প্রতীকী ছবি।
দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে ডাবল সেঞ্চুরি করে ফেলল বীরভূম! শুক্রবার বিকেলে প্রকাশিত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন বলছে, দুই স্বাস্থ্য জেলা মিলিয়ে বৃহস্পতিবার নতুন করে আক্রান্ত ২১৪ জন।
জেলায় এপ্রিলের শেষে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকেই দৈনিক সংক্রমণে বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার চেয়ে এগিয়েছিল রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলা। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অবশ্য অন্য কথা বলছে। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় ওই দিন ১৫০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলাতেও। তবে তা বীরভূমের চেয়ে কম—৬৪। দুটো মিলিয়ে ২১৪। আবার শনিবারের বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, শুক্রবার জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কম—৪৩।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বৃহস্পতিবারই ইঙ্গিত দিয়েছে, সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের প্রভাব শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের চিন্তা বাড়িয়ে বীরভূমেও প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকায় করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। লাফিয়ে বাড়ছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা।
বীরভূমে করোনা সংক্রমণের রেখাচিত্রের ঊর্ধ্বগতি কি তৃতীয় ঢেউ-কেই ইঙ্গিত করছে? বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি বলছেন, ‘‘সংক্রমণের তৃতীয় চরণে এই ঊর্ধ্বগতি অস্বাভাবিক নয়। তবে, মাথায় রাখতে হবে, পর্যাপ্ত টেস্ট হচ্ছে প্রতিদিন। সেটাও আক্রান্তদের চিহ্নিত করতে সহায়ক ভূমিকা নিয়েছে।’’ স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, রাজ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বীরভূমেও দৈনিক করোনা পরীক্ষা অনেকটা বেড়েছে। ফলে, রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার হার বাড়বে, সেটাই স্বাভাবিক।
বৃহস্পতিবার রাতে খয়রাশোলে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ জন। শুক্রবার নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯। অর্থাৎ, দু’দিনে ৩৩ জন। অথচ বুধবার পর্যন্ত ওই ব্লকে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৪ জন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আক্রান্তেরা ব্লকের নানা এলাকার বাসিন্দা। একই ছবি দুবরাজপুরে। এই ব্লকে সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ জন। বৃহস্পতিবারই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ জন।ই সেই তালিকায় রয়েছে বালিজুড়ি বেলসাড়া গ্রামেরই ৯ জন বাসিন্দা। রয়েছেন দুবরাজপুর শহরের আরও দু’জন। সংক্রমণের ছবিটা আলাদা নয় বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার অন্য এলাকাতেও। রক্ত এবং লালারসের নমুনা পরীক্ষায় শনিবার একই দিনে নানুর ব্লকের ৩১ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে।
একই অবস্থা রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার। জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য বলছে, এখনও পর্যন্ত জেলায় সামগ্রিক ভাবে কোভিড পজ়িটিভ রোগীর সবচেয়ে বেশি সন্ধান মিলেছে নলহাটি১ ব্লকে। পিছিয়ে নেই রামপুরহাট ১ এবং মুরারই ১ ব্লকও। রামপুরহাট ও নলহাটি— এই দু’টি পুর শহরেরই শতাধিক বাসিন্দা আক্রান্ত।
জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে যেটুকু জানতে পারছি, এই গতি চরমসীমায় পৌঁছবে সেপ্টেম্বরের এক পক্ষকালের মধ্যেই। এই অবস্থায় যত বেশি সংখ্যক আক্রান্তকে চিহ্নিত করা এবং দ্রুত তাঁদের পৃথক চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে, ততই সংক্রমণ বৃদ্ধির হারকে রোখা যাবে।’’
স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা মেনে উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গযুক্ত কোভিড পজিটিভ রোগীদের সেফ হোম এবং হোম আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সেই নির্দেশিকা মেনেই কাজ চলছে। তবে যাঁদের উপসর্গ বা কো-মর্বিডিটি রয়েছে বা বয়স হয়েছে, তাঁদের কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy