মিনিট চল্লিশের বক্তব্যের অনেকটাই জুড়ে ছিল আদিবাসীদের উন্নয়নে রাজ্যের ভূমিকার কথা। তাঁদের পাশে থাকার বার্তা। পুরুলিয়ার কাশীপুর ও মানবাজার বিধানসভার মাঝামাঝি এলাকায়, হুড়ার লধুড়কায় সভা করে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কাশীপুর ও মানবাজার বিধানসভায় অনেক আদিবাসী ভোট রয়েছে। মানবাজার বিধানসভা আসনটি তফসিলি উপজাতির জন্য সংরক্ষিত। ভোটের আগে জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বারেবারে বলেছেন জাহের থানের পাট্টা দেওয়া, পাঁচিল গড়া, আদিবাসী উন্নয়ন বোর্ড তৈরির মতো বিষয়গুলি। বলেছেন, ‘‘রাজনীতি আর ধর্মটা আলাদা। আমি কাকে গুরু মানব, আমি ঠিক করব। তুমি ঠিক করবে না। আমার মারাংবুরুর জায়গায় তোমার দেবতা আমি কেন মানব? আমি আমার দেবতা মানব।’’
বুধবার দুপুর দু’টোয় হুড়ার চন্ডেশ্বর শিবমন্দিরের মাঠে পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাতোর সমর্থনে সভা করেছন মমতা। আদিবাসী মানুষজনের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মুখ্যমন্ত্রীর আগে বক্তৃতা করেছেন রাজ্যের আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী তথা মানবাজারের বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু। সাঁওতালিতে। ভাষণের শুরুতে উপস্থিত মমতাও জনতাকে সম্বোধন করেন সাঁওতালিতে। হাততালি ঝড় ওঠে। গোড়াতেই তিনি বলেন, ‘‘আপনারা সব সময় মনে রাখবেন, আমরা সব সময়ে আপনাদের
পাশে আছি।’’
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে রুখা পুরুলিয়ায় জলের সঙ্কট মেটাতে রাজ্য সরকারের ভূমিকার কথা শোনা গিয়েছে। জানিয়েছেন, বারোশো কোটি টাকা খরচ করে জাপানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে জাইকা জল প্রকল্প গড়ার কাজ চলছে।
দাবি করেছেন, পুরুলিয়ায় রাস্তা তৈরির জন্য রাজ্য বরাদ্দ করেছে সাতশো কোটি টাকা। গড়েছে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, আইটিআই, পলিটেকনিক। বলেছেন, ‘‘দু’টাকা কিলো চাল যেমন দিই সাড়ে আট কোটি মানুষকে, সাড়ে সাত কোটি মেয়েকে স্বাস্থ্যসাথী স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে। সেটা দিয়ে পরিবারের সবাই বছরে পাঁচ লক্ষ টাকা করে প্রাইভেটে চিকিৎসা করাতে পারবেন। মহিলা গার্জেনদের নামে কার্ডটা হবে।’’
মমতার কথায় এসেছে আদিবাসীদের জমির অধিকার প্রসঙ্গ। দাবি করেছেন, জঙ্গলের অধিকার যাতে আদিবাসীদের হাতেই থাকে সেই বিষয়ে চিরকাল আন্দোলন করেছেন তিনি। বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ড। সেখানে বিজেপির সরকার। যাদের অনেক টাকা আছে তারা আদিবাসীদের জমি দখল করেছিল। আমরা আইন করে বললাম, এই রাজ্যে আদিবাসীদের জমির উপরে তাদের অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকবে।” বলেছেন, ‘‘ট্রাইবাল ডিপার্টমেন্টকে নতুন করে গড়ে তোলা হয়েছে। সেটা আমি নিজে দেখি যাতে আদিবাসী ভাই বোনেরা কোনও সমস্যায় না পড়েন।”
তবে বিজেপির আদিবাসী নেতা তথা পুরুলিয়ায় দলের সাধারণ সম্পাদক কমলাকান্ত হাঁসদা কটাক্ষ করে বলছেন, ‘‘তৃণমূলের আমলে আদিবাসীদের দুর্দশা আরও বেড়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান— কোনওটাই করতে পারেনি তৃণমূলের সরকার। পঞ্চায়েত নির্বাচনেই জেলার আদিবাসী সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ তৃণমূলের থেকে সরে এসেছেন। তার ধারাবাহিকতা লোকসভাতেও বজায় থাকবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy