প্রতীকী ছবি
মাঝে জেলায় করোনা সংক্রমণের গতিতে রাশ পড়েছিল। কিন্তু, গত কয়েক দিন ধরে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার, এক দিনে বীরভূম ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় মোট করোনা পজ়িটিভের সংখ্যা এক লাফে বেড়েছে ২৭ জন! আক্রান্তদের মধ্যে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ১৪ জন। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার ১৩ জন। প্রশাসনের দাবি, জেলায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ায় পজ়িটিভ রিপোর্ট আসাও বাড়বে।
রামপুরহাটে আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন বীরভূম জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার ভকত (বাবলু) এবং তাঁর ছেলে। প্রদীপবাবু মুরারই ১ ব্লকের রাজগ্রামের বাসিন্দা। নলহাটি ২ ব্লকের এক আশাকর্মী, রামপুরহাট পুর-এলাকার ছয় বাসিন্দার রিপোর্টও পজ়িটিভ এসেছে। অন্য দিকে বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় ১৩ জন আক্রান্তের মধ্যে মহম্মদবাজার ব্লকের বাসিন্দা ও ব্লকের বিভিন্ন সরকারি দফতরে কর্মরত মোট ১১ জনের লালারসের নমুনায় করোনার অস্তিত্ব মিলেছে। তাঁদের মধ্যে তিন জন পুলিশ কর্মী। এ ছাড়াও স্বাস্থ্যকর্মী, ব্লক অফিসের কর্মী, পঞ্চায়েত কর্মী সকলেই রয়েছেন। আক্রান্তদের কেউ কেউ বাইরে চিকিৎসা করাতে বা অন্য কারণে বাইরে গিয়েছিলেন। ফিরে আক্রান্ত হয়েছেন—এটা যেমন ঘটনা। তেমনই এটাও ঠিক যে, বাকিরা কী ভাবে সংক্রমিত হলেন, তার কোনও সূত্র মিলছে না।
প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, এই পরিস্থিতিটাই রীতিমতো উদ্বেগ জনক। সেটা আরও বেশি করে আক্রান্তদের অধিংকাশই উপসর্গহীন হওয়ায়। যাঁরা নিজেদের অজান্তেই সংক্রমণ ছড়ানোর বাহক হিসাবে কাজ করে চলেছেন। চিকিৎসকেরা তাই বারবার বলছেন, ‘‘সচেতন হতে হবে সকলকেই। মাস্ক পরতে হবে। ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে।’’ যদিও জেলার অনেক মানুষই সে-সবের ধার ধারছেন না।
ঘটনা হল, সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেই সপ্তাহে দু’দিন রাজ্য জুড়ে সার্বিক লকডাউনের পাশাপাশি জেলার ৬টি পুরসভা শহরে শুক্রবার থেকে আংশিক লকডাউন জারি করা হয়েছে। এই ভাবে পুর-এলাকা ছাড়া জেলার বিভিন্ন বাজারও দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লকডাউনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে জেলা প্রশাসন। আক্রান্ত বাড়ায় প্রতিদিন বাড়ছে কন্টেনমেন্ট জোনের সংখ্যাও। শুক্রবার পর্যন্ত যেখানে সংখ্যাটা ছিল ৩০, সেটাই শনিবারের পর থেকে এক লাফে বাড়াতে হবে আরও কমপক্ষে ২০টি।
মহম্মদবাজার ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, যাঁরা বাইরে থেকে ফিরেছেন, প্রতিদিন প্রচুর মানুষের সংস্পর্শে আসছেন, রোগীদের সংস্পর্শে আসছেন কিংবা উপসর্গ রয়েছে—এমন ৯২ জনের লালারসের নমুনা গত বুধবার সংগ্রহ করা হয়েছিল ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তাঁদের মধ্যে ১১ জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। তবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দু-এক জন ওই ব্লকে আক্রান্ত হলেও এক দিনে ১১ জনের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা শুধু ওই ব্লক নয়, সিউড়ির জন্যও উদ্বেগের। কারণ, আক্রান্তদের অনেকেই সিউড়ির বাসিন্দা। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলছেন, ‘‘যত বেশি সংখ্যক টেস্ট হবে, তত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। এটাই স্বাভাবিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy