পুরুলিয়ায় তৃণমূল (উপরে), বান্দোয়ানে বিজেপির কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র
এত দিন একে অন্যের বিরুদ্ধে মিছিল, সভায় স্বাস্থ্য-বিধি ভাঙার অভিযোগ তুলে আসছিল। শনিবার পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় তৃণমূল এবং বিজেপির কর্মসূচি দেখে বাসিন্দাদের অভিযোগ, দু’দলের কর্মীদের একাংশ দেখালেন, স্বাস্থ্য-বিধি ভাঙায় তাঁরা কেউ কারও থেকে পিছিয়ে নেই। যদিও কোনও দলের নেতারাই অভিযোগ মানেননি।
বর্তমানে দুই জেলাতেই করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। বাড়ছে সুস্থের সংখ্যাও। কিন্তু তাতে স্বস্তিতে জেলা স্বাস্থ্য ও প্রশাসনের কর্তারা। এই পরিস্থিতিতে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন দলের কর্মসূচির ভিড় চিন্তা বাড়িয়েছে অনেকের। মূলত রাজ্যের দুই প্রধান শক্তিশালী দল তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে যেন ভিড়ের বহর দেখানোর রেষারেষি চলছে বলে অভিযোগ।
হাথরসের ঘটনা ও কৃষি আইনের প্রতিবাদে এ দিন দুই জেলার বিভিন্ন এলাকায় মিছিলের আয়োজন করেছিল তৃণমূল। তেমনই কৃষি আইনের সমর্থনে মিছিল ও সভার আয়োজন করেছিল বিজেপি। অনেক জায়গাতেই দেখা গিয়েছে, মাস্ক অনেকের মুখে যেমন ছিল, তেমনই মাস্কহীন মুখও কম ছিল না। ঠাসাঠাসি ভিড়ে দূরত্ব-বিধি মুছে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। এতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন অনেকে।
বিজেপির রাজ্য নেতা তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের দাবি, ‘‘আমাদের সমস্ত কর্মী মাস্ক পরেছিলেন। তবে কোথাও কোথাও কর্মীদের উচ্ছ্বাসে স্বাস্থ্য-বিধি কিছুটা বিঘ্নিত হয়ে থাকতে পারে। তৃণমূলই বরং রাজ্যের শাসকদল হয়ে স্বাস্থ্য-বিধি ভাঙছে।’’ পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি গুরুপদ টুডুর পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপির নেতা-কর্মীরা আগে মাস্ক পরুন, তার পরে আমাদের দলের সমালোচনা করবেন। আমাদের প্রত্যেকে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন।’’
উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পথে নামে তৃণমূল। পুরুলিয়া শহরের মানভূম ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন মোড় থেকে দলের শহর কমিটির প্রতিবাদ মিছিল বেরোয়। ঝালদা শহর কমিটি ও ঝালদা ১ ব্লক কমিটির দু’টি মিছিল করে। মিছিল হয় ঝালদা ২ ব্লক ও জয়পুরেও। পুঞ্চার মিছিলে মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু-সহ বিধায়কেরা ছিলেন। দলের জেলা চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাতো দাবি করেন, ‘‘দেশে দলিতদের উপরে নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছে। হাথরসের ঘটনা তার অন্যতম উদাহরণ। বিজেপি শাসিত রাজ্যে আজ গণতন্ত্র বিপন্ন। প্রকৃত ঘটনা যাতে বেরিয়ে না পড়ে, সে জন্য সংবাদমাধ্যম আর বিরোধীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাথরসের ঘটনায় দোষীদের সাজা আমরাও চাই। কিন্তু এ রাজ্যে গণতন্ত্র কোথায়?’’
সারেঙ্গার চৌরাস্তা মোড়ের সভায় হুগলির শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘বিজেপি রাজ্য জয়ের স্বপ্ন নিয়েই বরং থাকুক।’’ সেখানে মিছিলে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা। রানিবাঁধ বাজারেও মিছিল হয়।
অন্য দিকে, কেন্দ্রের কৃষি আইনের প্রচারে শনিবার ছাতনার কমলপুরে মিছিল করে বিজেপি। ছিলেন বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার, বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র প্রমুখ। সুভাষবাবু দাবি করেন, “নয়া কৃষি আইনে ফড়েরাজের অবলুপ্তি ঘটবে। এ রাজ্যে তৃণমূল-সহ বিরোধীরা তাই এই আইন কার্যকর করার বিপক্ষে। তবে রাজ্যের কৃষকদের আমরা বঞ্চিত হতে দেব না।” বান্দোয়ানের চকবাজারের পথসভা করেন বিজেপি যুব নেতা শঙ্কুদেব পান্ডা। সেখানেও মিছিল ও সভায় স্বাস্থ্য-বিধি শিকেয় ওঠে বলে অভিযোগ। যদিও বিজেপি অভিযোগ মানেনি।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy