Advertisement
E-Paper

শিক্ষা পৌষমেলা, ঢেলে সাজছে জয়দেব

পৌষমেলা নিয়ে অনিশ্চয়তার মেঘ ঘনিয়েছে আগেই। মামলা চলছে জাতীয় পরিবেশ আদালতে। এই পরিবেশে জয়দেব মেলা নির্বিঘ্নে করতে তার সার্বিক পরিকাঠামো ঢেলে সাজার পরিকল্পনা নিল জেলা প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০৯
ভিড়ের মেলা জয়দেব। — ফাইল চিত্র।

ভিড়ের মেলা জয়দেব। — ফাইল চিত্র।

পৌষমেলা নিয়ে অনিশ্চয়তার মেঘ ঘনিয়েছে আগেই। মামলা চলছে জাতীয় পরিবেশ আদালতে। এই পরিবেশে জয়দেব মেলা নির্বিঘ্নে করতে তার সার্বিক পরিকাঠামো ঢেলে সাজার পরিকল্পনা নিল জেলা প্রশাসন।

কী কী করা হবে, তা ঠিক করতে শনিবার বৈঠকে বসে প্রশাসন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, মেলার যানজট থেকে শুরু করে খোলা জায়গায় শৌচকর্ম, পানীয় জল থেকে আপৎকালীন পরিষেবা— নানা কাজ আগেভাগেই সেরে রাখা হবে।

জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, “জয়দেব মেলাকে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংলগ্ন বর্ধমান জেলা পুলিশ-প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। মেলা নিয়ে একটি ওয়েবসাইট চালু করা থেকে শুরু করে ‘ক্লিন এবং গ্রিন জয়দেব মেলা’র জন্যে নানা কাজ করা হবে।”

ফি বছর পৌষ সংক্রান্তির দিনে অজয় নদে ডুব দিতে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী জয়দেবে হাজির হন। বাউল-ফকিরদের কয়েক দিনের মেলাও বসে অজয়ের ধারে। তাতে রাজ্য তো বটেই, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীদের ঢল নামে। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে জয়দেব-কেন্দুলিকে নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েত হিসেবে ঘোষণা করার কথা জেলা প্রশাসনের। প্রশাসনের একাংশের দাবি, নির্মল বাংলা অভিযানে ওই পঞ্চায়েতের সব বাড়িতে শৌচাগার হয়েছে। সে কথা মাথায়ে রেখে নির্মল জয়দেব মেলার সিদ্ধান্তও হয়েছে।

শনিবার জয়দেবের অতিথি নিবাসে ওই বৈঠকে ছিলেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী, বোলপুরের মহকুমাশাসক শম্পা হাজরা, বোলপুরের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ, ইলামবাজারের বিডিও উৎপল পাতসা, জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ কর্মাধ্যক্ষ জাফারুল ইসলাম, ইলামবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নবকুমার ধীবর এবং জয়দেব-কেন্দুলি পঞ্চায়েতের প্রধান। ঠিক হয়েছে, মেলায় নির্ধারিত জায়গাতেই স্টল করতে হবে, নোংরা-আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গাতেই ফেলতে হবে। চত্বর প্লাস্টিকমুক্ত রাখার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।

এই প্রথম নামমাত্র মূল্যে মেলায় স্টল বুকিংয়ের ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। অনলাইন এবং অফলাইন বুকিং-এর ব্যবস্থাও থাকবে। আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে জয়দেব মেলার ওয়েবসাইট (www.joydebmela.co.in) চালু করা হবে। সূত্রের খবর, মেলা নিয়ে ওয়েবসাইটে যাবতীয় তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি স্টল বুকিং করার থাকবে ব্যবস্থা। আবার যাঁরা অনলাইন বুকিং করতে পারবেন না, তাঁদের জন্য জয়দেবে খোলা থাকছে বিশেষ কাউন্টার। স্টল এবং আখড়ার জন্যে নামমাত্র খরচ ধার্য হয়েছে। যেমন, প্রতি বর্গফুট এলাকায় দিতে হবে কোথাও দু’টাকা, পাঁচ টাকা আবার কোথাও সাত টাকা। সরকারি স্টল, জেলা প্রশাসনের স্টলের জন্যেও সংশ্লিষ্ট দফতরকে স্টল বুকিং করে টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পথ আগলে কিংবা ছড়িয়ে ছিটিয়ে নয়। অজয়ের দু’ধারে মেলাকে নিয়ে যাওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

অতীতের জয়দেবের মেলায় খোলা জায়গায় শৌচকর্ম, পানীয় জলের অভাব, যানজটে দমকল, অ্যাম্বুলান্সের পথ আটকানোর বহু অভিযোগ উঠেছে। পার্কিং ঘিরে জোরজুলুমের অভিযোগও পেয়েছেন তাঁরা। সে সমস্ত বিশয় মাথায় রেখে সক্রিয় হয়েছে প্রশাসন। পর্যাপ্ত শৌচাগারের পাশাপাশি পানীয় জলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রাস্তার দু’ধারে থাকছে ব্যারিকেডের ব্যবস্থা। প্রাঙ্গণ প্লাস্টিক মুক্ত রাখতে নজর রাখবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। ২০১৬ জানুয়ারি মাসে জয়দেবে এসে বাউল উৎসবের সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরের বারও আসার কথা বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী আসছেন ধরে নিয়েই নিরাপত্তা, যানজট, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ নজর দিচ্ছে প্রশাসন। এলাকার বিধায়ক তথা মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী গতবার এসেছিলেন। এ বারও আসার কথা বলেছেন। আমরা সব রকমের প্রস্তুতি শুরু করেছি। আমরাও চাই মুখ্যমন্ত্রী আসুন।’’

poush mela joydebmela website
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy