Advertisement
০৫ মে ২০২৪

কলেজে পরীক্ষা, নিতুড়িয়ায় উদ্বোধন এড়ালেন শিক্ষামন্ত্রী

নতুন হস্টেল ভবনের ফলকে উদ্ধোধক হিসেবে তাঁর নাম। মঞ্চেও তাঁর নাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি উদ্বোধন করতে এলেন না। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সোমবার নিতুড়িয়ার পঞ্চকোট কলেজে ছাত্রী আবাস ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের উদ্ধোধন করার কথা ছিল। কলেজে দু’টি পর্যায়ে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তাই দু’টি পরীক্ষার ফাঁকে দুপুর ১টা থেকে ২টের মধ্যে উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারিত হয়েছিল।

(বাঁ দিক থেকে) ফলক বসলেও নিতুড়িয়ার কলেজে আসতে পারেননি। তবে পুঞ্চায় যান শিক্ষামন্ত্রী।—নিজস্ব চিত্র।

(বাঁ দিক থেকে) ফলক বসলেও নিতুড়িয়ার কলেজে আসতে পারেননি। তবে পুঞ্চায় যান শিক্ষামন্ত্রী।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নিতুড়িয়া ও পুঞ্চা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৫ ০০:৫৪
Share: Save:

নতুন হস্টেল ভবনের ফলকে উদ্ধোধক হিসেবে তাঁর নাম। মঞ্চেও তাঁর নাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি উদ্বোধন করতে এলেন না।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সোমবার নিতুড়িয়ার পঞ্চকোট কলেজে ছাত্রী আবাস ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের উদ্ধোধন করার কথা ছিল। কলেজে দু’টি পর্যায়ে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তাই দু’টি পরীক্ষার ফাঁকে দুপুর ১টা থেকে ২টের মধ্যে উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারিত হয়েছিল। মঞ্চ বাঁধা থেকে, বেলুন ও ফুল দিয়ে সাজানো তোরণ, মন্ত্রীর দুপুরের খাবারেরও আয়োজন করা হয়েছিল। পরীক্ষার্থীদের যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য কলেজের পিছনে মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল। শুধু দু’টি মাত্র সাউন্ডবক্স লাগানো হয়েছিল। কিন্তু এত কিছু করেও সময়ের হেরফেরো সেই মন্ত্রীকেই পাওয়া গেল না পঞ্চকোট কলেজে।
কলেজের সামনে এসেই মন্ত্রীর গাড়ি চলে গেল পরের অনুষ্ঠানে। কারণ মন্ত্রী যখন নিতুড়িয়ার এই কলেজের সামনে আসেন, তখন ঘড়িতে দু’টো পেরিয়ে গিয়েছে। পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় মন্ত্রীর গাড়ি আর কলেজে ঢোকেনি। পরে পুঞ্চার লাখরা উপেন্দ্রনাথ হাইস্কুলের ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে পার্থবাবু বলেন, ‘‘ওখানে পরীক্ষা নেওয়া চলছিল। পরীক্ষা চলাকালীন স্কুলে বা কলেজে ঢোকা উচিত নয়। তাই আমি ওখানে ঢুকিনি।’’ তাঁর সঙ্গেই গাড়িতে ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। তিনিই বিকেলে পুঞ্চা থেকে ফিরে এসে পঞ্চকোট কলেজের লাবণ্যপ্রভা দেবীর নামাঙ্কিত ছাত্রী আবাস ও গ্রন্থাগারের উদ্ধোধন করেন। শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘অনুষ্ঠানে পৌঁছানোর আগেই পার্থবাবুর কাছে খবর আসে কাছেই পরীক্ষা চলছে। মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান হলে ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা দিতে সমস্যা হবে বলেই শিক্ষামন্ত্রী নিতুড়িয়ার কলেজের অনুষ্ঠানের বদলে পুঞ্চার অনুষ্ঠানে যান।’’ ছাত্রছাত্রীদের সমস্যার কথা ভেবে শিক্ষামন্ত্রীর অনুষ্ঠানে না যাওয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত ইতিবাচক দিক হিসাবেই দাবি করেছেন শান্তিরামবাবু।

পুঞ্চার স্কুল অবশ্য তাদের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বেশ কিছুক্ষণের জন্য জোড়ামন্ত্রীকেই পায়। এই স্কুলটি এ বার উচ্চমাধ্যমিকে উন্নীত হল। স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বলেন, ‘‘এই স্কুলের ৭০ ভাগ পড়ুয়া তপশিলি জাতি-উপজাতির। কিন্তু স্কুলে প্রয়োজনের অনুপাতে শ্রেণিকক্ষ নেই। টাকার অভাবে বিজ্ঞান শাখা চালু করা সম্ভব হয়নি।’’ পরে পার্থবাবু বক্তব্য রাখতে উঠে জেলার মন্ত্রী ও সভাধিপতিকে এই স্কুলের উন্নয়নে সহযোগিতা করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘‘তেমন প্রয়োজন হলে স্কুলের পক্ষ থেকে আমার কাছে প্রস্তাব এলে আমি তা দেখব।’’ পাশাপাশি তার আরও পরামর্শ মেয়েদের বাথরুম যেন স্বাস্থ্যসম্মত হয়। পানীয় জলের অভাব যেন না থাকে। মন্ত্রী জানান, অর্থের অভাবে স্কুলে কোনও বিভাগ চালু করা যাচ্ছে না, এটা মানা যায়না। পরে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো দু’জনেই স্কুলের উন্নয়নে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

পার্থবাবু জানান, এ পর্যন্ত ২৭ লক্ষ ছাত্রী কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় এসেছে। আরও ৪০ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে সাইকেল দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সাঁওতালি বই কারা পাচ্ছেন না, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে (মাধ্যমিক) তা খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলেন মন্ত্রী।

পুঞ্চার অনুষ্ঠানে ছিলেন সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নচিকেতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দুই বিধায়ক সন্ধারানি টুডু ও পূর্ণচন্দ্র বাউরি। রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণবাবু অবশ্য পার্থবাবুকে নিতুড়িয়া কলেজের অনুষ্ঠানে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে পুঞ্চায় গিয়েছিলেন।

শেষমেশ পার্থবাবুকে ফিরিয়ে আনতে না পেরে পূর্ণবাবু বলেন, ‘‘পার্থদার সময়ের অভাব হয়ে গেল। তাই তিনি বাঁকুড়া হয়ে কলকাতায় ফিরে গেলেন। পরে সময় সুযোগ বুঝে পার্থদাকে নিতুড়িয়ার কলেজে নিয়ে আসব।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE