Advertisement
০৪ মে ২০২৪

সুশ্রিতাদের পাশে দাঁড়াতে ফেসবুকে ডাক

প্রশাসনিক আধিকারিকেরা বাড়িতে গিয়ে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জেলা পরিষদের তরফে মেয়ের পড়াশোনার খরচের ব্যবস্থা করারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

এভারেস্ট জয়ী মৃত সুভাষ পালকে নিয়ে বিজেপির পোস্ট।

এভারেস্ট জয়ী মৃত সুভাষ পালকে নিয়ে বিজেপির পোস্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৬ ০২:৪৯
Share: Save:

প্রশাসনিক আধিকারিকেরা বাড়িতে গিয়ে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জেলা পরিষদের তরফে মেয়ের পড়াশোনার খরচের ব্যবস্থা করারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এ বার এভারেস্ট জয়ী বাঁকুড়ার ছেলে সুভাষ পালের পরিবারের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করল বিজেপি।

দলের রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে মৃত বাঁকুড়ার সুভাষবাবুর স্ত্রী বিশাখা পালের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর পোস্ট করে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেছেন। পোস্টটি ছড়িয়ে পড়তেই বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত একশোর বেশি মানুষ সেটি লাইক করেছেন। অনেকে কমেন্ট করে প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন। জেলার বাইরের কেউ কেউ সাহায্য করতে চেয়ে ব্যাঙ্কেরর আইএফএসসি কোডও জানতে চেয়েছেন।

সুভাষবাবুর এই উদ্যোগে কিছুটা আশার আলো দেখছেন এভারেস্টে গিয়ে মৃত সুভাষের দাদা প্রণব পাল। তিনি বলেন, “ভাইয়ের এই অকাল মৃত্যুতে অন্ধকার নেমে এসেছে গোটা পরিবারেই। তবে সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসন সকলে যে ভাবে আমাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তাতে আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা নেই। সাহায্য না পেলে পরিবারটা একেবারে ভেসে যাবে।”

বাঁকুড়া শহরের সারদাপল্লিতে একটি ভাঙাচোরা সিমেন্টের ঘরে বাবা, মা, দাদা, বৌদি ও নিজের পরিবার নিয়ে থাকতেন সুভাষবাবু। একটি মিনিট্রাক চালিয়েই সংসার টানতেন তিনি। তাঁর দাদা প্রণববাবুরও নির্দিষ্ট ভাবে কোনও পেশা নেই। সুভাষবাবুর মা সাবিত্রীদেবী ছেলেদের কাছে একটা কথাই শুধু বলতেন, ‘থাকার বাড়িটা ভাল করে তৈরি করতে হবে’।

সুভাষবাবু এভারেস্টে যাওয়ার আগে মাকে বলে গিয়েছিলেন, স্বপ্নপূরণ করে এসেই তিনি বাড়ি তৈরি করতে আরও বেশি করে পরিশ্রম করবেন। শেষ পর্যন্ত এভারেস্ট থেকে আর তিনি বাড়ি ফিরতে পারেননি। হিমালয় থেকে নেমে এসেছে তাঁর নিথর দেহ। এই শোকের আবহেই বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে সুভাষবাবুর স্ত্রী বিশাখাদেবী ও বছর তাঁর বছর এগারোর মেয়ে সুশ্রিতার ভবিষ্যৎ নিয়ে।

এই পরিস্থিতিতে সুভাষবাবুর অসহায় পরিবারের পাশে অনেকেই দাঁড়াতে চেয়েছেন। সুভাষবাবুর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই বাঁকুড়া ১ বিডিও সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন। তাঁর কাছে পরিবারের লোকজন বিশাখাদেবীর চাকরি ও সুশ্রিতার দেখভালের আবেদন জানান। সুপ্রভাতবাবু তাঁদের দাবিদাওয়া জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুকে জানিয়েছেন। মৌমিতাদেবী সহানুভূতির সঙ্গে বিষয়টি দেখছেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

বাঁকুড়ার কংগ্রেস বিধায়ক শম্পা দরিপাও সুভাষবাবুর পরিবারের দাবিগুলি নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন। জেলা সভাধিপতি তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তী এভারেস্টজয়ীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর মেয়ের পড়াশোনার জন্য আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে এসেছেন জেলা পরিষদের তরফে।

বুধবারই এভারেস্ট থেকে সুভাষবাবু দেহ ফিরিয়ে এনে অন্ত্যেষ্টি করা হয় তাঁর নিজের গ্রাম বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন বরুটের শ্মশানে। সেই রাতেই বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষবাবু এভারেস্টে মৃতের পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্যের আবেদন করার কথা ভাবেন। প্রণববাবুর সঙ্গে আলোচনা করে বিশাখাদেবীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর সংগ্রহ করেন তিনি। সুভাষবাবু আবেদন করেছেন ন্যূনতম ১০০ বা তার বেশি টাকা দিয়ে সাহায্য করার জন্য। সুভাষবাবু বলছেন, “ফেসবুকে আমার পোস্ট বহু মানুষ দেখেন। সে ক্ষেত্রে সকলেই যদি এগিয়ে এসে অন্তত একশো টাকা করে সাহায্য করেন, তাহলেও সুভাষের পরিবারের কাছে সেটা অনেক বড় সাহায্যে পরিণত হতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Facebook campaign Subhas Paul
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE