Advertisement
০৬ মে ২০২৪

বাঁধ ভাঙল ব্রাহ্মণী নদীর

ব্যারাজে জল ছাড়া চলছিলই। এরই মাঝে ভেঙে পড়ল ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধ। আর তার জেরে নতুন করে বন্যা কবিলত হওয়ার মুখে রামপুরহাট ২ ব্লকের দুনিগ্রাম পঞ্চায়েতের কতুবপুর, গোপালপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৫ ০১:১২
Share: Save:

ব্যারাজে জল ছাড়া চলছিলই। এরই মাঝে ভেঙে পড়ল ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধ। আর তার জেরে নতুন করে বন্যা কবিলত হওয়ার মুখে রামপুরহাট ২ ব্লকের দুনিগ্রাম পঞ্চায়েতের কতুবপুর, গোপালপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। রবিবার রাতে কুতুবপুর ও গোপালপুরের মাঝে ওই বাঁধের প্রায় ৭০–৮০ মিটার অংশ ভেঙে যায়।

সোমবার ময়ূরাক্ষী উত্তর ক্যানালের রামপুরহাট শাখার নির্বাহী বাস্তুকার তরুণ রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘খবর পেয়ে রাতেই এলাকায় কর্মীদের পাঠানো হয়। তাঁরা বাঁধ মেরামত কী ভাবে করা যায়, দেখে এসেছেন। কী ভাবে ভেঙেছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, এ দিন ব্রাহ্মণী ও দ্বারকা ব্যারাজ থেকে যথাক্রমে চার ও তিন হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।

এ দিকে, রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির দুনিগ্রাম পঞ্চায়েত ছাড়া বুধিগ্রাম, বিষ্ণুপুর, সাহাপুর পঞ্চায়েত এলাকায় নতুন করে বিভিন্ন গ্রামে বন্যার জল ঢুকে ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। বিষ্ণুপুর– শাবলদহ এবং বিষ্ণুপুর–ধল্লা যাওয়ার রাস্তা ডুবে যাওয়ার ফলে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বুধিগ্রাম পঞ্চায়েতের বাতিনা গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের কার্তিক মাল বলেন, ‘‘গ্রামের কোটাল পাড়া, দক্ষিণপাড়া, উত্তর পাড়া, বায়েন পাড়া মিলে প্রায় ১০৫টি বাড়ি জলবন্দি অবস্থায় আছে।’’ তিনি জানান, রাত দেড়টা থেকে গ্রামে পাশের কাঁদর ছাপানো জল ঢুকতে থাকে। সেই সময় জলবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে গ্রামের ফ্লাড রিলিফ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন দুপুরে এলাকায় যান বিডিও সৌমনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ১০৫টি পরিবারের জন্য ৫ কুইন্টাল চাল অনুমোদন করে যান।

অন্য দিকে, ত্রাণ বিলিতে গাফিলতি অভিযোগ করছেন সাহাপুর অঞ্চলের বাসিন্দা তথা জেলা পরিষদের প্রাক্তন সহ সভাপতি নিতাই মাল। তাঁর দাবি, ‘‘প্রশাসন থেকে বন্যা দুর্গত এলাকায় এখনও ত্রাণ বিলি দূরের কথা, মানুষের চাহিদা মতো মাথার উপর ছাউনি তারপোলিনও বিলি করতে পারেনি প্রশাসন।’’ বিডিও যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, দুর্গত এলাকায় চাল, ওষুধ, ব্লিচিং পাউডার, হ্যলোজেন ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। ব্লকের চারটি পঞ্চায়েতে ৫০–৬০টি করে তারপোলিনও দেওয়া হয়েছে।

এ দিকে ওই নদী বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পিছনে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশকে দায়ী করেছেন কংগ্রেস নেতা মিল্টন রশিদ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এলাকার তৃণমূল কর্মীদের একাংশ বাঁধ কেটে বন্যার সৃষ্টি করেছে। বানের জল ঢুকিয়ে পঞ্চায়েতে ত্রাণের টাকা ঢুকিয়ে হরির লুটের চেষ্টা করেছিল ওরা। কিন্তু, এলাকার মানুষ সে কথা সেচ দফতরকে জানিয়ে দিয়ে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করেছেন।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের দৌলতুন্নেসা নুরি বলেন, ‘‘বন্যার সময় কেউ কাউকে বিপদে ফেলে দেবে, এটা হতে পারে না। এ রকম ভাবে রাজনীতি করাটাও দুঃখজনক।’’ বিডিও জানান, কেউ বাঁধ কেটে দিয়েছে, এমন খবর তাঁর কাছে নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Guard wal rain river rampurhat birbhum BDO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE