Advertisement
E-Paper

ভয় রুজি হারানোর, বিক্ষোভ বড়জোড়ার খনিতে

কাজ হারানোর আশঙ্কায় শ্রমিক-বিক্ষোভ হল আর এক খনিতে। বর্ধমানের জামুড়িয়ার চুরুলিয়ার পরে এ বার বড়জোড়ার ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশন’-এর (ডব্লিউএমডিটিসি) কোলিয়ারিতে গেট আটকে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিক-কর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৫৬

কাজ হারানোর আশঙ্কায় শ্রমিক-বিক্ষোভ হল আর এক খনিতে। বর্ধমানের জামুড়িয়ার চুরুলিয়ার পরে এ বার বড়জোড়ার ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশন’-এর (ডব্লিউএমডিটিসি) কোলিয়ারিতে গেট আটকে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিক-কর্মীরা।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের কয়লা ব্লকগুলিতে কয়লা তোলায় নিযুক্ত ঠিকা সংস্থাগুলির কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে ৩১ মার্চ। এর পরে যে সংস্থা বরাত পাবে তারা তাঁদের কাজে রাখবে কি না, সে নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন ওই সব খনির শ্রমিকেরা। চুরুলিয়ায় রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের (পিডিসিএল) অধীনে থাকা তারা কোলিয়ারিতে এত দিন কয়লা তোলার দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থা বেঙ্গল এমটার আধিকারিককে মঙ্গলবার দুপুর থেকে রাত পর্য়ন্ত ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান শ্রমিক-কর্মীরা। শেষে পিডিসিএল-এর তিন অফিসার গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে সমস্যা মেটে।

একই ঘটনা ঘটেছে বড়জোড়ায়। ওই ব্লকের প্রায় ন’টি মৌজার উপরে ডব্লিউএমডিটিসি কোলিয়ারিতে এত দিন কয়লা তোলার দায়িত্বে ছিল ট্রান্স দামোদর কোল মাইনিং প্রজেক্ট। সেখানে এ বার দায়িত্ব পেল দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল)। নতুন সংস্থা তাঁদের কাজে রাখবে কি না, সে আশঙ্কায় ভুগছেন কোলিয়ারির শ্রমিকেরা। তাঁদের অনেকেই আবার জমির বিনিময়ে চাকরি পেয়েছিলেন। এই সব শ্রমিককে চাকরিতে বহাল রাখার দাবিতে বুধবার কোলিয়ারির গেট আটকে বিক্ষোভ দেখায় সিটু, আইএনটিটিইউসি এবং বিএমএস— এই তিন শ্রমিক সংগঠন।

সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা কমিটির সদস্য সুজয় চৌধুরী বলেন, “এই কোলিয়ারিতে ৪৬৭ জন স্থায়ী শ্রমিক কাজ করতেন। তাঁদের মধ্যে ২৬০ জন কোলিয়ারির জন্য জমি দিয়েছেন। নতুন করে কয়লা উত্তোলনের লিজ পাওয়া সংস্থা এই কর্মীদের কাজে পুনর্নিয়োগ করবে কিনা তা সঠিক ভাবে জানাচ্ছে না। তাই আমরা আন্দোলনে নেমেছি।’’ আন্দোলনে সামিল শ্রমিকদের মধ্যে বড়জোড়ার পাহাড়পুরের সন্দীপ পোবি, কৃষ্ণনগরের বিশ্বজিৎ বারিকরা বলেন, “আমরা কোলিয়ারিতে জমি দিয়ে চাকরি পেয়েছি। এখন এই চাকরিই আমাদের ভরসা। নতুন সংস্থা যদি আমাদের ছাঁটাই করে, তা হলে সংসার নিয়ে পথে বসতে হবে।’’

এ দিনই কোলিয়ারি দেখতে এসেছিল ডিপিএলের একটি প্রতিনিধি দল। বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন থেকে সরাতে বৈঠকে বসেন বড়জোড়ার বিডিও ইস্তেয়াক আহমেদ খান, জেলা পুলিশের ডিএসপি (প্রশাসন) আনন্দ সরকার এবং ডিপিএলের প্রতিনিধিরা। বিডিও পরে বলেন, “কোল ব্লক বণ্টনের চুক্তিতে পুরনো শ্রমিকদের কাজে নিতে হবে বলে কোনও শর্ত আছে কি না, আমার জানা নেই। জেলাশাসককে আমি আন্দোলনকারীদের দাবি জানাব।’’

চুরুলিয়ার খনিতে বেঙ্গল এমটার মেয়াদ ফুরিয়েছে মঙ্গলবারই। সংস্থার ডিরেক্টর নিমাইচন্দ্র মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘আমরা ফের বরাত না পেলে এখান থেকে আর কয়লা তুলতে পারব না। তাই কয়লা তুলছি না, সরবরাহও করছি না। তবে খনি লাগোয়া গ্রামগুলিতে এত দিন যে সব সামাজিক দায়িত্ব পালনের কাজ করেছি, নতুন ঠিকা সংস্থা নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তা করে যাব।’’ তিনি জানান, পিডিসিএল একটি আলাদা হাজিরা খাতা তৈরি করে এই খনিতে কর্মরত শ্রমিকদের প্রতি দিনের হাজিরা শুরু হয়েছে। বুধবার ওই খনিতে এসেছিলেন শ্রমিক-কর্মীরা। হাজিরাও দেন। তবে কোনও কাজ হয়নি। কাজ থাকবে কি না, সে নিয়ে শ্রমিকেরা এখনও আতঙ্কে। রাজ্যের এক বিদ্যুৎ কর্তা অবশ্য জানান, ওই কোলিয়ারির দায়িত্ব এখন পিডিসিএলের। তাই তাদেরই শ্রমিকদের দেখভাল করার কথা। শাজাহান শেখ নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘‘খনিতে আবার উৎপাদন শুরু হলে বেঁচে যাই।’’

Coal mine Jamuria Asansol Borjora Durgapur Supreme court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy