Advertisement
E-Paper

মিড-ডে মিলে ফল দেওয়া শুরু, প্রশ্ন বরাদ্দ নিয়ে

এ দিন সিউড়ির ওই স্কুলে মিড-ডে মিলের আওতায় থাকা পড়ুয়াদের প্রত্যেককে একটি করে আপেল ও কমলালেবু তুলে দেওয়া হল। 

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩০
কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশনের এক ছাত্রীর হাতে ফল তুলে দিচ্ছেন জেলাশাসক বিধান রায়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশনের এক ছাত্রীর হাতে ফল তুলে দিচ্ছেন জেলাশাসক বিধান রায়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

মিড ডে মিলের বরাদ্দে চার মাস প্রতি সপ্তাহে পুষ্টিকর খাবার হিসেবে মুরগির মাংস এবং ফল খাওয়ানোর সরকারি নির্দেশিকায় কপালে ভাঁজ শিক্ষক মহলে। কারণ হিসেবে শিক্ষকদের ব্যাখ্যা, কিছুদিন আগে পড়ুয়া পিছু মিড-ডে মিলের রান্নার খরচ ৯.৬ শতাংশ বাড়ানো হলেও তা যথেষ্ট নয়। তবে এর মধ্যেই বুধবার থেকে সেই নির্দেশ পালন শুরু করল সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশন।

এ দিন সিউড়ির ওই স্কুলে মিড-ডে মিলের আওতায় থাকা পড়ুয়াদের প্রত্যেককে একটি করে আপেল ও কমলালেবু তুলে দেওয়া হল। এ দিন মিড-ডে মিলের সময় স্কুলে উপস্থিত থেকে কয়েকজন পড়ুয়ার হাতে ফল তুলে দেন জেলাশাসক বিধান রায়। সঙ্গী ছিলেন বিডিও (সিউড়ি ১) শিবাশিস সরকারও। জেলাশাসক বলেন, ‘‘গোটা জেলার সব প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে (অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) বাড়ন্ত বাচ্চাদের অতিরিক্ত পুষ্টি জোগাতে এই কর্মসূচি চলবে। জেলার একটি ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কড়িধ্যা যদুরায় স্কুল থেকেই প্রতীকীভাবে সেটা শুরু হল।’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল ১৬ সপ্তাহ পড়ুয়াদের মিড ডে মিলে অতিরিক্ত পুষ্টি জোগাতে রাজ্য সরকারের স্কুলশিক্ষা দফতর ৩৭১ কোটি অতিরিক্ত তহবিল দিয়েছে মিড-ডে মিল প্রকল্পে। হিসেব কষলে দেখা যাচ্ছে, প্রতি পড়ুয়ার জন্য সপ্তাহ অতিরিক্ত ২০ টাকা করে বরাদ্দ বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু ওই টাকায় নিয়ম মতো খাবার জোগানো সম্ভব কি না প্রশ্ন উঠেছে।

প্রাথমিক স্কুলে প্রতি পড়ুয়ার (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি) মিড-ডে মিলে বরাদ্দ ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) ক্ষেত্রে মাথাপিছু উচ্চ প্রাথমিকে বরাদ্দ বেড়ে ৮ টাকা ১৭ পয়সা হয়েছে। কম পড়ুয়া হলে সপ্তাহে একদিন ডিম পড়ুয়াদের পাতে দেওয়াই চ্যালেঞ্জ। কারণ এখন একটি ডিমের দাম ৭ টাকা। আপেল বা কমলালেবুও সস্তা নয়। পড়ুয়া পিছু ২০ টাকা বাড়লেও হয়তো ডিম, মাংস বা মরসুমি ফল দু-একদিনের বেশি দেওয়া সম্ভব নয়।

শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, মুরগির মাংস কোথাও ২০০ টাকা কোথাও ২২০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে। কমলালেবু ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা প্রতিটি। কলা ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে। আবার প্রান্তিক বা প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের হাজিরা অনুযায়ী ফলের জোগান দেওয়াও মুশকিল বলে শিক্ষকদের একাংশের দাবি।

পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির বীরভূম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধীর দাস বলেন, ‘‘অবিবেচকের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্টে শিক্ষকদের কপালে ভাঁজ পড়ল।’’ নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির বীরভূম জেলা সম্পাদক আশিস বিশ্বাস বলেন, ‘‘মিড ডে মিলের বরাদ্দ না বাড়ালে এই ভাবে মিড ডে মিল সরবরাহ করা শিক্ষকদের পক্ষে যন্ত্রণাদায়ক।’’ তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষা সেলের বীরভূম জেলা সম্পাদক প্রলয় নায়েক অবশ্য বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা মেনে শিক্ষকদের কাজ করতে হবে। এটা তাঁদের দায়িত্ব।’’

কড়িধ্যার ওই স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি ওই স্কুলে পর্যন্ত ৪৪০ পড়ুয়া রয়েছে। মিড-ডে মিল খায় আড়াইশো পড়ুয়া। এ দিন স্কুলে মরসুমি ফল নিয়েছে তারাই। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক যামিনীকান্ত সাহা ও সহ শিক্ষক পার্থসারথি ঘোষ বলছেন, ‘‘পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের পাতে পুষ্টি জোগাতে স্কুলেই মাশরুম চাষ হয়। সপ্তাহে দু’দিন ডিম ও মাসে একদিন মাংস খাওয়াই। ছাত্র পিছু সপ্তাহে ২০ টাকা বরাদ্দ বৃদ্ধি হলে প্রতি বুধবার মরসুমি ফল ও মাসে আর একদিন মাংস খাওয়ানো যায় কি না ভাবা হচ্ছে।’’

ওই স্কুলের পড়ুয়া ঈশিকা দাশ, সুতপা কর্মকার, রাজা ধীবরদের কথায়, ‘‘এমনিতেই আমাদের স্কুলে মিড-ডে মিল ভালই হয়। এখন আবার ফলও দেওয়া হচ্ছে। বেশ ভাল লাগছে।’’

Mid Day Meal Rampurhat school student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy