Advertisement
E-Paper

স্বাস্থ্য পরিষেবার অধিকার নিয়ে শিবির

সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা নাগরিকদের অধিকার। সেই অধিকার নিয়ে গ্রামগঞ্জের মানুষজনকে সচেতন করতে সম্প্রতি একটি শিবিরের আয়োজন করল ‘সকলের জন্য স্বাস্থ্য আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৬ ০১:৫৯

সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা নাগরিকদের অধিকার। সেই অধিকার নিয়ে গ্রামগঞ্জের মানুষজনকে সচেতন করতে সম্প্রতি একটি শিবিরের আয়োজন করল ‘সকলের জন্য স্বাস্থ্য আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন। পুঞ্চার লৌলাড়া গ্রামে শিবিরটি হয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে অনেক উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে মানুষের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। উদ্যোক্তারা জানান, স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত নাগরিকদের কী কী আইনি অধিকার রয়েছে, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে কোন কোন পরিষেবা পাওয়া যায় এবং সেই পরিষেবা না পেলে কী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব তা নিয়ে শিবিরে আলোচনা হয়েছে।

‘সকলের জন্য স্বাস্থ্য আন্দোলন’ একটি বেসরকারি উদ্যোগ। ২০১১ সালে এই উদ্যোগের সূত্রপাত। বিভিন্ন জেলার অনেক মানুষ এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে যেমন রয়েছেন বেশ কয়েক জন চিকিৎসক, তেমনই রয়েছেন সমাজকর্মী, নাট্যকার, কবি, শিক্ষক এবং অনেক উৎসাহী যুবক। তাঁদেরই এক জন দুর্গাপুরের বাসিন্দা কবি তথা শিক্ষক মণিশঙ্করবাবু। তিনি বলেন, ‘‘সামাজিক দায়বদ্ধতার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, সুন্দরবন থেকে শুরু করে জলপাইগুড়ির চা বাগান বা পুরুলিয়ার বিভিন্ন গ্রামে তাঁরা এই ধরণের শিবিরের আয়োজন করেন। এলাকার মহিলাদের শিবিরে ডেকে এনে তাঁদের স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত অভিজ্ঞতার কথা শোনেন সংগঠনের সদস্যরা। স্থানীয় বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তাঁরা কী ধরণের পরিষেবা পেতে পারেন শিবিরে তার হদিশ দেওয়া হয় গ্রামের মানুষজনকে। মণিশঙ্করবাবুর দাবি, তাঁদের এই উদ্যোগে ইতিমধ্যেই ভাল সাড়া মিলেছে।

পুঞ্চার বাসিন্দা পলাশ মুখোপাধ্যায়ও দীর্ঘ দিন ধরে এই উদ্যোগে সামিল। তিনি জানান, এ দিনের শিবিরে গ্রামের মানুষজনকে বোঝানোর হয়েছে— স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া তাঁদের যেমন প্রাথমিক অধিকার, তেমনই স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বর পরিচ্ছন্ন রাখা তাঁদের কর্তব্য। সঠিক স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য নাগরিকদের স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া প্রয়োজন। শুধু স্বাস্থ্যকর্মীদের দোষারোপ করে দায় এড়ানো উচিত নয়। এই উদ্যোগের অন্যতম সদস্য ডা. সিদ্ধার্থ গুপ্ত বলেন, ‘‘রাজ্যের প্রায় সাড়ে ৯ কোটি বাসিন্দার জন্য রয়েছেন প্রায় ১২ হাজার চিকিৎসক। প্রয়োজনের তুলনায় তা যথেষ্ট নয়। এই পরিকাঠামোর মধ্যেও কী ভাবে পরিষেবা পাওয়া সম্ভব গ্রামে গ্রামে শিবির করে আমরা তা মানুষজনকে বোঝানোর চেষ্টা করি।’’

শিবিরে উপস্থিত ডা. পীযূষকান্তি সরকার এবং ডা. শোভন পণ্ডা বলেন, ‘‘কাগজে কলমে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবার অনেক সুবিধা রয়েছে। গ্রাম স্তরে সেই সুবিধা আদৌ পৌঁছয় কি না, পরিষেবা নিয়ে মানুষজন কী কী সমস্যার সম্মুখীন হন তা জানার চেষ্টা করা হয়েছে শিবিরে।’’ শিবিরে উপস্থিত মহিলাদের বক্তব্যে উঠে এসেছিল তেমনই অনেক অভাব অভিযোগের কথা। তার মধ্যে রয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসকদের একাংশের অনিয়মিত উপস্থিতি, দুর্ব্যবহার, গ্রাম থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দূরত্ব, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছনোর জন্য পরিবহনের অসুবিধার মতো বিভিন্ন অভিযোগ। অভিযোগ উঠেছে ছোটখাট অসুখেও হাসপাতালে রেফার করার। শিবিরের উপস্থিত অনেকেই দাবি করেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে রোগীকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন কিছু চিকিৎসক। আর সেই নার্সিংহোমগুলি চিকিৎসার খরচে রোগীর পরিবারকে প্রায় সর্বস্বান্ত করে ফেলে।

সমস্ত অভাব অভিযোগের কথাই মন দিয়ে শিবিরে শুনেছেন উদ্যোক্তারা। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা রোগীর আত্মীয়রা যোগাযোগ করলে ন্যূনতম খরচে চিকিৎসা জন্যও তাঁরা সহায়তা করবেন।

Health camp health rights
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy