আঁতুর: পুরুলিয়া সদর হাসপাতালেই খোলা নিকাশি। নিজস্ব চিত্র
কোথাও দিনের পর দিন জমে রয়েছে আবর্জনা। কোথাও পরিষ্কার হয় বটে, তবে নিয়মিত নয়। শহরবাসী নাজেহাল আর মশাদের বাড়বাড়ন্ত। এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়াকে ভয় দেখাচ্ছে ম্যালেরিয়া।
পুরুলিয়া পুরসভা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই। সাফাইয়ের জন্য জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী একগুচ্ছ ঘোষণা করে গিয়েছেন। কিন্তু তার ফল মেলার আগেই ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় কি না, সেই আশঙ্কায় রয়েছেন শহরের অনেক বাসিন্দাই। একাধিক ওয়ার্ডে প্লাস্টিক বর্জ্যে বুজে গিয়েছে নিকাশি নালা। প্রধান নিকাশির হালও প্রায় একই। ওই নালাগুলিই আপাতত মশার আঁতুর ঘর। শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনেও মশার উপদ্রব থেকে রেহাই মিলছে না। লিখিত ভাবে সমস্যার কথা পুরসভাকে জানিয়েছেন তাঁরা।
পুরুলিয়ার পুরপ্রধান সামিমদাদ খান অবশ্য দাবি করেছেন, ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার মোকাবিলায় এ বারে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছে। কী ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে সেই বৈঠকে তার প্রাথমিক রূপরেখাও তৈরি করা হয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের নোডাল অফিসার সুমিত বক্সী বলেন, ‘‘এ বারে আমরা আশিটি দল তৈরি করেছি। প্রতি দলে দু’জন করে রয়েছেন। তাঁরা শহরের সমস্ত ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি ঘুরে জল জমে রয়েছে কি না দেখবেন। সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হবে।’’ তিনি জানান, ১ মে থেকে শপিং মল, হোটেল, আবাসন— সর্বত্র পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পুরসভার কন্ট্রোল রুমে ওই দলগুলি জানাবে। জমা জল সরানোর বন্দোবস্ত করবে পুরসভা।
পুরসভার কাছে আপাতত চারটি ফগিং মেশিন রয়েছে। তবে শহরের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সেই কামান নিয়ে মশা মারতে পুরসভাকে পথে নামতে বিশেষ দেখা যায় না। এই প্রসঙ্গে পুরসভা সূত্রের দাবি, খাতায় কলমে চারটি যন্ত্র থাকলেও আদপে তার মধ্যে দু’টি মাত্র সচল। হাতের পাঁচ সেই দু’টি যন্ত্র নিয়ে অচিরেই পথে নামা হবে বলে আশ্বাস মিলেছে। পুরসভা সূত্রের খবর, ১ মে থাকে টানা পাঁচ দিন শহরের ২৩টি ওয়ার্ডে এই অভিযান চালানো হবে। পরে ফের ১৫ মে থেকে পাঁচদিন অভিযান চালবে। তবে মশার লার্ভা পরীক্ষা করার মতো পতঙ্গবিদ পুরসভার নেই। সুমিতবাবু জানান, এই ব্যাপারে তাঁরা স্বাস্থ্য দফতরের সহায়তা চাইবেন।
এ দিকে জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাস পাত্র বলেন, ‘‘বর্তমানে স্বাস্থ্য দফতরে পতঙ্গবিদ নেই। চলতি মাসে দু’জন পতঙ্গবিদ রাজ্য থেকে আমাদের পাওয়ার কথা। তবে আমাদের কাছে এখন মহামারি বিশেষজ্ঞ রয়েছেন।’’
তবে এই সমস্ত কিছুর পাশাপাশি আবর্জনা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করে চলেছে পুরসভা। কাউন্সিলর বিভাস দাস বলেন, ‘‘পুরসভার চেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকদেরও সচেতন হওয়াটা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy