Advertisement
E-Paper

ঘরে ফেরা শ্রমিকদের সাহায্যে ধন্দ জেলায়

গত ডিসেম্বরে রাজস্থানে মালদহের শ্রমিক আফরাজুল খানকে কুপিয়ে, পুড়িয়ে খুন করা হয়। তার কয়েক দিন পরে কাজের খোঁজে কেরলের আলাপুঝা জেলায় কাজের খোঁজে যাওয়া বাঁকুড়ার ইন্দাসের রোল গ্রামের এক যুবকের নলি-কাটা দেহ উদ্ধার করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:১৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ভিন্‌রাজ্যে কাজের খোঁজে যাওয়া শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরে সাহায্যের আবেদন করছেন জেলাশাসকের কাছে— বীরভূমেও তেমন আবেদনপত্রের সংখ্যা প্রচুর। এ নিয়ে কী করা যায়, তা ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে।

ভাবনার পিছনে অবশ্য কারণ রয়েছে। জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা প্রকাশ্যে এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁদের কয়েক জন জানিয়েছেন— ‘কী ভাবে আবেদন করতে হবে, কী কী তথ্য দিতে হবে, তার কোনও নির্দিষ্ট গাইডলাইন নেই। কোন প্রকল্পে টাকা মিলবে, সে বিষয়েও কোনও সরকারি নির্দেশিকা আসেনি। যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের কী জবাব দেবে প্রশাসন।’ প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ওই সব আবেদন জমা পড়ছে। তাই তা না নিয়েও উপায় নেই।’’

গত ডিসেম্বরে রাজস্থানে মালদহের শ্রমিক আফরাজুল খানকে কুপিয়ে, পুড়িয়ে খুন করা হয়। তার কয়েক দিন পরে কাজের খোঁজে কেরলের আলাপুঝা জেলায় কাজের খোঁজে যাওয়া বাঁকুড়ার ইন্দাসের রোল গ্রামের এক যুবকের নলি-কাটা দেহ উদ্ধার করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে ভিন্‌রাজ্য কাজের খোঁজে যাওয়া শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরলে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকাশ্য সভায় তিনি বলেন— ‘‘যদি এমন ঘটতে থাকে, তা হলে বাইরে কাজ করতে যাওয়ার দরকার নেই। কেউ রাজ্যে ফিরে আসলে, সংশ্লিষ্ট জেলার ডিএম দফতরে নাম লেখাবেন। আমরা ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্য করতে পারব।’’

একই রকম ঘোষণা ছিল নোট-বাতিলের জেরে কাজ হারানো শ্রমিকদের জন্যও। তাঁদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন সমর্থন প্রকল্পের। ঠিক কত জন শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন, তার সঠিক তথ্য দিতে না পারলেও রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, ৫০ হাজার কর্মহীন শ্রমিক রাজ্যে ফিরেছেন। প্রশাসন জানায়, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান (অ-বিভাজিত), বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, হাওড়া, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো ১০টি জেলার কর্মহীন শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ২৫০ কোটি টাকা। কত লোক কাজ খুইয়ে বাড়ি ফিরেছেন, সমর্থন প্রকল্প মানুষের কতটা উপকারে লেগেছে— তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। গত বুধবার বিধানসভায় পেশ হওয়া বাজেটে এই প্রকল্পের যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে, তাতেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে। বিরোধী নেতাদের একাংশ মনে করছেন, ওই প্রকল্পে খুব বেশি সাড়া মেলেনি।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭ সালের মার্চ থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ১৫ হাজার ৬১৮ জন ওই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন। রাজ্যের খরচ হয়েছে ৭৮ কোটি ৯ লক্ষ টাকা। বীরভূমের ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য প্রাপকের সংখ্যা ৪২৭ জন। হাজার হাজার আবেদনপত্রের মধ্যে শ্রম দফতর ৪৩৪ জনকে সমর্থন প্রকল্পের জন্য চিহ্নিত করলেও, টাকা দিতে গিয়ে ৭ জনের হদিসই মেলেনি।

প্রশাসনিক কর্তাদের একাশের বক্তব্য, সমর্থন প্রকল্পের জন্য অর্থবরাদ্দ করার পাশাপাশি কী ভাবে আবেদন করতে হবে, তার সুস্পষ্ট গাইডলাইন ছিল। তৈরি হয়েছিল কমিটি। কিন্তু যে সব শ্রমিক ভিন্‌রাজ্য থেকে ফিরে আবেদন করছেন, তাঁদের জন্য এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি। সমর্থন প্রকল্প থেকেই টাকা দেওয়া হবে, না কী অন্য কোনও নির্দেশ আসে— তা নিয়েই চিন্তায় প্রশাসন।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাই নির্দেশিকা। যাঁরা আবেদন করছেন করুন। সরকারি ভাবে নির্দেশ এলে আবেদনকারী কোথায় কাজে গিয়েছিলেন, সত্যিই গিয়েছিলেন কি না, তা যাচাই করেই সাহায্য দেওয়া হবে।’’

Crime Murder Labour শ্রমিক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy