Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

উঠেছে টাকা,হয়নি শুধু শৌচালয়

প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সময় বিএলএস বা বেস লাইন সার্ভের তালিকাভুক্ত পরিবারে ৫,৫০০ টাকা ব্যয়ে শৌচালয় নির্মাণের জন্য উপভোক্তারা নির্মাণকারী সংস্থা অথবা পঞ্চায়েতে ৯০০ টাকা জমা দিলে সরকারি ভর্তুকি হিসেবে পেতেন ৪,৬০০ টাকা।

অর্ঘ্য ঘোষ
ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ০০:৫৩
Share: Save:

বছর চারেক আগে শৌচালয় তৈরির জন্য বরাদ্দ হয়েছিল সরকারি ভর্তুকির টাকা। আজও শৌচালয় তৈরি হয়নি। সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশ করে ওই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে ঘটনাটি ঘটে ময়ূরেশ্বরের কুণ্ডলা এবং ময়ূরেশ্বর পঞ্চায়েত এলাকায়। সম্প্রতি তথ্য জানার আইনে উপভোক্তাদের নামের তালিকা পাওয়ার পরই বিষয়টি নিয়ে হৈ-চৈ পড়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে বিডিও-র কাছে তদন্তের দাবি জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন বঞ্চিত উপভোক্তারা।

প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সময় বিএলএস বা বেস লাইন সার্ভের তালিকাভুক্ত পরিবারে ৫,৫০০ টাকা ব্যয়ে শৌচালয় নির্মাণের জন্য উপভোক্তারা নির্মাণকারী সংস্থা অথবা পঞ্চায়েতে ৯০০ টাকা জমা দিলে সরকারি ভর্তুকি হিসেবে পেতেন ৪,৬০০ টাকা। নিয়ম অনুযায়ী, ব্লকের নোডাল অফিসার জয়েন্ট বিডিওর অধীনে শৌচালয় নির্মাণের বিষয়টি পরিচালিত হয়। শৌচালয় নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে নির্ধারিত মাস্টার রোলে উপভোক্তার স্বাক্ষরের পর পঞ্চায়েত প্রধান, নির্মাণ সহায়ক এবং ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী সরেজমিনে কাজ খতিয়ে দেখে স্বাক্ষর করার পরে তবে ভর্তুকির টাকা পাওয়ার কথা নির্মাণকারী সংস্থার।

কিন্তু, এ ক্ষেত্রে উপভোক্তাদের অন্ধকারে রেখে তাঁদের নামে বরাদ্দ ভর্তুকির টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি তথ্য জানার আইনে উপভোক্তাদের নামের তালিকা পাওয়ার পরই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তারপরই বেশ কিছু উপভোক্তা লিখিত ভাবে বিডিও-র কাছে তদন্তের দাবি জানান। তাঁদেরই অন্যতম ময়ূরেশ্বরের সনৎকুমার মণ্ডল, নাস্তিকার শান্তিরাম সূত্রধর, ময়ূরেশ্বরের আশিস ভকত। তাঁরা বলেন, ‘‘আমাদের বাড়িতে সরকারি প্রকল্পে কোনও শৌচালয় তৈরি করা হয়নি। কিন্তু তথ্য জানার আইনে আমাদের নাম প্রাপক হিসেবে রয়েছে। তাই বিডিওর কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছি।’’ বিডিও-র কাছে লিখিত ভাবে একই অভিযোগ করেছেন ময়ূরেশ্বর পঞ্চায়েত এলাকার আরও ৫০ জন বাসিন্দা। গয়ানাথ দাস, নীলিমা সূত্রধররা বলছেন, ‘‘তথ্য জানার আইনে তালিকা না দেখলে তো জানতেও পারতাম না শৌচালয়ের বরাদ্দ টাকা তোলা হয়েছে।’’

বিজেপি-র ময়ূরেশ্বর ২ ব্লক কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস নন্দী বলেন, ‘‘আমরা তদন্ত করে দেখেছি দুটি পঞ্চায়েত এলাকায় শৌচালয় নির্মাণ না করেও শ’খানেক উপভোক্তার সই কিংবা টিপছাপ জাল করা হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়ায় কিছু অসাধু সরকারি কর্মীর যোগসাজস থাকতে পারে। না হলে টাকা তুলে নেওয়া সম্ভব নয়।’’ ওই দুটি পঞ্চায়েত এলাকায় সেই সময় শৌচালয় নির্মাণের দায়িত্বে ছিল ময়ূরেশ্বরের ‘অম্বেডকর স্মৃতি সঙ্ঘ’। সংস্থার সম্পাদক রাজকুমার ফুলমালি অবশ্য টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, ‘‘মিথ্যে অভিযোগ। যাঁদের নামে টাকা তোলা হয়েছে, তাঁদের বাড়িতে শৌচালয় নির্মাণ করা হয়েছে।’’ ময়ূরেশ্বর ২-এর বিডিও অমিতকুমার গায়েন জানান, অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। কোথাও তছরুপের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Toilet Money টাকা শৌচালয়
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE