসারথিবাবুর দাবি, ‘‘জেলা সভাপতি অন্যত্র কর্মসূচিতে থাকায়, উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে তিনি আমাদের শুভেচ্ছেবার্তা পাঠিয়েছেন।’’ শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘দলের শিক্ষকদের নানা সংগঠন রয়েছে। এ ব্যাপারে দলের মত চেয়েছি।’’

তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালির বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির পাশাপাশি আরও দু’টি সংগঠন রয়েছে, যারা দলনেত্রীর মতাদর্শ মেনে কাজ করছে বলে দাবি করছে। এ নিয়ে আমরা কিছুটা বিভ্রান্ত।’’ তিনি জানান, তাঁর অনুমতি নিয়েই প্রচারপত্রে নাম ছাপা হয়েছে। তিনি কি তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি সম্পর্কে তোলা অভিযোগ মানেন? নবেন্দুবাবু বলেন, ‘‘ওঁরা এ নিয়ে আমাকে কিছু বলেননি। জানি না।’’

সম্মেলনে উপস্থিত থাকা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ও বিধায়ক বলেন, ‘‘সিপিএম ও বিজেপি বিরোধী এই সংগঠনের সাফল্য কামনা করেছি।’’ কিন্তু তাঁদের অভিযোগ তো তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি-কে নিয়ে? এ ব্যাপারে শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের সদুত্তর মেলেনি। বিধায়কের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE