Advertisement
১৮ মে ২০২৪

মেলায় নিন্দা নোট বাতিলের

শ্রমিকদের সমস্যা মেটাতে বাঁকুড়ায় উপশ্রম কমিশনারের অফিস ও শ্রম-আদালত চালু করার আশ্বাস দিয়ে গেলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। আর পুরুলিয়ায় বললেন রঘুনাথপুরে শিল্পতালুক গড়ে তুলতে শ্রম দফতর আরও দ্রুত কাজ করবে।

বাঁকুড়া শ্রমিকমেলায়। ছবি:নিজস্ব চিত্র।

বাঁকুড়া শ্রমিকমেলায়। ছবি:নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া ও রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৩৫
Share: Save:

শ্রমিকদের সমস্যা মেটাতে বাঁকুড়ায় উপশ্রম কমিশনারের অফিস ও শ্রম-আদালত চালু করার আশ্বাস দিয়ে গেলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। আর পুরুলিয়ায় বললেন রঘুনাথপুরে শিল্পতালুক গড়ে তুলতে শ্রম দফতর আরও দ্রুত কাজ করবে। রাজ্য সরকার যে শ্রমিকদের পাশে আছে দাবি করে মলয়বাবু কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরোধীতার কাজেও লাগালেন মেলার মঞ্চকে।

শনিবার বাঁকুড়া জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম এবং রঘুনাথপুর শহরের এটিম ময়দানে দু’দিনের শ্রমিক মেলার উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। বাঁকুড়ায় সহ-শ্রম কমিশনারের অফিস থাকলেও উপশ্রম কমিশনারের দফতর রয়েছে দুর্গাপুরে। শ্রমিক ও মালিক পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বিবাদ বাঁধলে অনেক সময়ই তা বাঁকুড়ায় সহ-শ্রম কমিশনারের দফতরে মেটে না। তখন শ্রমিক বা মালিক পক্ষকে দুর্গাপুরে উপ শ্রম কমিশনারের দফতরে ছুটে যেতে হয়। এ ছাড়া শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া ও প্রশাসনিক নানা কাজের জন্যও প্রায়ই দুর্গাপুরে যেতে হয় জেলায় উপ শ্রম কমিশনারের দফতর না থাকায়। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের তরফে আগেও বহুবার জেলায় উপ শ্রম কমিশনারের দফতর চালুর দাবি তোলা হয়েছে।

মন্ত্রী এ দিন সেই প্রসঙ্গ ধরে বলেন, “শীঘ্রই এই জেলায় শ্রম কমিশনারের অফিস তৈরি করা হবে। এ ছাড়াও এখানে শ্রম আদালতও চালু করতে চলেছি আমরা।” জেলায় শ্রম ভবন গড়ার জন্য জেলা প্রশাসনকে জমি দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল শ্রম দফতর। মলয়বাবু এ দিন জানান, জেলা প্রশাসন জমির ব্যবস্থা করেছে। শীঘ্রই সেই জমি সংক্রান্ত তথ্য শ্রম দফতরকে জানাবে জেলা প্রশাসন। জমি পাওয়ার পরেই শ্রম ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

জেলা আইএনটিটিইউসি সভানেত্রী অলকা সেন মজুমদার বলেন, “বাঁকুড়ায় শ্রম আদালত ও উপশ্রম কমিশনারের দফতর গড়া হলে শ্রমিকদের সমস্যা অনেকটাই মিটে যাবে।” যদিও মন্ত্রীর ওই আশ্বাসে শ্রমিকদের বেশ একটা সুবিধা হবে বলে মনে করছেন না সিটুর বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক সৌমেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “শ্রমিক ও মালিক পক্ষের দ্বন্দ্ব মেটাতে এখন শ্রম মন্ত্রক বা প্রশাসন কেউই তেমন একটা সক্রিয় নন। কাজেই জেলায় শ্রম আদালত বা উপ শ্রম কমিশনারের দফতর চালুর আগে রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের শ্রমিক দরদি হওয়া প্রয়োজন।”

বাঁকুড়ার মঞ্চে এ ভাবে যখন শ্রমিকদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন মন্ত্রী, রঘুনাথপুরে তাঁর বক্তৃতায় উঠে এল কেন্দ্রের বিরোধীতা। তিনি সেখানে গত ছ’ বছরে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য কি কাজ করেছে তার ফিরিস্তি পেশ করেন। তাঁর দাবি, ন্যূনতম মজুরি তিন গুণ বাড়ানো হয়েছে। গত সাড়ে পাঁচ বছরে দফতর শ্রমিকদের ৬৬১ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত কিছু হোঁচট খেয়েছে কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে। মলয়বাবুর দাবি, নোট বাতিলের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে রাজ্যের অসংগঠিত শিল্পে। রাজ্যের বাইরে যাঁরা কাজ করতে গিয়েছিলেন কাজ হারিয়ে তাঁরা ফিরে আসছেন। চা বাগানে শ্রমিকেরা মজুরি পাচ্ছেন না। শ্রমমন্ত্রী দাবি করেন, চটকলের প্রায় তিরিশ শতাংশ শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। তাঁদের মজুরি দেওয়া নিয়েও টালবাহানা শুরু হয়েছে।

বাঁকুড়ার সহ-শ্রমকমিশনার সুমন্তশেখর রায় জানান, দু’দিনের শ্রমিক মেলায় অসংগঠিত ও অন্য ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য সরকারি নানা সুযোগ সুবিধা তুলে ধরা হচ্ছে। রয়েছে বেশ কিছু স্টল। নানা অনুষ্ঠানও হবে।

বাঁকুড়ার শ্রমিক মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, বাঁকুড়ার জেলা সভাপধিপতি অরূপ চক্রবর্তী প্রমুখ। রঘুনাথপুরের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি, মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) দেবময় চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Moloy Ghatak Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE