ভোট মিটতেই ফের খুল্লমখুল্লা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
ভোটের আগে ও ভোটের ক’দিন পর পর্যন্ত বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মারধর, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠছিল শাসকদলের বিরুদ্ধে। এ বার তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর কর্মীদের মারধর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল দলেরই অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার বাজিতপুর গ্রামের ঘটনা। ভোটগ্রহণ শেষ হতে না হতেই অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগকে ঘিরে তৃণমূলের অন্দরের দ্বন্দ্ব ফের বেআব্রু হয়ে পড়ল ইন্দাসে।
ইন্দাস ব্লকে তৃণমূলের বিদায়ী বিধায়ক গুরুপদ মেটের সঙ্গে ব্লক সভাপতি রবিউল হোসেনের বিরোধ সর্বজনবিদিত। গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে সেই বিরোধের জেরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিক সংঘর্ষ হয়েছে। এমনকী দলের এক যুবকর্মী খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে দলেরই একাংশের।
গুরুপদবাবুর বিরুদ্ধে এ বার দলেরই নেতা (যিনি আগেও তৃণমূলের প্রতীকে বিধানসভা ভোটে লড়েছিলেন) বাসুদেব দিগার ভোটে নেমে পড়েছিলেন। অভিযোগ উঠেছিল, গুরুপদবাবুর বিরোধী শিবিরের সমর্থনেই তিনি ইন্দাস কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। ভোটে দলের ব্লক সভাপতি সশরীরে গুরুপদবাবু পাশে থাকলেও তাঁর শিবিরের অনেক নেতা-কর্মীই ওই নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার চালিয়েছেন বলে বিদায়ী বিধায়কের অনুগামীদের অভিযোগ।
ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হওয়ার পরেই ইন্দাসের বাজিতপুর গ্রামে দুই গোষ্ঠীর লোকজনের ঝগড়া প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। রবিউলের অনুগামী আলম শাহকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাজিতপুর বাজারে গুরুপদর অনুগামীরা মারধর করে বলে অভিযোগ। প্রহৃত আলমকে ইন্দাস ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিউলের অনুগামী তৃণমূল কর্মী হারাধন মাঝির অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আলম তাঁর স্ত্রী-কে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় গুরুপদ গোষ্ঠীর নেতা শেখ বাবলু ওরফে মনিরুদ্দিন শাজাহান দলবল নিয়ে তাঁর উপরে হামলা করে। রাস্তাতেই তাঁকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। তাঁর স্ত্রী-র শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে ওরা।” তাঁর দাবি, তাঁরা রবিউল হোসেনের ঘনিষ্ঠ। তাই তাঁরা নির্দল প্রার্থীর হয়ে ভোট করেছেন, এই অভিযোগ তুলে কয়েকদিন ধরেই মারধরের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ বার সরাসরি হামলা চালানো হল।
অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা মণিরুদ্দিন শাজাহান অভিযোগ করেন, “হারাধন মাঝি, আলম শাহ প্রমুখ এ বার প্রকাশ্যেই ওই নির্দল প্রার্থীর হয়ে ভোটে প্রচার চালিয়েছে। এলাকায় আমাদের দেওয়াল লিখনের উপরে, রাস্তায় দেওয়া পুলিশের ড্রামের গায়েও নির্দল প্রার্থীর পোস্টার সেঁটেছিল ওরা। এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে আমরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। তবে আমি কাউকে মারধর করিনি। শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগও মনগড়া।”
তাঁর পালটা অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দলবল নিয়ে আমাদের পার্টি অফিস দখল করতে এসেছিল শাহ আলম। আমাদের ছেলেরা সেই সময় সামান্য প্রতিরোধ করতেই ওরা পালিয়ে গিয়েছে। শুক্রবার সকালে আলমের বাবা ও স্ত্রী তাঁর কাকা লালন শাহের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে।” তিনি জানান, পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে গুরুপদবাবু বলেন, “হারাধন মাঝি, আলম শাহ-সহ কয়েকজন বাজিতপুর গ্রামে চূড়ান্তি নোংরামি শুরু করেছেন ভোটের আগে থেকেই। দলের কাছে ওঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এ বার বলব।”
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পথচারীদের ভোগান্তি। প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে মানবাজারের দাসপাড়ায় রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ চলছে। এটি শহরের প্রধান রাস্তা। ফলে পথচারী এবং ছোট গাড়ি ঘুরপথে যাতায়াত করছে। বাস, লরি প্রভৃতি চলছে বাইপাস দিয়ে। শহরের ব্যস্ত রাস্তায় দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করার আবেদন জানিয়েছিলেন বাসিন্দাদের একাংশ। নির্মাণকারী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাপপ্রবাহের জন্য এক টানা কাজ করা যাচ্ছে না। ফলে কিছুটা দেরি হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy