E-Paper

শিক্ষক গেলে পড়াবেন কারা, চিন্তায় নানা স্কুল

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে গাজ়িয়াবাদ থেকে ৯৫২ জনের উত্তরপত্র (ওএমআরশিট) উদ্ধার করেছিল সিবিআই। দেখা গিয়েছিল, সেগুলি ২০১৬ সালে এসএসসির নবম-দশম শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:২০
A Photograph of students in a classroom

গ্রামীণ এলাকার স্কুল থেকে এক জন শিক্ষক চলে গেলেও ক্ষতি আদতে পড়ুয়াদের। প্রতীকী ছবি।

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে সোমবার নবম-দশমের ৬১৮ জন শিক্ষকের সুপারিশপত্র বাতিল করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। ওই শিক্ষকদের ওএমআর শিট ‘বিকৃত’ করা হয়েছে বলে মেনে নিয়েছে এসএসসি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ তাঁদের নিয়োগপত্র বাতিল করবে বলে জানিয়েছে। গ্রুপ-ডি র মতো এই এই ৬১৮ জনের তালিকাতেও বেশ কিছু সংখ্যক শিক্ষক রয়েছেন বীরভূমের।

জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে গাজ়িয়াবাদ থেকে ৯৫২ জনের উত্তরপত্র (ওএমআরশিট) উদ্ধার করেছিল সিবিআই। দেখা গিয়েছিল, সেগুলি ২০১৬ সালে এসএসসির নবম-দশম শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীদের। ওই উত্তরপত্রে প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে সার্ভারের ব্যাপক ফারাক ছিল। প্রাথমিক ভাবে দেখা গিয়েছিল সেই তালিকায় বীরভূমে ৩৮ জন শিক্ষকের নাম ছিল। সেই সব শিক্ষকের নথি যাচাই করা হয়। তবে ওই ৯৫২ জনের মধ্যে ৮০৫ জনের ওএমআর শিট খতিয়ে দেখে বিকৃত করা হয়েছে আদালতে মেনে নেয় এসএসসি।

কিন্তু, প্রথম ধাপে যে ৬১৮ জনের সুপারিশপ্র বাতিলের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে এই জেলার কত জন শিক্ষকের নাম রয়েছে, স্পষ্ট নয়। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) চন্দ্রশেখর জাউলিয়া জানান, সোমবার রাতে নিয়োগ বাতিলের চিঠি এসেছে। কিন্তু, সব জেলার নাম এক সঙ্গে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার ছুটি থাকায় সেটা খতিয়ে দেখা হয়নি। আজ, বুধবার অফিস খুললে বোঝা যাবে জেলায় এমন শিক্ষকের সংখ্যা কত।

সূত্রের খবর, বীরভূমের যে ৩৮ জন শিক্ষকের নথি পুনরায় যাচাই (ভেরিফিকেশন) হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে বাংলার দুই শিক্ষকের নাম এসএসসি-র ৬১৮ জনের তালিকায় রয়েছে। ওই দুই শিক্ষক খয়রাশোলের দু’টি পৃথক স্কুলে কর্মরত। তালিকা প্রকাশের আগে থেকেই পরিস্থিতি আঁচ করে তাঁরা স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে ওই দু’টি স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে।

সেই দুই স্কুলের একটির প্রধান শিক্ষক সুমিত কুমার মাল বলেন, ‘‘আমার স্কুলের বাংলা শিক্ষকের নাম তালিকায় নাম আছে শুনেছি। যদিও জেলা স্কুল পরিদর্শক বা মধ্যশিক্ষা পর্যদের তরফে কোনও নির্দেশ আমার কাছে আসেনি। তবে ওই শিক্ষক শনিবারের পরে আর স্কুলে আসেননি।’’ খয়রাশোলের অপর স্কুলের টিচার ইন চার্জ শেখ বদরুল আলি বলেন, ‘‘আমার স্কুলের ওই বাংলা শিক্ষক শুক্রবারের পর থেকে আর স্কুলে আসেননি।’’

খয়রাশোলের এই স্কুলের বাংলার এক শিক্ষিকার নামও ৮০৫ জনের মধ্যে রয়েছে। পরের ধাপে সুপারিশপত্র বাতিল করার তালিকায় তাঁর নাম থাকলে স্কুলকে বিপাকে পড়তে হবে বলে মত বদরুল আলির। তাঁর কথায়, ‘‘এগারোশোর বেশি পড়ুয়া। মোট ১৫ জন শিক্ষক ছিলেন। এক জন ইতিমধ্যেই বাদ। পরে যদি শিক্ষিকাও চলে যান, তা হলে স্কুলে বাংলা পড়ানোর (বিশেষত উচ্চ মাধ্যমিকে) কেউ থাকবেন না।’’ একই অবস্থা অন্য স্কুলটির। প্রধান শিক্ষক সুমিত কুমার মাল বলছেন, ‘‘কারণ যাই হোক, গ্রামীণ এলাকার স্কুল থেকে এক জন শিক্ষক চলে গেলেও ক্ষতি আদতে পড়ুয়াদের।’’ তাঁর স্কুলে ১২০০ পড়ুয়ার জন্য ১২ জন শিক্ষক। এখন ১১ জন হলেন বলে তিনি জানান।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

SSC recruitment scam Teacher Crisis Birbhum

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy