Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
bankura

কেন্দ্রীয় সচিবের প্রশংসা নিয়ে দুই শিবিরের তরজা

বাঁকুড়া শহর ছুঁয়ে বয়ে গিয়েছে গন্ধেশ্বরী নদী ও দ্বারকেশ্বর নদ। প্রতি বছর গ্রীষ্মে দু’টির জলস্তর অনেকটা নেমে যায়। তীব্র জলসঙ্কট দেখা দেয়।

এই কল থেকেই এখন জল নিতে হয়। বাঁকুড়া শহরের বড়কালীতলায়। নিজস্ব চিত্র

এই কল থেকেই এখন জল নিতে হয়। বাঁকুড়া শহরের বড়কালীতলায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২০ ০৩:১৫
Share: Save:

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব দুর্গাশঙ্কর মিশ্র টুইট করে ‘অম্রুত’ প্রকল্পে বাঁকুড়া পুরসভার কাজের প্রশংসা করেছেন। তাতে পুরকর্মীরা ‘উজ্জীবিত’ বলে দাবি বাঁকুড়ার পুর-কর্তাদের। পুরপ্রশাসক তথা তৃণমূলের বিদায়ী পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্তের কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় সচিবের প্রশংসায় পুরকর্মীরা উজ্জীবিত। আমরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শকে সামনে রেখে কাজ করি। সে পথেই সাফল্য এসেছে।”
এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারের কটাক্ষ, “কাগজের তথ্য দেখেই প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় সচিব। প্রকল্প বাস্তবায়নের মূল চিত্র দেখলে উনি নিশ্চয়ই এমন মন্তব্য করতেন না।” বাঁকুড়া পুরসভার বিদায়ী বিজেপি কাউন্সিলর নীলাদ্রিশেখর দানার অভিযোগ, “অম্রুত প্রকল্পের অর্থ তছরুপ হয়েছে। সে খবর সচিবের কাছে নেই।”
বাঁকুড়া শহর ছুঁয়ে বয়ে গিয়েছে গন্ধেশ্বরী নদী ও দ্বারকেশ্বর নদ। প্রতি বছর গ্রীষ্মে দু’টির জলস্তর অনেকটা নেমে যায়। তীব্র জলসঙ্কট দেখা দেয়। বাঁকুড়া পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে জলের সমস্যা মেটাতে ২০১৬ সালে কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে ‘অম্রুত’ প্রকল্প নেওয়া হয়। বরাদ্দ হয় প্রায় ১১৬ কোটি টাকা। কেশিয়াকোল এলাকায় গন্ধেশ্বরী নদীর বক্ষে মাটির নীচে গড়া হয় ‘রিজ়ার্ভার’, যেটির জল ধারণ ক্ষমতা প্রায় ২৯ লক্ষ ৫০ হাজার লিটার। এ ছাড়া, সাতটি নতুন ‘রিজ়ার্ভার’ গড়া হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে তিনটি পুরনো ‘রিজ়ার্ভার’।
পুরসভা জানিয়েছে, প্রকল্পের জল শহরের ২৪টি ওয়ার্ডেই যাবে। শহর জুড়ে প্রায় ২৫২ কিলোমিটার পাইপ পাতার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুর-কর্তাদের দাবি, ইতিমধ্যেই তার প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ।
পুরপ্রশাসক মহাপ্রসাদবাবু বলেন, “বাঁকুড়া শহরে প্রাথমিক ভাবে অম্রুত প্রকল্পে ৩২ হাজার পরিবারকে জলের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে এক হাজার বাড়িতে সংযোগ করে দেওয়া হয়েছে।’’ শহর জুড়ে এখন সাড়ে ২৪ হাজার বাড়িতে সংযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বাকি সাড়ে ছ’হাজার পরিবারেও শীঘ্রই সংযোগ পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন।
মহাপ্রসাদবাবুর দাবি, করোনা-পরিস্থিতি বাধা হয়ে না দাঁড়ালে এত দিনে প্রকল্পের পুরো কাজ হয়ে যেত। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে কাজ চললেও প্রায়ই বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তবে আগামী দু’মাসের মধ্যেই কাজটি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।” বিরোধীদের সমালোচনাকে আমল দিতে নারাজ তিনি। মহাপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের প্রশাসন চালানোর অভিজ্ঞতা কম। তাঁরা জানেন না, অম্রুত প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে একাধিক বার দিল্লি থেকে প্রতিনিধিরা বাঁকুড়ায় এসেছেন। তাঁদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই সচিব ওই মন্তব্য করেছেন।” দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে পুরপ্রশাসক বলেন, ‘‘এক টাকাও তছরুপ করা হয়েছে, এমন প্রমাণ থাকলে প্রকাশ্যে আনা হোক। তার পরেই জবাব দেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE