এ বার বরাবাজার থানার বান্দোয়ান-বানজোড়া পঞ্চায়েতের বিজেপির জয়ী এক মহিলা সদস্যকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল। বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘শুক্রবার রাতে বরাবাজার থানার পাথরঘাটা গ্রামে তাঁদের পঞ্চায়েতের সদস্যা বালিকা ওরাংকে বাড়ির বাইরে ডেকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বালিকা ও তাঁর স্বামী মথুর ওরাংয়ের চিৎকারে পড়শিরা ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা মোটরবাইক ফেলে পালায়।’’ পুলিশ মোটরবাইকটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। শনিবার সকালে মথুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন দাবি করলেও, পুলিশের পাল্টা দাবি, অভিযোগ জমা পড়েনি। তৃণমূল নেতৃত্বও পুরোটাই বিজেপির নাটক বলে দাবি করেছেন।
কয়েক সপ্তাহ আগে আগে পাড়া পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির এক সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। পরে তিনি ও ওই পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির আরও এক সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন।
ক’দিন আগে সাঁতুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির এক সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি পালিয়ে গিয়ে পানাগড় সেনা ছাউনিতে ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। তারই মধ্যে ফের বান্দোয়ান-বানজোড়া পঞ্চায়েতের ওই মহিলা সদস্যাকে নিয়ে অভিযোগে সরব হয়েছেন বিজেপি জেলা নেতৃত্ব।
মধ্যবয়সী বালিকার অভিযোগ, ‘‘শুক্রবার রাতে সবে আমরা ঘুমাতে যাচ্ছিলাম। সেই সময় গ্রামের এক পরিচিত তৃণমূল কর্মী বাড়িতে ঢুকে জরুরি কথা আছে বলে আমাকে বাইরে ডাকে। বাড়ির বাইরে যেতেই হঠাৎ পিছন দিক থেকে এক জন আমার মুখে কাপড় দিয়ে বাঁধার চেষ্টা করে। আরও এক জন আমার হাত দুটো চেপে ধরে। বিপদ বুঝে আমি চিৎকার করে উঠি।’’ পিছনেই ছিলেন তাঁর স্বামী মথুর। তাঁর দাবি, ‘‘দু’-তিন জন ছেলে আমার স্ত্রীকে মুখে কাপড় গুঁজে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে দেখে আমিও চিৎকার করে উঠি। পড়শিরা ছুটে আসতেই ওরা অন্ধকারে পালিয়ে যায়।’’ তিনি জানান, দুষ্কৃতীরা মোটরবাইক ফেলে রেখে গিয়েছিল। রাতেই খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মোটরবাইকটি তুলে নিয়ে যায়। তাঁর দাবি, এ দিন সকালে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিলে পুলিশ তা জেনারেল ডায়েরি হিসেবে নিয়েছে। কিন্তু, এফআইআর করেনি। এমনকী অভিযোগের ‘রিসিভড কপি’ও দেয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। যদিও জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘কোনও অভিযোগই জমা দেননি তাঁরা।’’
বান্দোয়ান-বানজোড়া পঞ্চায়েত এত দিন তৃণমূলের দখলে ছিল। এ বার ভোটে ওই পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পাঁচটি পেয়েছে। বিজেপি চার, সিপিএম দুই এবং নির্দল একটি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা জোট গড়ে সাতটি আসনে পঞ্চায়েতের বোর্ড গড়তে উদ্যোগী হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর। তা ঠেকাতেই বালিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতা মদন গড়াই।
তবে তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালির দাবি, ‘‘বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার কুৎসা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। সে জন্য নতুন নতুন নাটকের আমদানি করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy