আগামী বছরের গোড়াতেই পুরুলিয়া জেলায় চাষিদের কিসান ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ করতে চাইছে কৃষি দফতর।
কী ভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জেলার প্রায় এক লক্ষ ৩৪ হাজার চাষিকে ওই কার্ড দেওয়া যাবে, তার রূপরেখা তৈরি করতে কৃষি দফতর ও ব্যাঙ্কগুলির কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়।
জেলাশাসক জানান, ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারির মধ্যে জেলার চাষিদের হাতে যাতে কিসান ক্রে়ডিট কার্ড দিয়ে দেওয়া যায়, কৃষি দফতরকে সে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে কৃষি দফতর জানাচ্ছে, ব্যাঙ্কগুলির সহযোগিতা পেলে ধার্য করে দেওয়া সময়ের মধ্যেই কিসান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া সম্ভব হবে।
প্রশাসনিক সফরে জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই কিসান ক্রে়ডিট কার্ড তথা কেসিসি নিয়ে বিশদে জানতে চান। তাই মুখ্যমন্ত্রী ফের জেলায় আসার আগে যাতে কেসিসি-র কাজ কিছুটা এগিয়ে নেওয়া যায়, সে জন্য গতি আনার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। তবে কৃষি দফতর জানাচ্ছে, কৃষি সমীক্ষা অনুযায়ী এই জেলায় কিসান ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্য তিন লক্ষ ১৯ হাজার চাষি। তাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই ৫৮ শতাংশ অথাৎ এক লক্ষ ৮৫ হাজার চাষির হাতে কেসিসি তুলে দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে পুজোর সময় প্রায় এক মাস ধরে জেলার প্রতিটি ব্লকে কেসিসি নিয়ে বিশেষ কর্মসূচি শুরু করে কৃষি দফতর।
আধিকারিকেরা শনি, রবিবারে ছুটির দিন তো বটেই, এমনকী পুজোর সময়েও মণ্ডপে গিয়ে কেসিসি নিয়ে প্রচার অভিযান চালান। অনেক পুজো মণ্ডপেই চাষিদের দিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করানোর কাজ করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে কৃষি দফতরের কর্মীরা গ্রামে ফটোকপির মেশিন নিয়ে গিয়ে চাষিদের নথিপত্র নকল করে আবেদনপত্র সংগ্রহ করেন।
জেলার কৃষি অধিকর্তা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত কয়েক মাস ধরে কেসিসি নিয়ে প্রতিটি ব্লকে নিবিড় ভাবে অভিযান চালানো হয়েছে। তাতে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা কঠিন নয়।’’ কৃষি দফতর জানাচ্ছে, বাকি থাকা এক লক্ষ ৩৪ হাজার চাষির মধ্যে এই এক মাসেই বিশেষ কর্মসূচিতে ৫৬ হাজার চাষি কার্ড চেয়ে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে জমা দিয়েছেন। সে সব ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর ও ব্যাঙ্কে বাকি প্রক্রিয়া শেষ করতে পাঠানো হয়েছে।
কৃষি দফতরের কিছু কর্তা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘শুধু আমরা কাজ করলেই হবে না, ভূমি দফতর ও ব্যাঙ্কের আধিকারিক ও কর্মীরা সমান গতিতে এগিয়ে এলে তবেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব।’’ কারণ কৃষি দফতর চাষিদের আবেদনপত্র ব্যাঙ্কগুলির কাছে জমা দেয়। ব্যাঙ্ক সমস্ত নথি খতিয়ে দেখেই কার্ড দেয় চাষিদের।
তবে কিছু ব্যাঙ্ক জানাচ্ছে, অনেক সময় জমি সংক্রান্ত নথি চাষিদের আবেদনের সঙ্গে না থাকায় কেসিসি দেওয়া যায় না। তা মানছেন জেলার কৃষি অধিকর্তা আশিসবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘অনেক চাষিরই জমির মালিকানা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। সেই জটিলতা কাটাতে ভূমি দফতরের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।’’
জেলাশাসক অলকেশ প্রসাদ রায় বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কগুলি কেসিসি দেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে উদ্যোগী হয়, তা বলা হয়েছে। কৃষি দফতরকেও তাদের তরফে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। আমরা চাই আগামী বছরের প্রথম দিকেই যেন জেলার সমস্ত চাষির হাতে কেসিসি পৌঁছে যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy