Advertisement
E-Paper

তৃতীয় পরীক্ষার পরে রাইটার পেল রহিমা

ছোটবেলা থেকেই ৮০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে পড়াশোনা করেছে মেয়ে। অথচ প্রাপ্য ‘রাইটার’ পেল মাধ্যমিকে তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার পরে!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫০

ছোটবেলা থেকেই ৮০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে পড়াশোনা করেছে মেয়ে। অথচ প্রাপ্য ‘রাইটার’ পেল মাধ্যমিকে তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার পরে!

রহিমা খাতুন নামে পাড়ুই থানার বিষ্ণুখণ্ডার বাসিন্দা ওই পড়ুয়ার ঘটনায় প্রশ্নের মুখে তার স্কুল যাদবপুর বান্ধব উচ্চবিদ্যালয়। রহিমার মাধ্যমিকের আসন পড়েছে বোলপুরের শ্রীনন্দা হাইস্কুলে। সেখানে রহিমাকে অতি কষ্ট করে উত্তর লিখতে দেখে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নমিনি তথা রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা মিশন এবং কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবার থেকে রাইটার নিয়ে পরীক্ষায় বসবে রহিমা। পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আবেদন খতিয়ে দেখে নিয়ম নীতি মেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাইটারের মাধ্যমেই মেয়েটি পরীক্ষা দেবে।”

পরিবার সূত্রের খবর, খুবই অভাবী পরিবারের মেয়ে রহিমা। তাঁর বাবা রহিম শেখ চোখে কম দেখেন। পাঁচ সদস্যের পরিবারের হাল ধরতে রহিমার দাদা চেন্নাইয়ে একটি কারখানায় কাজ করেন। বোন সুরাইয়া একই স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। মা বাড়িতে বিড়ি বাঁধেন। এমন একটি পরিবারের মেয়ে রহিমা জন্ম থেকেই ৮০ শতাংশ প্রতিবন্ধী। তার হাত ও পায়ের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু, সেই হিসেবে পরীক্ষায় তার জন্য রাইটার এবং অতিরিক্ত সময় প্রাপ্য, সে তথ্য জানাই ছিল না পরিবারের। এমনকী, তার স্কুলও এ ব্যাপারে কোনও তৎপরতা দেখায়নি বলে অভিযোগ। রবিবার রহিমা বলে, ‘‘লেখাপড়ার ইচ্ছে থাকলেও এই প্রতিবন্ধকতার কারণে অনেক সমস্যা হয়। গত তিন দিন খুব কষ্ট করে পরীক্ষা দিয়েছি। হয়তো রাইটার বা অতিরিক্ত সময় পেলে পরীক্ষা আরও ভাল হতো।’’ তারা প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। এমন কোনও অধিকারের কথা কোনও দিনও জানতে বলে জানায় রহিমা।

ওই পরীক্ষার্থীকে খুব কষ্ট করে উত্তর লেখার ঘটনাটি প্রথমে নজরে আসে বোলপুরের শ্রীনন্দা স্কুলে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাওয়া মধ্য শিক্ষা পর্ষদের নমিনি তথা রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা মিশনের। সংশ্লিষ্ট সদস্য (তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতিও) প্রলয় নায়েক বলেন, ‘‘প্রথম দিন বাংলা পরীক্ষার সময় রহিমার ওই অবস্থার কথা আমরা জানতে পারি। তার পরে সংশ্লিষ্ট সব স্তরে কথা বলি। পর্ষদের অনুমতি পেতে রহিমাকে দিয়ে আবেদন পাঠানো হয়।’’ প্রয়োজনীয় অনুমতি মেলার পরে রহিমার স্কুলেরই নবম শ্রেণির ছাত্র রকিবুল মোল্লাকে তার রাইটার করা হয়েছে। প্রলয়বাবুর ক্ষোভ, ‘‘এই ঘটনায় রহিমার স্কুল নিজের দায় এড়াতে পারেনা। ওর ক্ষেত্রে স্কুলের শিক্ষকদের এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের আরও সংবেদনশীল হওয়া উচিত ছিল।’’ অভিযুক্ত যাদবপুর বান্ধব উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌরাঙ্গ সাহার সঙ্গে অবশ্য এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি।

রহিমার পাশে দাঁড়াতে ইতিমধ্যেই এগিয়ে এসেছে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন। রহিমার পরীক্ষা কেন্দ্র শ্রীনন্দা হাইস্কুলের শিক্ষক তথা সংগঠনের বোলপুর ব্লক সভাপতি উজ্জলকুমার সাহা জানান, ওই ছাত্রীর পঠনপাঠনের যাবতীয় খরচ সংগঠন বহন করবে। খুশি রহিমা ও তার পরিবার।

Madhyamik Examination Madhya Shiksha Parsad Writer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy