Advertisement
২০ মে ২০২৪

কর বাড়তে চলেছে পুরুলিয়ায়

ফলে নানা চাপে পুরসভার নিজস্ব আয়ের ভাণ্ডার ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছিল। এ ছাড়া, শহরের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দফতরের কাছেও মোটা টাকার কর বকেয়া রয়েছে পুরসভার।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৩৯
Share: Save:

পুরকর বাড়তে চলেছে পুরুলিয়ায়। টানা চোদ্দো বছর পরে এ বার কর বাড়াতে চেয়ে পুরুলিয়া পুরকর্তৃপক্ষ রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীন সেন্ট্রাল ভ্যালুয়েশন বোর্ডের কাছে প্রস্তাব পাঠাতে চলেছে। সেখান থেকে অনুমোদন আসার পরে পুরসভা নতুন কর ঘোষণা করবে।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩-’০৪ আর্থিক বছরে শেষবার পুরুলিয়া শহরে কর ঘোষণা করা হয়েছিল। তার পরে মাঝের ১৪ বছরে নতুন করে করের মূল্যায়ণ হয়নি। তাই এখনও সেই আগের করই নিয়ে আসছে পুরসভা। অথচ শহর বেড়েছে আড়েবহরে। জনবসতিও অনেক বেড়ে গিয়েছে। ফলে ২৩টি ওয়ার্ডের এই পুরসভার আয় বাড়ানোর সুযোগ থাকলেও তা কাজে লাগানো হয়নি। তেমনই পুরএলাকার উন্নয়নের জন্য আর্থিক চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরসভার কোষাগারও সঙ্কুচিত হয়েছে।

অথচ পুরবিধি অনুযায়ী, প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নতুন করে করের মূল্যায়ণ করার কথা পুরসভার। কিন্তু পুরুলিয়ার ক্ষেত্রে তা হয়নি। পুরুলিয়ার পুরপ্রধান সামিমদাদ খান বলেছেন, ‘‘মাঝের এই সময়টাতে নানা কারণে করের পুর্নমূল্যায়ণ করা যায়নি। তবে নতুন করে করের মূল্যায়ণের কাজ শুরু করা হয়েছে।’’

পুরসভার হিসেব মোতাবেক এই শহরে কমবেশি ৪০ হাজার বাড়ি-দোকান ইত্যাদি রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে পুরসভা মোটে ২৫ হাজার বাড়ি-দোকান ইত্যাদির কর পায়। ওই চোদ্দো বছরে ঘর-বাড়ির যেটুকু পরিবর্তন হয়েছে, সে সবের হিসেব পুরসভার খাতায় ওঠেনি।

পুরসভা সূত্রের খবর, তাদের আয় বছরে কমবেশি সাড়ে পাঁচ কোটি। অথচ খরচ অনেক বেশি। পুরসভার প্রায় ১২০০ অস্থায়ী কর্মীর বেতনের খরচও ওই তহবিল থেকে দিতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে কাউন্সিলরদের ভাতা কয়েকগুণ বাড়ানোর জেরে বিতর্ক তৈরি হয়। সেই ভাতাও দেওয়া হয় পুরসভার এই তহবিল থেকেই। পুরপ্রধান জানিয়েছেন, অস্থায়ী কর্মীদের বেতন-সহ নানা খাতে পুরসভাকে আয়ের থেকে প্রতি মাসে ৬০ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে।

ফলে নানা চাপে পুরসভার নিজস্ব আয়ের ভাণ্ডার ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছিল। এ ছাড়া, শহরের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দফতরের কাছেও মোটা টাকার কর বকেয়া রয়েছে পুরসভার। এই পরিস্থিতিতে পুরসভা শেষ পর্যন্ত কর বাড়ানোর পথ নিচ্ছে। কতটা বাড়তে পারে কর? পুরপ্রধান বলেন, ‘‘মাঝ খানে দু’দফায় নতুন করে করই নির্ধারিত হয়নি। তাই কর অন্তত কয়েক গুন বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।’’

পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘পুরসভা চালাতে কর আদায়ের প্রয়োজন ঠিকই, তবে হঠাৎ করে এক লাফে কয়েক গুন কর বেড়ে গেলে অনেকেই সমস্যায় পড়বেন। এত দিনে কেন পুরসভার ঘুম ভাঙল?’’

পুরএলাকার সৌন্দর্যায়নের দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল বিভাস দাস বলেন, ‘‘ঘাটতি মেটাতে প্রতি মাসেই উন্নয়নের তহবিলেই হাত পড়ছে। তাই আয় বাড়ানো ছাড়া পুরসভার সামনে অন্য কোনও রাস্তা খোলা নেই।’’ তিনি জানান, বাইরে থেকে শহরে ঢোকা গাড়ি থেকেও পার্কিং বাবদ কর আদায়ের ভাবনা তাঁদের রয়েছে। সাহেববাঁধ থেকেও বিকল্প কিছু আয়ের রাস্তা তাঁরা ভেবেছেন। খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipal tax tax Purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE