Advertisement
E-Paper

অ্যাম্বুল্যান্সের উপরে নজরদারিতে জিপিএস

অ্যাম্বুল্যান্সগুলির উপর নজরদারি চালাতে প্রত্যেকটি গাড়িতে একটি করে ‘জিপিএস ডিভাইস’ বসানোর দাওয়াই দিল প্রশাসন। রেফার হওয়া রোগীকে নির্দিষ্ট হাসপাতালে চালক কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা সহজেই ওই জিপিএসের মাধ্যমে জানা যাবে। মঙ্গলবার বৈ ঠক করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০১:০২
সারি: অ্যাম্বুল্যান্সে ছেয়ে গিয়েছে হাসপাতাল চত্বর। নিজস্ব চিত্র

সারি: অ্যাম্বুল্যান্সে ছেয়ে গিয়েছে হাসপাতাল চত্বর। নিজস্ব চিত্র

অ্যাম্বুল্যান্সগুলির উপর নজরদারি চালাতে প্রত্যেকটি গাড়িতে একটি করে ‘জিপিএস ডিভাইস’ বসানোর দাওয়াই দিল প্রশাসন।

রেফার হওয়া রোগীকে নির্দিষ্ট হাসপাতালে চালক কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা সহজেই ওই জিপিএসের মাধ্যমে জানা যাবে। মঙ্গলবার বৈ ঠক করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতি।

সম্প্রতি ওই হাসপাতাল থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা রোগীদের চালকেরা ভুল বুঝিয়ে বর্ধমানের নার্সিংহোমে ভর্তি করে দেন বলে অভিযোগ। একটি ক্ষেত্রে নার্সিংহোমের বিল শোধ করতে না পেরে ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলার শিকারিপাড়া থানার মলুটি গ্রামের বাসিন্দা তপন লেট আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় সরকারি খাতায় নিশ্চয় যানের নম্বর ব্যবহার করে রোগীকে একটি প্রাইভেট অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ। অন্য ঘটনায় বিল না মেটানোয় এক রোগীকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। প্রথম ঘটনায় চাপে পড়ে মৃত তপনবাবুর মেয়েকে ছেড়ে দেয় নার্সিংহোম। পরে অভিযুক্ত নার্সিংহোম মালিকদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মোটা কমিশনের বিনিময়ে মহকুমা হাসপাতালের এক শ্রেণির অ্যাম্বুল্যান্স চালক ও মালিকদের সঙ্গে নার্সিংহোমগুলির চক্র ওই হাসপাতালে সক্রিয় বলে অভিযোগ করেন রোগীরা।

ওই ঘটনার পর থেকেই চাপে ছিল রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে থাকা নিশ্চিয় যান এবং প্রাইভেট অ্যাম্বুল্যান্স (সব মিলিয়ে ৪২টি) চালক ও মালিকদের গতিবিধির উপরে কী করে নজর রাখা যায়, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেন দু’পক্ষই। সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে আলোচনার জন্য এ দিন জরুরি বৈঠকে বসে হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতি। সেই বৈঠকে এসডিও (রামপুরহাট) সুপ্রিয় দাস, সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ব্রজেশ্বর মজুমদার, হাসপাতাল সুপার সুবোধকুমার মণ্ডল, এসডিও (রামপুরহাট) ধৃতিমান সরকার-সহ সমিতির অন্যান্য সদস্যেরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে হাসপাতালের নথিভুক্ত নিশ্চয়যান চালক এবং প্রি-পেড অ্যাম্বুলান্স চালক-মালিকদেরও ডাকা হয়। সবার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চয় যান ও অ্যাম্বুল্যান্সগুলিতে জিপিএস বসানো বাধ্যতামূলক করা হয়। চালক-মালিকেরা তাতে সম্মতিও জানান।

প্রশাসন সূত্রের খবর, জিপিএস বসানোর ব্যাপারে ইতিমধ্যেই এক সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছে প্রশাসন। প্রতিটি ডিভাইস বসাতে আনুমানিক ৫-৬ হাজার টাকা করে খরচ হবে। হাসপাতাল এবং প্রশাসন— দু’পক্ষ থেকেই নজরদারি চালানো হবে। সুবোধবাবুর দাবি, আগামী দু’তিন দিনের মধ্যেই হাসপাতালের প্রতিটি নিশ্চয় যানে জিপিএস বসিয়ে এই নজরদারি শুরু করা হবে। গোটা বিষয়টি সুপারের অফিস এবং রোগী সহায়তা কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রণও করা হবে। সুপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘জিপিএস ব্যবস্থা থাকলে নিশ্চয় যান বা অ্যাম্বুল্যান্সগুলির গতিবিধি হাসপাতাল থেকে বা যে কেউ নজর রাখতে পারবেন। ফলে গাড়িগুলি ঠিক জায়গায় যাচ্ছে কিনা, তা কন্ট্রোল রুমের ডিসপ্লেতে সহজেই ধরা পড়বে।’’ তাতে তপন লেটের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যাবে বলেই মনে করছে প্রশাসন।

সুপ্রিয়বাবু আরও জানান, এ ক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে রোগীকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার পথে কোনও দুর্ঘটনা বা রোগীর পরিস্থিতি খারাপ হলে জিপিএস ডিভাইসে থাকা আপতকালীন সুইচের মাধ্যমে চালক ‘কন্ট্রোলিং অথরিটি’কে জানতে পারবেন। আশিসবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতালে নথিভুক্ত নিশ্চয় যানগুলির চালকদের প্রোফাইল পুলিশের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যানগুলি নিজেদের খরচে জিপিএস ডিভাইস চালু করবে। এটা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ।’’

জিপিএস পদ্ধতি চালু করে সাফল্য আসলে আগামী দিনে অন্যান্য সরকারি হাসপাতালেও তা প্রয়োগ করা হবে বলে আশা করছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

GPS Ambulance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy