সমবায় ব্যাঙ্কের উপর কেন্দ্রীয় সরকারের নিষেধাজ্ঞার জেরে কী ভাবে ওই ব্যাঙ্কগুলি শিক্ষকদের বেতন দেবে, এই প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে মাস শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বহু শিক্ষককে বেতন দিতে না পারার জন্য তিনি সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছেন। পুরুলিয়া রবীন্দ্র ভবনে সমবায় দফতরের একটি অনুষ্ঠানে অরূপবাবু বলেন, ‘‘আজ মাসের ১ তারিখ। ৭৪ হাজার শিক্ষকের বেতন দিতে হবে আমাদের। এ জন্য ১৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের মাত্র ৩৫ কোটি টাকা চালু নোট দেওয়া হয়েছে। কী ভাবে এই টাকায় শিক্ষকদের বেতন দিতে পারব?’’
বস্তুত ৮ নভেম্বর রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১০০০ ও ৫০০ টাকার পুরনো নোট বাতিল করার ঘোষণা করেন। কয়েকদিন পরে কেন্দ্র থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সমবায় ব্যাঙ্কগুলি ওই বাতিল নোট জমা নিতে পারবে না। পরে জানানো হয়, সমবায় ব্যাঙ্ক তাদের পুরনো নোট রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেও জমা দিতে পারবে না। এই পরিস্থিতিতে সমবায় ব্যাঙ্কগুলির হাতে চালু নোটের পরিমাণ বেশ কমে গিয়েছে। সমবায় দফতর সূত্রে খবর, মন্ত্রী সেই দিকটিই বোঝাতে চেয়েছেন।
কেন্দ্রের সমালোচনা করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের ব্যাঙ্কে কৃষকের, ক্ষেতমজুরের কষ্ট করে সঞ্চিত অর্থ জমা রয়েছে। এই টাকা কালো টাকা? হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা জারি করে গ্রামীণ অর্থনীতির উপর ভয়ঙ্কর আঘাত আনা হয়ছে। প্রধানমন্ত্রীর তুঘলকি সিদ্ধান্তের ফলে গরিব কৃষক, দিনমজুর অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন।’’ তবে একই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, ‘‘রাজ্য সরকার সবার পাশে রয়েছেন। সবাই তাঁদের সঞ্চিত অর্থ ফেরত পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার পাশে রয়েছেন।’’
এ দিন সকালে জেলা প্রশাসনিক ভবনের পাশে সমবায় ভবনের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই ভবন অনেকদিনের প্রতীক্ষিত ছিল। সমবায়ের সব দফতরগুলি এ বার একছাতার তলায় আসবে।’’ জেলার সমবায় সমূহের নিবন্ধক পিয়ালি মুখোপাধ্যায় (সাহা) জেলা সমবায় দফতর গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে কী ভূমিকা নিয়েছে, কী ভাবে জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নের কাজ করছে তা তুলে ধরেন। পুরুলিয়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সভাপতি কে পি সিংহ দেও বলেন, ‘‘এ দিন ‘সুফলা’ নামে একটি নায্য মূল্যে সব্জি ক্রয়-বিক্রয় কেন্দ্রেরও উদ্বোধন হয়েছে। এই কেন্দ্র থেকে সরকারি দরে মানুষ সব্জি কিনতে পারবেন। সমবায় ভবন গড়তে এক কোটি ২৪ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে এবং সুফলা কেন্দ্রটি গড়তে ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো ও রাজ্য সমবায় ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আশিস চক্রবর্তী। সকালে সমবায় মন্ত্রী, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয় পর্ষদ মন্ত্রী-সহ অনেকেই একটি পদযাত্রায় যোগ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy