Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ডুবল ভাসা সেতু, দুর্ভোগে বালিজুড়ি

এলাকাবাসীর আক্ষেপ, দুর্ভোগ যেমন ছিল তেমনই রয়েছে, তাহলে আর সেতু গড়ে লাভ কী হল। তাঁরা জানাচ্ছেন, ‘‘এতটাই নীচু করে এই সেতুটি তৈরি করেছে সেচ ও জলপথ দফতর, যে সেতু করা আর না করায় কোনও তফাৎ নেই।’’

জলভাসি: জল ঢুকেছে কঙ্কালীতলা মন্দিরে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

জলভাসি: জল ঢুকেছে কঙ্কালীতলা মন্দিরে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০২:২৬
Share: Save:

সাংসদ তহবিল টাকায় বছর চারেক আগে শাল নদীতে বহু প্রতীক্ষিত ভাসাপুল তৈরি হয়েছিল। এলাকাবাসী ভেবেছিলেন, যাক তাহলে দূর্ভোগ গেল। কিন্তু কোথায় কী, দুবরাজপুরের বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের মেজে ও বেলসারা গ্রামের মধ্যে থাকা শালনদীর উপর তৈরি ভাসাপুল ফি বছর জলে ভাসছে। এ বারও জলের তলায়।

এলাকাবাসীর আক্ষেপ, দুর্ভোগ যেমন ছিল তেমনই রয়েছে, তাহলে আর সেতু গড়ে লাভ কী হল। তাঁরা জানাচ্ছেন, ‘‘এতটাই নীচু করে এই সেতুটি তৈরি করেছে সেচ ও জলপথ দফতর, যে সেতু করা আর না করায় কোনও তফাৎ নেই।’’

বুধবার তেমন বৃষ্টি হয়নি। লাভপুর বাদে জেলার জলছবি অনেক ভাল। জেলার বিভিন্ন নদীর জল নমেছে। গত বৃহস্পতিবার প্রবল বর্ষণের পর থেকে জেলা জুড়ে বেশ কয়েকটি কজওয়ে ভেসেছিল। তার মধ্যে শাল নদীর তিনটি কজওয়ে ছিল। খয়রাশোলে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে, দুবরাজপুরের কুখুটিয়া এবং বেলসারা। কিন্তু তার পরদিন থেকে বাকি দুটি কজওয়ে থেকে জল কমলেও এখনও তিন ফুট জল বেলসারা কজওয়েতে।

এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, শালনদীর একদিকে রয়েছে বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলসরা, কুখুটিয়া, কুলেকুড়ি, শল্ল্যাপাহাড়, ওপারে থাকা বালিজুড়ি, মেজে, কাপাসতোড়-সহ বহু গ্রামের মানুষ। স্কুল, চাষ আবাদের জন্য খেতে আসতে, হাট বা স্থানীয় বালিজুড়ি পঞ্চায়েতে যাতায়াত করতে, দু’পাশের মানুষকে। বাধা সেই শাল নদী। কিন্তু নদীতে জল থাকায় যাতায়াত করতে হচ্ছে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে। এলাকাবাসী অনিল মণ্ডল, বিপিণ মণ্ডল, সুবোধ ঘোষ, প্রহ্লাদ মণ্ডল, দুলালি দাসরা বলছেন, ‘‘আগেও বাধা ছিল, সেতু তৈরির পর এখনও একই হাল।’’

২০১২ সালের অগস্ট মাসে নিজের লোকসভা এলাকা দুবরাজপুরের বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামের মানুষদের সঙ্গে তাঁদের অভাব অভিযোগ নিয়ে সরাসরি কথা বলছিলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। তখনই মিলিত দাবি উঠেছিল, শাল নদীতে একটি সেতুর। বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখে কয়েক মাসের মধ্যেই সাংসদ তহবিল থেকে ওই সেতু বা কজওয়েটি করার জন্য ৩৪ লক্ষ টাকারও বেশি বরাদ্দ করে দিয়েছিলেন। ২০১৩ সাল বর্ষার আগে থেকেই কজওয়েটির কাজ শেষ হয় সেচ ও জলপথ দফতরের তদারকিতে। কিন্তু ১০৩ মিটার দীর্ঘ ও ৫ মিটার চওড়া এই কজওয়েটি নির্মিত হলেও কাজের কাজ হয়নি।

সেচ দফতরের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (ময়ূরাক্ষী ক্যানাল সেচ) দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘আমি দায়িত্বে আসার আগেই সেতুটি তৈরি হয়েছে। কোথায় সমস্যা, কী করণীয় সেটা জানতে, বর্ষার পরই সেন্ট্রাল ডিজাইন অফিস, কলকাতায় পাঠাব। যা পরামর্শ দেওয়া হবে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE