Advertisement
E-Paper

তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে ফের অনাস্থা

পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন দলের সদস্যেরাই। সিমলা-ধানাড়া পঞ্চায়েতের পরে এ বার সোনাইজুড়ি। দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতই কাশীপুর ব্লকের। কিছুদিন আগেই সিমলা-ধানাড়া পঞ্চায়েতে দলীয় সদস্যদের আনা অনাস্থায় সরতে হয়েছিল তৃণমূলের প্রধান সরস্বতী হেমব্রমকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৬ ০৬:৩২

পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন দলের সদস্যেরাই। সিমলা-ধানাড়া পঞ্চায়েতের পরে এ বার সোনাইজুড়ি। দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতই কাশীপুর ব্লকের।

কিছুদিন আগেই সিমলা-ধানাড়া পঞ্চায়েতে দলীয় সদস্যদের আনা অনাস্থায় সরতে হয়েছিল তৃণমূলের প্রধান সরস্বতী হেমব্রমকে। এ বার সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান সুচিত্রা সহিসের বিরুদ্ধে সোমবার অনাস্থা প্রস্তাব ব্লক প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন পঞ্চায়েতে তৃণমূলের সদস্যেরা। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, অনাস্থা প্রস্তাব খতিয়ে দেখার পরে তলবি সভার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সুচিত্রাদেবীকে তাদের প্রধান বলেই মানতে নারাজ কাশীপুরের তৃণমূল নেতারা! তবে নিজেকে তৃণমূলেরই সদস্য হিসাবে দাবি করেছেন সুচিত্রাদেবী।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতের দখল পেয়েছিল তৃণমূল। পঞ্চায়েতের ১০টি আসনের মধ্যে শাসকদল পেয়েছিল ৬টি। সিপিএমের দখলে গিয়েছিল দু’টি। বাকি দু’টি আসন পেয়েছিল বিক্ষুব্ধ তৃণমূল, এসইউসি এবং জেএমএম জোটের প্রার্থীরা। তৃণমূলের টিকিটে ভোটে জিতেই সে সময় প্রধান হয়েছিলেন সুচিত্রাদেবী। কিন্তু পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের পর থেকেই দলের একাংশের সঙ্গে পঞ্চায়েত পরিচালনা নিয়ে দূরত্ব তৈরি হয় প্রধানের। বিশেষ করে তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর পরামর্শ অনুযায়ী সুচিত্রাদেবী পঞ্চায়েত পরিচালনা করছেন না বলে দলের অন্দরেই অভিযোগ ওঠে বারবার। শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তাঁকে প্রধানের পদ থেকে অপসারণের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূলের পাঁচ পঞ্চায়েত সদস্য। আস্থাভোটে সিপিএম ও মহাজোটের চার জন সদস্যর সমর্থন পান সুচিত্রাদেবী। দশ জন সদস্যর মধ্যে পাঁচ জনের সমর্থন প্রধানের দিকে থাকায় অনাস্থা খারিজ হয়ে গিয়েছিল। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই ঘটনার পর থেকেই কার্যত সুচিত্রাদেবীর সঙ্গে দলের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। যদিও তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি।

অন্য দিকে, পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের আড়াই বছরের মধ্যে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যাবে না, রাজ্য সরকার এই মর্মে বিধানসভায় বিল পাশ করানোয় সোনাইজুড়িতে প্রধানের বিরুদ্ধে পরবর্তী সময়ে অনাস্থা আনতে পারেননি তৃণমূল সদস্যেরা। ২০১৬ সালের ফ্রেবুয়ারিতে ওই আড়াই বছরের সময়সীমা শেষ হয়েছে। এ দিকে, বিধানসভা নির্বাচনের আগেই কাশীপুরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতের আহাত্তোড় গ্রাম সংসদের সিপিএম সদস্য পূর্ণিমা বাউরি। ফলে সুচিত্রা সহিসকে বাদ দিয়েই ফের ছ’টি আসন চলে আসে তৃণমূলের দখলে। বিধানসভার ফল প্রকাশের পরেই তাই সুচিত্রাদেবীর বিরুদ্ধে ফের অনাস্থা এনেছেন ওই ছয় সদস্য। সোমবার ব্লক প্রশাসনের কাছে দেওয়া অনাস্থার চিঠিতে ওই সদস্যরা দাবি করেছেন, প্রধান পঞ্চায়েতে পরিচালনায় তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেন না। এক তরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে পঞ্চায়েত চালান। দুর্নীতির অভিযোগও আনা হয়েছে প্রধানের বিরুদ্ধে।

তৃণমূলের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে অনাস্থা এনেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন সুচিত্রাদেবী। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এখনও দলের প্রতিটি কর্মসূচিতে যোগ দিই। সম্প্রতি কলকাতায় দলের কর্মশালাতেও গিয়ছিলাম। সেখানে দলনেত্রী স্পষ্ট বলেছেন, তৃণমূলের দখলে থাকা পঞ্চায়েতগুলিতে অনাস্থা আনা যাবে না। তার পরেও উপরতলার নির্দেশ অমান্য করে অনাস্থা আনা হয়েছে। সব জেলা নেতাদের জানিয়েছি।”

যদিও কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘‘সোনাইজুড়িতে বিরোধীদের সমর্থন নিয়ে সুচিত্রাদেবী প্রধানের পদে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই দলের কোনও যোগাযোগ নেই। তা ছাড়া, সিপিএমের এক সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে ওই পঞ্চায়েতে আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেখানে অনাস্থা এনেছেন আমাদের সদস্যেরা।’’

Panchayat TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy