Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হাতির হানায় মৃত্যু হলেই চাকরি

ক্ষতিপূরণের অর্থ বাড়ানো হয়েছিল আগেই। এ বার হাতির হানায় মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতাময়ী: সুনুকপাহাড়ির প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

মমতাময়ী: সুনুকপাহাড়ির প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

ক্ষতিপূরণের অর্থ বাড়ানো হয়েছিল আগেই। এ বার হাতির হানায় মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বাঁকুড়া ১ ব্লকের সুনুকপাহাড়ির প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “হাতির হানায় কেউ মারা গেলে তাঁর পরিবারের এক জনকে জঙ্গলেই চাকরি দেওয়া হবে।” বন দফতর সূত্রে খবর, দফতরের রাজ্য কর্তাদের এ বিষয়ে শীঘ্রই পরিকল্পনা করে নির্দেশিকা জারি করতেও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সংযোজন, হাতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে স্থানীয়দেরই নেওয়ার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। কারণ ওঁরা জঙ্গলটা ভাল বোঝেন।

হাতির হানায় মানুষের মৃত্যু বাঁকুড়ায় প্রায় রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাম আমল থেকেই এই জেলার মানুষ হাতি সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছেন। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে জঙ্গল সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দারা গণমঞ্চও গড়েছেন। সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে প্রশাসনের আধিকারিক থেকে জনপ্রতিনিধি সবাইকেই।

২০১৫ সালের এপ্রিলে রাজ্য সরকার হাতির হানায় মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ ১ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে আড়াই লক্ষ টাকা করে। এতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কিছুটা কমলেও মৃতের পরিবারের এক জনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার দাবি দীর্ঘ দিন ধরেই উঠে আসছিল।

বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ মানুষের সমস্যা বোঝেন। রাজ্যের প্রতিটি পরিবার যাতে স্বাবলম্বী হয়ে বাঁচতে পারে সেই লক্ষ্যেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে জঙ্গল সংলগ্ন গ্রামের মানুষ খুশি।” ‘হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে সংগ্রামী গণমঞ্চ’-এর মুখপাত্র চন্দন প্রামানিক বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। এতে মৃতের পরিবারের সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হবে। তবে হাতি সমস্যার থেকে পুরোপুরি মুক্তি না মেলা পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।”

রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে মানুষের ক্ষোভ অনেকটাই মিটবে বলে আশাবাদী জেলার বন দফতরের কর্তারাও। বনদফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষে বাঁকুড়া জেলায় হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছিল ৩৬ জনের। ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে সেই সংখ্যাটা ছিল ১৩। সেই সমস্ত পরিবারই ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে গিয়েছে বলে দাবি বন কর্তাদের। তবে ঠিক কী চাকরি দেওয়া হবে তা এখনও স্পষ্ট নয় বন দফতরের কর্তাদের কাছে। নির্দেশিকা পেলেই এই বিষয়ে বিশদে জানা যাবে বলে তাঁরা জানান।

মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা প্রসঙ্গে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা কতটা বাস্তবায়িত হয় সেটা সময়ই বলবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant attacked Family Member Job
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE