গোটা ব্লকের কোনও পঞ্চায়েতেই ক্ষমতায় নেই বিরোধীরা। পঞ্চায়েত সমিতিতেও তাদের অস্তিত্ব নেই। গোটা ব্লকে দু’টি জেলা পরিষদের আসনের মধ্যে একটি আসন পেয়ে কোনও রকমে নিজেদের উপস্থিতি ধরে রেখেছে বামেরা। আশ্বাস শুধু এটুকুই, বিধায়ক সিপিএমের। অথচ সেই তালড্যাংরা ব্লকেরই সমবায় সমিতির ভোটে জয় পেলেন বাম সমর্থিত প্রার্থীরা। তাও আবার ১৫টি আসন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় হারার পরে! এই ঘটনা নজর কেড়েছে রাজনীতিবিদদের।
তালড্যাংরা আদিবাসী লার্জ সাইজ মাল্টিপারপাজ কো-অপারেটিভ সোসাইটি বা ল্যাম্পস-এর ডিরেক্টর বোর্ডের প্রতিনিধি নির্বাচন হয়েছে রবিবার। বামেরা প্রার্থী দিতে না পারায় সমিতির ৪৪টি আসনের মধ্যে ১৫টিতে আগে থেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে বসেছিলেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। রবিবার বাকি ২৯টি আসনে ভোট দেন ২ হাজার ১৭২ জন সদস্য। ফল প্রকাশের পরে দেখা যায়, ২৫টি আসনে জয় পেয়েছেন বাম সমর্থিত প্রগতিশীল প্রার্থীরা। মাত্র চারটি আসনে জেতেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা।
কিন্তু, শাসকদলের এ হেন পরাজয়ের কারণ কী?
সামনে থেকে এই ভোটে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তালড্যাংরা ব্লকের যুব তৃণমূল নেতা তারাশঙ্কর রায় ওরফে শঙ্কু। তাঁর দাবি, “বাম নেতারা তাঁদের পরিবারের লোকজনদের এই সমবায়ের সদস্য করে রেখেছেন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ওঁরা ভোটে তাঁদের সমর্থন পেয়েছেন।” যদিও তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, হারের অন্যতম কারণ দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও। যুব তৃণমূলের একটা অংশ এই ভোটে এগিয়ে আসায় তৃণমূলের একাধিক নেতাই ভোটে সে ভাবে গা লাগাননি। এক যুব নেতার দাবি, “আমাদের দলের কিছু নেতা ভোটে তো অংশই নেননি, উল্টে আমাদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দিতে সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করেছেন।”
শঙ্কুকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর মাপা উত্তর, “এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু বলব না। যা জানানোর দলকে জানাবো।” দলের দ্বন্দ্বের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে তালড্যাংরা ব্লক তৃণমূলের সম্পাদক মনসারাম লায়েকের বক্তব্যেও। তিনি বলেন, “ব্লক তৃণমূল এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। সমবায় সমিতি একটি অরাজনৈতিক সংস্থা। সেখানে রাজনীতির রং লাগানোর ইচ্ছে আমাদের ছিল না। তাই ওই ভোট নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ-ও এই নির্বাচনকে অরাজনৈতিক বলে দাবি করেছেন।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুনীল হাঁসদা বলেন, “এই সমবায় সমিতি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করার হুমকি দিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু মানুষ ওদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছে! আসন্ন বিধানসভায় আরও বড় ভরাডুবির জন্য তৈরি থাকুক ওরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy