বরাদ্দ রেশন সামগ্রী দেওয়া হয় না। বরাদ্দের পরিমাণ জানতে চাওয়া হলে রেশন দোকান থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়। ময়ূরেশ্বর থানার হটিনগরের রেশন ডিলার রাজ্যধর মণ্ডলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের সকল স্তরে এমনই নানাবিধ অভিযোগ জানিয়েছিলেন উপভোক্তারা। কিন্তু কোনও কাজ না হওয়ায় তাঁরা চিঠি পাঠিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। নবান্নের নির্দেশে সেই অভিযোগেরই তদন্তে শুক্রবার এলাকায় পৌঁছলেন খাদ্য সরবরাহ দফতরের কর্তারা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প চালু হওয়ার পরে উপভোক্তাদের ডিজিটাল কার্ড দেওয়া হয়। কিন্তু অনেকই ওই প্রকল্প আওতার বাইরে থেকে যান। অনেকেরই ওই প্রকল্পের তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ে যায়। আবার অনেকের তালিকায় নাম থাকলেও কার্ড মেলেনি। এর ফলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তখন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তালিকার বাইরে থাকা কিংবা কার্ড না পাওয়া উপভোক্তাদেরও ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে স্লিপ দিয়ে সমহারে খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার নির্দেশ জারি হয়। নিয়মানুযায়ী, উপভোক্তাদের ২ টাকা কেজি দরে মাসে মাথাপিছু ২ কেজি চাল এবং ৩ কেজি গম পাওয়ার কথা। কিন্তু স্লিপ থাকা সত্ত্বেও ওই রেশন ডিলার উপভোক্তাদের তা দিতেন না বলেই অভিযোগ। অভিযোগকারী গৌতম বাগদি, সুকুমার বাগদিদের দাবি, ‘‘প্রথম দিকে স্লিপে বরাদ্দ অনুযায়ী রেশন সামগ্রী পেয়েছি। কিন্তু মাস তিনেক ধরে আমাদের মর্জিমাফিক রেশন সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। বরাদ্দের কথা জানতে চাওয়া হলে খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিডিও-কে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।’’ রেশন ডিলার রাজ্যধর মণ্ডল অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, বরাদ্দ অনুযায়ীই উপভোক্তাদের খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য প্রণোদিত কারণেই ওই অভিযোগ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ময়ূরেশ্বর ২ বিডিও সৈয়দ মাসুদুর রহমানের বক্তব্য, ‘‘ওই অভিযোগের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তবে স্লিপ অনুযায়ী উপভোক্তাদের বরাদ্দ রেশন সামগ্রী পাওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে ব্লক খাদ্য সরবরাহ পরিদর্শকের কাছে তালিকা নিয়ে কী হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছি।’’
এ দিন অভিযোগের তদন্তে আসেন সংশ্লিষ্ট রামপুরহাট মুখ্য খাদ্য সরবরাহ পরিদর্শক রমেশ হেমব্রম। তিনি অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলেন রেশন ডিলারের সঙ্গেও। পরে তিনি বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই এই তদন্ত। অভিযোগের কিছুটা সত্যতা রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে যাবতীয় রিপোর্ট দেওয়া হবে।’’