এই সেই পরীক্ষাগার। নিজস্ব চিত্র
হাওয়া অফিস বলছে এখন কালবৈশাখীর মরসুম। কালবৈশাখী মানেই হঠাৎ ঝড়। সঙ্গে কখনও বৃষ্টি। চকিতে বজ্রপাত। কিন্তু বিদ্যুৎ চমকালেই সব সময় যে বাজ পড়তে দেখা যায়, এমন নয়। বিজ্ঞান বলছে, বায়ুমণ্ডলীয় স্তরে মেঘে মেঘে ঘর্ষণে যে বিদ্যুৎ চমকায় সেটা ভূ-পৃষ্ঠে না পড়ায় লক্ষ্য করা যায় না। কী পরিমাণ তড়িৎ ক্ষেত্র সৃষ্টি করে বিদ্যুৎ চমকায় এবং সেগুলি সংখ্যায় কত— এ বার থেকে রামপুরহাট কলেজের ফিজিক্সের পরীক্ষাগারে জানা যাবে।
কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন দফতরের অধীনস্থ উচ্চ শিক্ষা মিশন বা রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযানের আর্থিক সহযোগিতায় এই ল্যাবরেটরি রামপুরহাট কলেজে আগামীকাল, বুধবার ১৯ এপ্রিল থেকে খুলে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ৪৮০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ভূ-পৃষ্ঠে কত বার বজ্রপাত হয়েছে এবং সেই বজ্রপাতের তড়িৎ ক্ষেত্র কতটা, সেই হিসাবও ওই ল্যাব জানান দেবে। তবে সেটা সাধারণের জন্য ঘোষণা করা হবে না। কেবলমাত্র বায়ুমণ্ডলের স্তর নিয়ে গবেষণারত পদার্থবিদ্যার পড়ুয়ারা সেই তথ্য তাদের গবেষণার স্বার্থে সংগ্রহ করতে পারবেন।
রামপুরহাট কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তপনকুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নাগাল্যান্ড সরকারের কোহিমা বিজ্ঞান কলেজ ও রামপুরহাট কলেজের যৌথ উদ্যোগে এই গবেষণাগার তৈরি হচ্ছে। গবেষণাগারের দায়িত্ব আছেন কোহিমা বিজ্ঞান কলেজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযানের পক্ষে প্রকল্পের মুখ্য গবেষক সঞ্জয় শর্মা।’’ কোহিমা বিজ্ঞান কলেজে পিএইচডি-র ছাত্র রামপুরহাট কলেজের প্রাক্তন ছাত্র পার্থ রায়ের অবদান গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেছেন তপনকুমার ভট্টাচার্য।
কী ভাবে কাজ করবে এই পরীক্ষাগার?
পার্থ রায় বলেন, ‘‘বায়ুমণ্ডল স্তরে আবহাওয়ার তারতম্য ঘটলে সামাজিক ক্ষেত্রে তার কী রকম প্রভাব পড়তে পারে তা বুঝে গবেষণাগার থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন গবেষকরা। যেমন, ঘনীভূত মেঘে কী পরিমাণ বজ্রপাত হতে পারে তা পরিমাপ করা যাবে। অনেক ক্ষেত্রে বন্যা, খরা বা আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারা যাবে।’’ পার্থবাবু জানান, এই গবেষণাগারের মাধ্যমে বৃষ্টিপাতের ফোঁটার সাইজ পরিমাপ করার জন্য ‘পারসিভেল ডিসড্রমিটার’ যন্ত্র বসানো হয়েছে। এ ছাড়াও বৃষ্টিপাতের ঘনত্ব এবং বৃষ্টিপাত পরিমাপ করার যন্ত্র বসানো হয়েছে। আবার ৪৮০ কিলোমিটার দূরত্বের ভূ-পৃষ্ঠে বজ্রপাতের সংখ্যা নির্ণায়ক যন্ত্রও বসানো হয়েছে।
১৯ এপ্রিল এই প্রকল্পের উদবোধন হবে। অনুষ্ঠান ঘিরে নাগাল্যন্ড সরকারের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ দফতরের আধিকারিকগণ ছাড়াও গবেষণারত অনেক পড়ুয়া থাকবেন। থাকার কথা রামপুরহাট কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের অনেকেরই। কলেজের দাবি, রাজ্যে এই ধরনের গবেষণাগার এই প্রথম। এই ধরণের গবেষণাগার কলেজের মান উন্নয়নে সাহায্য করবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy