Advertisement
E-Paper

মুখ্যমন্ত্রীর জলতীর্থ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি কু়ড়মাশোলে

রুখা পুরুলিয়ায় জলের অভাব বারোমাস। মার খায় চাষ। এর মোকাবিলায় ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে জেলায় ১৭টি জলতীর্থ প্রকল্প বরাদ্দ করা হয়। তার মধ্যে তৎপরতার সঙ্গে ১৬টি প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও মানবাজারের কুড়মাশোল গ্রামের জলতীর্থ প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৬ ০৩:১৬
পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি।—নিজস্ব চিত্র

পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি।—নিজস্ব চিত্র

রুখা পুরুলিয়ায় জলের অভাব বারোমাস। মার খায় চাষ। এর মোকাবিলায় ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে জেলায় ১৭টি জলতীর্থ প্রকল্প বরাদ্দ করা হয়। তার মধ্যে তৎপরতার সঙ্গে ১৬টি প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও মানবাজারের কুড়মাশোল গ্রামের জলতীর্থ প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি।

কৃষি-সেচ (মেকানিক্যাল) দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের জন্য ২৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। এই টাকায় চেক ড্যাম তৈরি থেকে শুরু করে পাম্পের সাহায্যে জল তোলা এবং পাইপের মাধ্যমে জমিতে জল সরবরাহ করার কথা। এ জন্য একটি ঘর তৈরি কারারও কথা ছিল।

হল না কেন?

প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে এজেন্সিকে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছিল তাদের গড়িমসিতেই এই হাল। একই বক্তব্য উঠে এসেছে কৃষি-সেচ দফতরের কর্তাদের বক্তব্যেও। দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রূপচাঁদ মূর্মু তা মানছেন। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা যে এজেন্সিকে কাজের বরাত দিয়েছিলাম সেটা তারা শুরু করেননি। কৈফিয়ত চেয়ে বার দু’য়েক চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, উত্তর পাইনি।’’ তা হলে অন্য কাউকে সে বরাত দেওয়া হল না কেন, সে প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। অভিযোগের তির যাদের দিকে সেই এজেন্সির কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

জলতীর্থ আসলে ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প। জেলার নদী এবং বড় জলাশয়কে কেন্দ্র করে এই প্রকল্পের পরিকল্পনা। উদ্দেশ্য ছিল, খরার মরসুমেও এলাকার চাষিরা যেন জলসেচের মাধ্যমে শাক-সব্জি ফলাতে পারেন। যে সব নদীতে গরমের সময়ে জল থাকে না সেখানে চেকড্যামের মাধ্যমে জল সংরক্ষিত থাকবে। বেনিফিসিয়ারি কমিটি গড়ে চাষিরা তার বিদ্যুতের বিল মেটাবেন।

কয়েক মাস আগে কুড়মাশোল গ্রামের প্রান্তে চাকা নদীর উপর দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে চেক ড্যাম তৈরি হয়। এলাকার বাসিন্দা তৃণমূলের কৃষক সংগঠনের জেলা সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ মাহাতো জানান, জেলায় অন্য ব্লকের পাশাপাশি মানবাজার ব্লকের জিতুঝুড়ি এবং পলমী গ্রামের জলতীর্থ প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও কুড়মাশোল গ্রামের প্রকল্প এখনও শুরুই হয়নি। সে ব্যাপারে সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কয়েক বার কথা বলেও কাজ এগোয়নি বলে তাঁর দাবি।

এই অবস্থায় আতান্তরে পড়েছেন কৃষিজীবীরা। কুড়মাশোল গ্রামের লুহুল মাহাতো সমীর মাহাতো রোহিণী মাহাতোদের অভিযোগ, আগেও বৃষ্টির অভাবে ফসল শুকিয়ে যেত। এখনও তাই অবস্থা। সমীরের কথায়, ‘‘চেক ড্যাম তৈরির পরে আমরা ভেবেছিলাম সেচের জলের অভাব আর হবে আর না। বছরভর সব্জি বা অন্য ফসল ফলাতে পারব। কি, কোথায় কী!’’ আর এক চাষি বৃহস্পতি মাহাতো জানান, এই সেচ প্রকল্প চালু হয়ে গেলে ১২০০-১৫০০ বিঘা জমি সেচের আওতায় চলে আসবে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, নিজেদের মধ্যে টাকা তুলে পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য চলতি বছরের ৮ মার্চ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার মানবাজারের অফিসে প্রায় ৫৪ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়। কয়েক দিন পরে কর্মীরা বিদ্যুতের তার, খুঁটি নিয়ে চলেও এসেছিলেন। কিন্তু সংযোগ দেওয়ার ঘরই না থাকায় তারা ফিরে যান।

এই পরিস্থিতিতে আবারও গরমের ফসল নষ্ট হয়ে যাবে না তো, আশঙ্কাটা থেকেই গেল!

Manbazar CM Mamata Banerjee Jalatirtha project
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy