Advertisement
E-Paper

কন্যাশ্রীদের পাশে দাঁড়াতে গাছবিলি

ওদের কেউ বাবা-মায়ের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের বিয়ে আটকে দিয়েছিল। কেউ বা পড়াশোনায় দাঁড়ি না টেনে স্বাবলম্বী হতে চায়। এমনই কন্যাদের নিয়ে সারা রাজ্যের সঙ্গে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায় রবিবার কন্যাশ্রী দিবস পালিত হল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৬ ০০:২৪

ওদের কেউ বাবা-মায়ের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের বিয়ে আটকে দিয়েছিল। কেউ বা পড়াশোনায় দাঁড়ি না টেনে স্বাবলম্বী হতে চায়। এমনই কন্যাদের নিয়ে সারা রাজ্যের সঙ্গে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায় রবিবার কন্যাশ্রী দিবস পালিত হল।

যেমন পুঞ্চার মুদিডি গ্রামের সপ্তম শ্রেণির যমুনা মুদিকে তার বাবা-মা বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। অথচ যমুনা মুদি বিয়ে নয়, লেখাপড়া শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়ে বাড়ি ছেড়েছিল। ২০১৫ সালের মে মাসে যমুনা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত আবাসিক স্কুলে আশ্রয় নেয়। কয়েক মাস সেখানেই সে থাকে। চলে পড়াশোনাও। পরে তার বাবা-মা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে মেয়েকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান। রবিবার পুঞ্চা ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যমুনার হাতে সেই সাহসী পদক্ষেপের জন্য শংসাপত্র এবং উপহার তুলে দেওয়া হল। যমুনা জানিয়েছে, সবাই যদি পাশে থাকে একদিন তার স্বপ্ন সফল হবে। সে বড় হয়ে স্বাবলম্বী হতে চায়। এ দিন বান্দোয়ান ব্লক অফিসেও কন্যাশ্রী দিবস উপলক্ষ্যে পড়ুয়ারা মিছিল করে।

আবার অনেক মেয়েই নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। পুরুলিয়ার রবীন্দ্র ভবনে কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশ সেই মেয়েদের জন্য একটি স্টল দিয়েছিল। যদি পুলিশের কাজ পেশা হিসেবে বেছে নিতে হয়, তাহলে আবশ্যিক নিয়মাবলী কী কী তা জানাতে প্রচারপত্র বিলি করা হয় ছাত্রীদের মধ্যে। ছাত্রীদের জিজ্ঞাসার উত্তরও দেন স্টলে উপস্থিত থাকা পুলিশ কর্মীরা। অনুষ্ঠানে ছিলেন পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার, জাতীয় মহিলা ফুটবলার প্রতিমা বিশ্বাস।

এ দিন কোথাও কোথাও প্রশাসন ছাত্রীদের হাতে মূল্যবান গাছের চারা বিলি করে। লক্ষ্য ওই ছাত্রীরা যখন বড় হবে, তখন ওই গাছ বিক্রি করে তাদের ভবিষ্যতের কাজে লাগানো যাবে। কন্যাশ্রী প্রাপকদের দু’টি করে মূল্যবান গাছের চারা দেয় পাড়া ব্লক প্রশাসন। নবম শ্রেণির কন্যাশ্রী প্রকল্পে থাকা প্রায় ৩০০ জন ছাত্রীকে একটি করে মেহগনি ও একটি গামার গাছের চারা দেওয়া হয়। বিডিও সমীরণ বারিক জানান, ব্লকে কন্যাশ্রী প্রাপকের সংখ্যা কমবেশি ৫০০০। চলতি বছরে দেড় হাজার কন্যাশ্রীকে গাছের চারা দেওয়া হবে। পরের বছর বাকি সমস্ত কন্যাশ্রীই এই দু’টি গাছের চারা পাবে।’’কন্যাশ্রী প্রকল্পের মধ্যে এলে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের এমনিতেই কিছু আর্থিক সাহায্য দেয় রাজ্য। পাড়ার ব্লক প্রশাসন কন্যাশ্রীদের মেহগিনি ও গামার গাছের মত দামী গাছের চারা দিয়ে একসাথে সবুজায়ন ও কন্যাশ্রীদের আর্থিক মান উন্নয়ন ঘটাতে চাইছে। বস্তুত মেহগিনি ও গামার কাঠের বাজার মূল্য বরাবরই ভাল। চাহিদাও রয়েছে। বিডিও বলেন, ‘‘ছাত্রীরা কথা দিয়েছে চারাগুলিকে যত্ন করে বড় করে তুলবে। তাতে একদিকে যেমন সবুজায়ন হবে, তেমনই গাছগুলি থেকে আর্থিক সুবিধাও পাবে কন্যাশ্রীরা।”

এ দিন বিভিন্ন জায়গায় কন্যাশ্রীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়। পুরুলিয়া রবীন্দ্র ভবনে কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠানে আনন্দমঠ হোমের আবাসিক মেয়েরা নৃত্যনাট্যে মঞ্চস্থ করলেন রবীন্দ্রনাথের ‘তোতা কাহিনী’। জেলাস্তরের এই অনুষ্ঠানে মেয়েরা ছৌনৃত্যও প্রদর্শন করে। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর ম্যাজিক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল।

বিষ্ণুপুরে পথ পরিক্রমা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কন্যাশ্রী দিবস পালন করা হয়। মহকুমা প্রশাসন ও পুরসভার যৌথ উদ্যোগে এ দিন দুপুরে যদুভট্ট মঞ্চে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠানের।

Kanyashree
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy