Advertisement
E-Paper

গরম কালে কিনেই খেতে হয় জল

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন ওন্দা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা ঘোষ। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার কথা উঠে আসে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। রইল বাছাই কিছু প্রশ্নোত্তর। •ওন্দা গ্রাম স্টেশনের অসম্পূর্ণ ফুটওভার ব্রিজ নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। ওন্দা বাজারের দিক থেকে আসা যাত্রীরা ব্রিজ ধরে স্টেশনে আসতে পারেন। কিন্তু ওন্দা ২ নম্বর অঞ্চলের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেল লাইন পার হন। অনেক সময় লাইনে দাঁড়ানো মালগাড়ির তলা দিয়ে পারাপার হয় শিশু থেকে বৃদ্ধ। ওন্দা ২ অঞ্চলের দিকে ফুট ব্রিজ নির্মাণের কোনও উদ্যোগ হয়েছে কি?

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৫৪
ফুটব্রিজ গিয়েছে অন্য দিকে। ওন্দা গ্রাম স্টেশনে এ ভাবেই চলে ঝুঁকির পারাপার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।

ফুটব্রিজ গিয়েছে অন্য দিকে। ওন্দা গ্রাম স্টেশনে এ ভাবেই চলে ঝুঁকির পারাপার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।

•ওন্দা গ্রাম স্টেশনের অসম্পূর্ণ ফুটওভার ব্রিজ নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। ওন্দা বাজারের দিক থেকে আসা যাত্রীরা ব্রিজ ধরে স্টেশনে আসতে পারেন। কিন্তু ওন্দা ২ নম্বর অঞ্চলের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেল লাইন পার হন। অনেক সময় লাইনে দাঁড়ানো মালগাড়ির তলা দিয়ে পারাপার হয় শিশু থেকে বৃদ্ধ। ওন্দা ২ অঞ্চলের দিকে ফুট ব্রিজ নির্মাণের কোনও উদ্যোগ হয়েছে কি?

দেবু গোস্বামী, কুমারডাঙা

সভাপতি: সমস্যাটি আমাদের অজানা নয়। বেশ কয়েক বার এ নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। মাস খানেক আগেই রেলের আদ্রা ডিভিশনের আধিকারিকেরা ওন্দা গ্রাম স্টেশন পরিদর্শনে এসেছিলেন। আমরা তাঁদের কাছে সমস্যার কথা বলেছি। তাঁরা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন বলে আশ্বাসও দিয়েছেন। সেই মোতাবেক কী করা হয়েছে, তা জানতে শীঘ্রই রেলের আদ্রা ডিভিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে
যোগাযোগ করব।

•বাসস্ট্যান্ডের পিছনে খোলা আকাশের নীচেই বসে ওন্দার সব্জি বাজার। ওই জায়গায় বাজার বসার মতো কোনও পরিকাঠামো নেই। বাম আমলে পাশেই ছাউনি দিয়ে একটি পাকা বাজার গড়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে আজও সেখানে বাজার বসে না। অল্প বৃষ্টিতে গোটা এলাকায় হাঁটু-কাদায় ভরে যায়। বাজারে আসতে ক্রেতারা যেমন সমস্যায় পড়েন তেমনই অসুবিধার মধ্যে পড়েন ব্যবসায়ীরা। বাজার স্থানান্তর কবে হবে?

অসিতবরণ শর্মা, ওন্দা সিনেমারোড

সভাপতি: ওন্দা বাজারের পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। বাজারটি স্থানান্তরিত করতে আমরা পদক্ষেপ করেছি। কিছু জটিলতার জন্য বিষয়টি আটকে রয়েছে। সম্প্রতি বিধায়ক অরূপ খাঁ নিজে এই সমস্যাটি মেটানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছেন। আমরা আশা করছি শীঘ্রই বাজার নিয়ে সমস্যা মিটে যাবে।

•পুনিশোলের বিস্তীর্ণ এলাকা জলকষ্টে ভুগছে। এলাকার বেশির ভাগ নলকূপ খারাপ। সাব মার্সিবল পাম্প আছে এমন বাড়ি থেকে টাকা দিয়ে জল কিনে খেতে হয় অনেককে। পুনিশোল হাইস্কুলেও জলের সমস্যা রয়েছে। সমস্যার কথা শুনে ব্লক দফতর থেকে স্কুলে একটি সাব মার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছিল। কিন্তু তাতেও জল উঠছে না। এই দুর্ভোগ কবে শেষ হবে?

নজরুল ইসলাম খান, পুনিশোল

সভাপতি: পুনিশোলের মাটির অনেক নীচে জলের স্তর রয়েছে। তাই বেশির ভাগ নলকূপ কাজ করছে না। এক মাত্র সমাধান সাব মার্সিবল বসানো। ইতিমধ্যেই আমরা বিভিন্ন এলাকা মিলিয়ে প্রায় দশটি সাব মার্সিবল পাম্প বসিয়েছি। আরও অনেকগুলি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির পাশাপাশি সংখ্যালঘু উন্নয়ন তহবিলের টাকা থেকেও পুনিশোলে সাব মার্সিবল বসানো হচ্ছে। ওই এলাকার জলকষ্ট মেটানোর জন্য অন্য কোনও উপায়ও বের করা যায় কি না, তার জন্য আমরা চিন্তাভাবনা করছি।

•কালীসেন থেকে মুক্তাপুর পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার মোরাম রাস্তা রয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই ট্রাক ও অন্য ভারী যানবাহন চলাচল করে। সারা বছরই রাস্তাটি বেহাল হয়ে থাকে। বর্ষাকালে ভোগান্তি আরও বাড়ে। পঞ্চায়েত মাঝে মধ্যে মোরাম ফেলে গর্ত বোজায়। কয়েক দিনের মধ্যে আবার যেমন-কে-তেমন। রাস্তাটি পাকা করার কোনও পরিকল্পনা
রয়েেছ কি?

স্বপন চক্রবর্তী, সায়ের বাঁকড়া

সভাপতি: আগে পঞ্চায়েত সমিতি রাস্তা গড়ার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প থেকে টাকা পেত। কিন্তু বর্তমানে সেই সব প্রকল্প বন্ধ হয়ে পড়ায় আমাদের অন্য দফতরের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। সম্প্রতি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের টাকায় ব্লকে তিনটি রাস্তা গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। কালীসেন থেকে মুক্তাপুর যাওয়ার রাস্তাটি পাকা করার জন্য ওই গ্রামপঞ্চায়েতের তহবিলের টাকা বরাদ্দ করা যায় কি না সে বিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে
আলোচনা করব।

• নিকুঞ্জপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপরে ২৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ নির্ভর করেন। কিন্তু সেখানে ডাক্তারের অভাব। বাঁকুড়া থেকে এক জন চিকিৎসক আসেন। নির্দিষ্ট সময়ে প্রায়ই তাঁকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে গ্রামবাসীদের প্রায় ১৪ কিলোমিটার ঘুরে ওন্দা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা প্রায় ৩০ কিলমিটার উজিয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যালে যেতে হয়। পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগের পাশাপাশি অন্তর্বিভাগের পরিষেবাও চালু করা দরকার। পঞ্চায়েত সমিতি কি
কিছু ভাবছে?

দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, নিকুঞ্জপুর

সভাপতি: নিকুঞ্জপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সমস্যা নিয়ে বেশ কয়েক বার আমরা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থায়ী ডাক্তার নিয়োগ প্রয়োজন। ইনডোর পরিষেবা চালু করাও দরকার। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠকে আবার এই
দাবিগুলি তুলব।

•ওন্দা ব্লকের কিসান মান্ডিটি গড়া হচ্ছে মাজডিহা এলাকায়। অথচ সাহাপুর, ব্রাহ্মণ়ডিহা, ওলা, নিকুঞ্জপুর, বেলাটুকরি এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি সব্জি চাষ হয়। পাইকারি ক্রেতারা নিকুঞ্জপুর হাটতলা বা ধূমাবতী এলাকায় গিয়ে সব্জি কেনেন। কিসান মান্ডিটি নিকুঞ্জপুর বা ধূমাবতী এলাকার কোথাও গড়লেই বরং ভাল হত। পঞ্চায়েত সমিতি এই বিষয়টি কি ভেবে দেখেছিল?

মদনমোহন শীট, বিক্রমপুর

সভাপতি: মাজডিহার সঙ্গে দুর্গাপুর, আসানসোল, কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল। সব্জি চাষ ওন্দাব্লক জুড়ে হয়। মাজডিহা এলাকায় পুরো ব্লকের চাষিরাই সহজে যাতায়াত করতে পারবেন। পরিবহণ ব্যবস্থাও ভাল। সেই সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে ওই এলাকায় মান্ডি গড়া হয়েছে। যাঁরা এখন জায়গা নির্বাচন ভুল হয়েছে বলছেন, তাঁরা ঠিক বলছেন না। মান্ডি চালু হলে অচিরেই তাঁদের সেই
ভুল ভাঙবে।

•থানা, বাজার, ব্লক অফিস— সবই ওন্দাতে। আমাদের ব্লক শহর ওন্দায় যেতে হলে দ্বারকেশ্বর নদ পার হতে হয়। বছরের প্রায় ছ’মাস নদে জল থাকে। পারাপারে খুব সমস্যা হয়। অবিলম্বে দ্বারকেশ্বর নদের উপরে চাপড়া-গামিদ্যা সেতু বানানো দরকার। দীর্ঘ দিন ধরে এই দাবি তুলে আসছি আমরা। কিন্তু প্রশাসন নড়েচড়ে বসছে না। পঞ্চায়েত সমিতি বিষয়টি নিয়ে
কী করছে?

সত্যকিঙ্কর কর্মকার, পিংরুই

সভাপতি: বিধায়কের তৎপরতায় চাপড়া-গামিদ্যা সেতুর জন্য প্রায় ৩৯ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৫ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। পুজোর ছুটি পড়ে যাওয়ায় টেন্ডার ডাকা সম্ভব হয়নি। তবে শীঘ্রই সেই সমস্ত কাজ সেরে সেতু তৈরিতে হাত দেওয়া হবে। আশা করছি এ বারে ওন্দার বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের এই সমস্যাটি মেটানো সম্ভব হবে।

drinking water problems
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy