Advertisement
E-Paper

শিশুকন্যা বদলের অভিযোগ মেডিক্যালে

শিশু কন্যা বদলের অভিযোগ উঠল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সদ্যোজাত মেয়েকে ফেরত চেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছেন মেমারির তক্তিপুরের বাসিন্দা আকাশি বেগম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:২৫
কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আকাশি বেগম। নিজস্ব চিত্র।

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আকাশি বেগম। নিজস্ব চিত্র।

শিশু কন্যা বদলের অভিযোগ উঠল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সদ্যোজাত মেয়েকে ফেরত চেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছেন মেমারির তক্তিপুরের বাসিন্দা আকাশি বেগম। ডিএনএ পরীক্ষারও দাবি জানিয়েছেন তিনি। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এ রকম ভুল হওয়ার কথা নয়।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, “ওই ভদ্রমহিলা সোমবার সন্ধ্যায় আমার কাছে এসেছিলেন। মঙ্গলবার শিশু বদলের অভিযোগ করেছেন বলে শুনেছি। প্রাথমিক ভাবে এই রকম গাফিলতি হওয়ার কথা নয়। তবুও আমরা একটি কমিটি গড়ে তদন্ত করে দেখছি। প্রয়োজন হলে ডিএনএ পরীক্ষাও করা হবে।”

মঙ্গলবার তক্তিপুরের ওই পরিবারটি অভিযোগ করেন, গত বুধবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে সদ্যোজাত মেয়ে। বৃহস্পতিবার ফের হাসপাতালে আনা হলে সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে (এসএনটিইউ) ভর্তি করে নেওয়া হয় শিশুটিকে। চার দিন হাসপাতালে থাকার পরে সোমবার সদ্যোজাত কন্যাকে পরিজনদের হাতে তুলে দিতে যান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বেঁকে বসে শিশুটির পরিবার।

সদ্যোজাতের মা আকাশি বেগম সাফ জানিয়ে দেন, ওই মেয়ে তাঁদের নয়। কন্যা বদল করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগও তোলেন। এ দিন দুপুরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লেখা চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নানা ভাবে তাঁকে বুঝিয়ে ‘অন্য’ শিশুকন্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এমনকী, শিশুটিকে না নিতে চাওয়ায় তাঁকে ‘লাল চোখ’ দেখানো হয়েছে বলেও তাঁর দাবি।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর তক্তিপুর থেকে মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হন আকাশি বেগম। সেখান থেকে ‘রেফার’ হয়ে আসেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি বিভাগে। ১৯ তারিখে সেখানেই কন্যার জন্ম দেন তিনি। বুধবার কন্যাকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। তাঁর স্বামী শেখ মহিরুদ্দিন জানান, বাড়ি যাওয়ার পরেই মেয়ের শরীর হলুদ হয়ে যায়। অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। পরের দিন, বৃহস্পতিবারই হাসপাতালের বহির্বিভাগে শিশুটিকে দেখাতে নিয়ে আসেন তাঁরা। মহিরুদ্দিনের দাবি, ‘‘সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, জন্ডিস হয়েছে। শিশুকে কাঁচের ঘরে ভর্তি করতে হবে। চার দিন সেখানেই ছিল।’’

কী ভাবে বুঝলেন মেয়ে বদলে গিয়েছে? আকাশি বেগমের দাবি, ‘‘দু’দিন মেয়ে আমার কাছে ছিল। নিজের হাতে বুকের দুধ খাইয়েছি। এক মা তার পেটের সন্তানকে চিনতে পারবে না, এটা কী কখনও হয়?’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করার সময় মেয়ের ওজন ছিল প্রায় আড়াই কিলোগ্রাম। সোমবার দুপুরে সেই মেয়ের চেহারা হয়ে গেল হাড় গিলগিলে! তা ছাড়া আমাদের কাছে মেয়ের ফুটফুটে ছবি রয়েছে।’’ ওই চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, ‘‘ কী উদ্দেশে আপনারা আমার কন্যাকে ফেরত না দিয়ে অন্য এক জনকে আমার হাতে তুলে দিতে চাইছেন বুঝতে পারছি না। কেনই বা অন্যের শিশুকন্যাকে নেওয়ার জন্য আপনারা চাপ দিচ্ছেন? প্রয়োজন হলে আপনারা ডিএনএ পরীক্ষা করুন।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এসএনসিইউতে শিশুদের সঙ্গে প্রসূতিদের থাকতে দেওয়া হয় না। যে কোনও রকমের ভুল এড়ানোর জন্য মা ও সদ্যোজাতকে একই নম্বরের টোকেন দেওয়া হয়। ওই টোকেন মিলিয়ে সুস্থ সদ্যোজাতকে মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মী, নার্সদের সাধারণত ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তবে এ ক্ষেত্রে সঠিক কী ঘটেছে তা তদন্ত করার বোঝা যাবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন।

অভিযোগ মানতে চাননি হাসপাতালের এসএনসিইউ বিভাগের দায়িত্বে থাকা নার্স ও কর্মীরা। তাঁদের দাবি, মায়ের দুধ না পেলে অনেক সময় সদ্যোজাতদের ওজন কমে যায়। আর তা ছাড়া দু’দিনের শিশুর ছবি দেখে কী সবসময় চেনা যায়?

Complaint Baby girl
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy