Advertisement
০৪ মে ২০২৪
ফোন নম্বর বিলি মন্ত্রীর

ভাতা কবে পাব, প্রশ্ন বিধায়ককে

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের এলাকায় গিয়ে রাত্রিবাসের কথা বললেও বিধায়ক এ দিন অবশ্য ওই গ্রামে রাত কাটাননি। কেন?

খেলাচ্ছলে: কন্ডড়ো গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে ক্যারমে মজেছেন বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীব সোরেন। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো

খেলাচ্ছলে: কন্ডড়ো গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে ক্যারমে মজেছেন বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীব সোরেন। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোরো শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৪৩
Share: Save:

দলনেত্রীর নির্দেশে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রথম দিনেই একগুচ্ছ অভাব-অভিযোগের মুখে পড়তে হল পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেন ও মানবাজার ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি হংসেশ্বর মাহাতোকে। শুক্রবার বিকেলে তাঁরা বোরো-জারাগোড়া পঞ্চায়েতের কন্ডড়ো গ্রামে যান। সেখানেই তাঁরা আবাস যোজনা, শিল্পী ভাতা, বার্ধক্যভাতা নিয়ে বঞ্চনার অভিযোগ শোনেন। পানীয় জলের সমস্যার কথাও তুলে ধরেন বাসিন্দারা।

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের এলাকায় গিয়ে রাত্রিবাসের কথা বললেও বিধায়ক এ দিন অবশ্য ওই গ্রামে রাত কাটাননি। কেন? তাঁর দাবি, ‘‘এ দিন রাতে থাকার কর্মসূচি ছিল না। তবে অন্য দিন অন্য গ্রামে রাতে থাকব।’’

আদিবাসী প্রধানত এই গ্রামে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলেরই। তবে লোকসভা ভোটে বান্দোয়ান বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকে এই গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ পেয়েই এ দিন বিধায়ক ও ব্লক তৃণমূল সভাপতি গিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চন্দ্রশেখর দাস, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিকাশচন্দ্র মাহাতো প্রমুখ।

প্রথমেই তাঁরা গ্রামের উপরপাড়ায় একটি আটচালায় যান। তাঁদের দেখে গ্রামবাসী জড়ো হন। এলাকায় কী সমস্যা রয়েছে তা জানতে চান নেতারা। মঞ্জুরা হেমব্রম নামে এক যুবতী হংসেশ্বরবাবুকে বলেন, ‘‘অনেক বছর ধরে আমরা পাতানাচ করে আসছি। আমাদের দলের বেশ কয়েকজন শিল্পীভাতা পেলেও নথিপত্র জমা করেও আমার নাম তালিকায় ওঠেনি।’’ হংসেশ্বরবাবু বলেন, ‘‘নতুন করে নাম চাওয়া হলে নিশ্চয় দেখা হবে।’’

এগিয়ে যান মাঝপাড়ায়। সেখানে বয়স ৬৫ হলেও বিধবা ভাতা পাচ্ছেন না বলে দাবি করেন লক্ষ্মী সিংবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আবেদনপত্র পূরণ করেও ভাতা পাচ্ছি না। সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’’ বিধায়কের সঙ্গীরা তাঁদের নামধাম লিখে রাখছিলেন।

ওই গ্রামে জলের পাইপলাইন এলেও তা রয়েছে একেবারে শেষপ্রান্তে। টিউবওয়েলও রয়েছে গ্রামে ঢোকার মুখে উপরপাড়ায়। মাঝপাড়ার মধ্যবয়সি বাসিন্দা বসন্ত মান্ডি সে কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘ওই দু’টি ছাড়া গোটা একটিও ভাল জলের ব্যবস্থা নেই। মাঝপাড়ার টিউবওয়েল দীর্ঘদিন ধরে খারাপ হয়ে রয়েছে। কিছু একটা করুন।’’ আবেদন করেও সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাননি বলে অভিযোগ করেন সরস্বতী মান্ডি। নীচপাড়াতে বয়স্ক ভাতার দাবি জানিয়েছেন সুরেন্দ্রনাথ মান্ডি।

হংসেশ্বরবাবু জানান, ওই এলাকার মানুষজনেরা অনেকেই ফোন নেই বলে তাঁদের জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের বলেছি, সমস্যার কথা দিদিকে বলো-র নম্বরে জানাতে দরকারে আমাদের অফিসে এসেও ফোন করতে পারবেন।’’

অভাব অভিযোগ শোনার ফাঁকেই গ্রামের ছেলেপুলেদের সঙ্গে কিছুক্ষণ ক্যারাম খেলেন নেতারা। যুবকদের সমস্যা কী তাও খোঁজ নেন। ঘণ্টাখানেক কাটিয়ে ফেরার পথে গ্রামের নামোপাড়ায় দলীয় পতাকা তোলেন হংসেশ্বরবাবু। বিধায়ক বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষকদের কথা শুনেছি। তাঁদের সমস্যা কী ভাবে মেটানো যায়, প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’

এ দিন মানবাজার পোস্টঅফিস মোড়ে এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তাঁদের হাতে দিদিকে বলো-র ফোন নম্বর নম্বর তুলে দেন। পথচারীদের ডেকে তাঁদের মন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনাদের কোনও রকম সমস্যা থাকলেও ওই নম্বরে ফোন করে জানাতে পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Banduan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE