Advertisement
E-Paper

তথ্যমিত্র কেন্দ্র কোন ঘরে, প্রশ্ন

ব্লক অফিসের অন্য একটি ঘরে তথ্যমিত্র কেন্দ্র সরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু সরতে নারাজ দায়িত্বে থাকা লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে শাসকদল এই কাজ করছে। শাসকদল এবং প্রশাসন সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এ দিকে ঝালদা ১ ব্লকে পরিষেবা পেতে হয়রান হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০০:২১
টানাপড়েন: ঝালদা ১ ব্লক দফতর চত্বরে এই ঘরটি নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

টানাপড়েন: ঝালদা ১ ব্লক দফতর চত্বরে এই ঘরটি নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

ব্লক অফিসের অন্য একটি ঘরে তথ্যমিত্র কেন্দ্র সরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু সরতে নারাজ দায়িত্বে থাকা লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে শাসকদল এই কাজ করছে। শাসকদল এবং প্রশাসন সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এ দিকে ঝালদা ১ ব্লকে পরিষেবা পেতে হয়রান হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝালদা ১ ব্লক অফিস চত্বরে কেন্দ্রটি ২০০৯ সাল থেকে চলছে। অফিস চত্বরে ঢোকার মূল রাস্তার ডান দিকে রয়েছে ঘরটি। এলাকার মানুষজন আধার কার্ডের জন্য আবেদন, আধার কার্ড সংশোধন, ওবিসি শংসাপত্রের আবেদন, রেশন কার্ডের আবেদন, ব্যাঙ্কিং পরিষেবা প্রভৃতি করতে পারেন। ওই তথ্যমিত্র কেন্দ্রটি যিনি চালান, সেই সমীরণ মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী কংগ্রেসের টিকিটে এ বার স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতিতে জিতেছেন। তার পরেই এই ঘর খালি করতে বলা হয়েছে বলে অভিযোগ কংগ্রেসের।

ঝালদা ১ ব্লকের খাটজুড়ি গ্রামের সমীরণের দাবি, পরিষেবা কেন্দ্র চালানোর জন্য প্রশাসন ব্লক অফিস চত্বরের ঘরটি তাঁদের ব্যবহার করতে দিয়েছে। এই মর্মে ২০০৯ সালের ২৯ মে তাঁর সঙ্গে প্রশাসনের চুক্তি হয়েছে। দশ বছরের চুক্তি। প্রথমে মাসিক আড়াইশো টাকা ভাড়া ছিল। বর্তমানে তা বেড়ে এক হাজার টাকা হয়েছে। চুক্তি মোতাবেক ২০১৯ সালের ২৮ মে পর্যন্ত ঘরটি ব্যবহার করা যাবে বলে তাঁর দাবি। সমীরণ বলেন, ‘‘গত জুনের শেষে বিডিও (ঝালদা ১) আমাকে ঘরটি ছাড়ার নোটিস দেন। মাস দুয়েক সময় চেয়েছিলাম। মৌখিক ভাবে রাজি হলেও গত রবিবার ঘর থেকে কম্পিউটার, ফাইল, আলমারি ইত্যাদি জোর সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ সমীরণের ভাই অঞ্জন মুখোপাধ্যায় কেন্দ্রটি দেখভাল করেন। তাঁর দাবি, রবিবার কিছু কাজের জন্য কেন্দ্র খুলেছিলেন। তখন জোর করেই ঘর থেকে জিনিসপত্র সরিয়ে দেওয়া হয়।

তবে বিডিও (ঝালদা ১) নির্মিতা সাহা বলেন, ‘‘ওই ঘরটি যে বাড়িতে রয়েছে সেটি অত্যন্ত বেহাল। ইঞ্জিনিয়াররা দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন। তথ্যমিত্র কেন্দ্র থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা মেলে। ওঁরা নতুন ঘরে যেতে না চাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।’’

সোমবার অনেকে ওই কেন্দ্রে গিয়ে ফিরেছেন। তোড়াং গ্রামের বাসিন্দা নন্দদুলাল মাহাতোর কথায়, ‘‘আমার ছেলের ফর্ম পূরণের জন্য এসেছিলাম। দেখছি বন্ধ।’’ মসিনা গ্রামের বাসিন্দা সুধীরচন্দ্র মাহাতো টাকা তুলতে এসেছিলেন। জানালেন, আত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি। টাকার খুবই প্রয়োজন। কিন্তু কাজ হল না। অনা গ্রামের বাসিন্দা মাধব লহরা প্রতিবন্ধী। নিজে হাঁটতে পারেন না। জানালেন, টাকা তুলতে এসে খালি হাতে ফিরছেন।

বাঘমুণ্ডির কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে তৎকালীন বিডিও নিজেই চুক্তি করেছিলেন। কন্যাশ্রী ভবন হবে এই যুক্তিতে এ রকমের একটি পরিষেবা বন্ধ করে দিয়ে ঘরটি ভেঙে ফেলা হবে। ব্লক অফিস চত্বরে তো যথেষ্ট ফাঁকা জমি রয়েছে। সেখানে ভবন হচ্ছে না কেন?’’ তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির স্ত্রী কংগ্রেসের হয়ে পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ী হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় শাসকদল এই কাজ করাচ্ছে। যদিও তৃণমূল পরিচালিত ঝালদা পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি বুলু মুড়া বলছেন, ‘‘ওই জায়গায় কন্যাশ্রী ভবন তৈরি হবে। তাই কেন্দ্রের জন্য অন্য জায়গা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।’’

জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়ও বলেন, ‘‘ব্লক অফিস চত্বরে অন্যত্র ঘর দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে অহেতুক বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে।’’

Tathya Mitra Kendra Block Office
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy