Advertisement
০৫ মে ২০২৪
ধেয়ে আসছে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়, ক্ষতি হবে ধরে নিয়েই প্রস্তুতি

সতর্ক থাকতে প্রচার জেলা জুড়ে

ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রশাসনকে সতর্ক করছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও। রাজ্য প্রশাসন পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছে।

উৎকণ্ঠা: খবর ছড়িয়েছে ‘ফণী’র। তড়িঘড়ি ধান কাটতে খেতে ঠিকা মজুরেরা। (ইনসেট) না পাকা ধান। বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র

উৎকণ্ঠা: খবর ছড়িয়েছে ‘ফণী’র। তড়িঘড়ি ধান কাটতে খেতে ঠিকা মজুরেরা। (ইনসেট) না পাকা ধান। বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র

দয়াল সেনগুপ্ত
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ০৩:৪৩
Share: Save:

‘ফণী’র ধাক্কা সামাল দিতে সম্ভাব্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের ভিডিও কনফারেন্স হল। বৈঠক শেষ জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণীর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সমস্ত রকম পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জেলা ও ব্লকস্তরের আধিকারিকদের সতর্ক করা হয়েছে। ঝড়ের সময় মানুষের কী করণীয় তা জানাতে শুক্রবার সকাল থেকে মাইকে প্রচার করা হবে।’’

মঙ্গলবার রাত থেকেই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের (এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) আকার নিয়েছে ফণী। সময় যত এগোচ্ছে ফণীও তত এগিয়ে আসছে। সঙ্গে বাড়ছে শঙ্কা। ফণীর আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে ওড়িশা উপকূল থেকে দূরত্ব ছিল ৪৫০ কিলোমিটার। শক্তি বাড়িয়ে ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার করে এগোচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ‘‘শুক্রবার প্রায় ২০০ কিলোমিটার গতিতে ওড়িশার আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণিঝড়। ১৯টি জেলায় এর প্রভাব পড়তে পারে। প্রভাব পড়বে অন্ধ্রপ্রদেশের তিনটি জেলায় এবং পশ্চিমবঙ্গে।’’

এই ঘূর্ণিঝড় ওড়িশায় আছড়ে পড়ার পরে গতিবেগ কমবে ঠিকই, কিন্তু তাও এ রাজ্যে যখন ফণী ‘ছোবল’ মারবে, তখন তার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১৫ কিলোমিটারের কাছাকাছি। গতি আরও বাড়তে পারে। ঠিক একই রকম গতিতে আছড়ে পড়েছিল আয়লাও। এক দশক আগে ভয়াবহ সেই ঝড়ের স্মৃতি মাথায় রেখে শঙ্কিত রাজ্য প্রশাসন। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার থেকেই এ রাজ্যে বৃষ্টি শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। শনি এবং রবিবার কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে। কোথাও কোথাও প্রতি ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। উপকূলবর্তী জেলায় ঝড়ের গতিবেগ আরও বৃদ্ধি পাবে, ঘণ্টায় প্রায় ১১৫ কিলোমিটার।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রশাসনকে সতর্ক করছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও। রাজ্য প্রশাসন পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছে। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। কতটা উদ্বেগে তাঁরা, বৃহস্পতিবারের ভিডিও কনফারেন্সেই তার প্রমাণ।

বীরভূমের জেলাশাসকের আশঙ্কা, প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। ভেঙে পড়তে পারে বিদ্যুতের খুঁটি, কাঁচাবাড়ি, গাছপালা। সেই জন্য বিদ্যুৎ, দমকল, বিপর্যয় মোকবিলা, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সহ বিভিন্ন দফতরকে সতর্ক করা হয়েছে। পানীয় জলের জোগান নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। প্রচুর ত্রিপলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঝড়ের সময় মানুষ যেন ঘর থেকে না বের হন বা আর কী করণীয় সেটা মাইকে শুক্রবার সকাল থেকে জানানো হবে। জেলাশাসক আরও বলেন, ‘‘ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় টাকার জোগান লাগলে সরকার দেবে।’’

প্রবল উদ্বেগ রয়েছে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিয়েও। এখন মাঠে বোরো ধান রয়েছে আধপাকা অবস্থায়। জেলায় বোরো চাষ হয়েছে ৭৬ হাজার হেক্টর জমিতে। ঝড়ের দাপটে সেই ধানে ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। ক্ষতি হতে পারে পানের বরজ, লতানে আনাজের মাচার। কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এই নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। চাষিদের জানানো হয়েছে, বোরো ধান ৮০ শতাংশ পেকে গিয়ে থাকেলে তা যেন কম্বাইন হারভেস্টারে কেটে ঘরে তুলে নেন চাষিরা। পান এবং লতানে আনাজের খেতের চার দিকে শক্ত খুঁটি পুঁতে সেগুলিকে আড়াল দেওয়ার চেষ্টা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Fani Cyclone Fani ফণী
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE