Advertisement
E-Paper

বৃদ্ধাশ্রম গড়তে সাহায্যের আশ্বাস মন্ত্রীর

লক্ষ্য ছিল বৃদ্ধ বয়সে নিঃসঙ্গ জীবনের অবসাদ কাটানো। আর তারই জন্য এগারো বছর আগে রামপুরহাটের কিছু প্রবীণ গড়ে তুলেছিলেন ‘বিদ্যাসাগর প্রবীণ সভা’। নিজেদের মধ্যে ভাব-ভালবাসা, সুখ-দুঃখের অনুভূতি আদান প্রদানের মধ্যে দিয়ে উত্তরোত্তর সংস্থার শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৫ ০১:২৫
তখন চলছে আলোচনা। ছবি: অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়।

তখন চলছে আলোচনা। ছবি: অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়।

লক্ষ্য ছিল বৃদ্ধ বয়সে নিঃসঙ্গ জীবনের অবসাদ কাটানো। আর তারই জন্য এগারো বছর আগে রামপুরহাটের কিছু প্রবীণ গড়ে তুলেছিলেন ‘বিদ্যাসাগর প্রবীণ সভা’। নিজেদের মধ্যে ভাব-ভালবাসা, সুখ-দুঃখের অনুভূতি আদান প্রদানের মধ্যে দিয়ে উত্তরোত্তর সংস্থার শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছেও। বেড়েছে সদস্য সংখ্যা। সংস্থার আরও শ্রীবৃদ্ধির লক্ষ্যে রবিবার রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনে মিলিত হলেন ৭০ জন প্রবীণ। ভাত-ডাল-মাছের ঝোল দিয়ে একসঙ্গে দ্বিপ্রাহরিক আহারও সারলেন। আহার শেষে আগামী দিনে দুঃস্থ অসহায় প্রবীণদের এক ছাদের তলায় আনার জন্য রামপুরহাটে একটি বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলার জন্য পরস্পর অঙ্গীকারবদ্ধও হলেন।

সংস্থার সম্পাদক নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, মাসখানেকের প্রস্তুতি নিয়ে এ দিন সংস্থার সকল সদস্য মিলিত হয়েছিলেন। এ দিনই ছিল সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদন পেশের দিন। তার আগে সংস্থার প্রবীণ সদস্য ৮৭ বছরের বৃদ্ধ সত্যজিৎ মজুমদার সভার আরও শ্রীবৃদ্ধি কামনা করে বক্তব্য রাখেন। সত্যজিৎবাবুর বক্তব্যকে মর্মস্পর্শী ব্যাখ্যা করে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সত্যজিৎবাবু আমাদের অগ্রজ। এই বয়সেও তিনি সভায় উপস্থিত হয়েছেন। তাঁর উপস্থিতি আগামী দিনে আমাদের দিক নির্দেশনা করবে।’’ এর পরে মৃত সদস্যদের প্রতি শোকজ্ঞাপন করে তাঁদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে মিনিটখানেক নীরবতা পালন করা হয়।

সংস্থার কোষাধ্যক্ষ অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন জানান, পুরসভা রামপুরহাট গাঁধি স্টেডিয়াম লাগোয়া দু’ কাঠা জমি ‘বিদ্যাসাগর প্রবীণসভা’কে দান করেছে। সেখানে ইতিমধ্যেই সংস্থার সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতায় এবং এলাকার বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ শতাব্দী রায়ের নিজ নিজ এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে সংস্থার নিজস্ব ভবন গড়ে উঠছে। সংস্থার সম্পাদক নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্মাণের কাজ এখনও শেষ হয়নি। আগামী দিনে আমরা সংস্থার নিজস্ব ভবনেই মিলিত হবো।’’

এ দিকে, নিজেদের আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার লক্ষ্যে আত্মসমালোচনার কথাও এ দিন সংস্থার সদস্যদের মুখে শোনা গেল। আবার সংস্থার সামাজিক কাজকর্ম নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তোলেন। সেখানে সামাজিক কাজে সংস্থার সদস্যদের আরও এগিয়ে আসার কথা বলা হয়। কেউ কেউ আবার সংস্থার সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য পুরসভার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে সদস্য সংগ্রহ করার প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি প্রবীণ নাগরিকদের সরকারি সংস্থা থেকে ব্যাঙ্ক, ওষুধের দোকান— এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা কী ভাবে পাওয়া যায়, সেই সম্বন্ধেও আলোকপাত করা হয়। নিঃসঙ্গ জীবনে নানা রকম সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার সমাধান নিয়ে নিজেদের সজাগ থাকার প্রসঙ্গও ওঠে।

এ দিন শহরের প্রবীণদের এই মিলন ক্ষেত্রে বিধায়ক তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত হতেই অনেকেই নতুন আশা দেখতে শুরু করেন। মন্ত্রীকে নিজেদের ‘অনুজপ্রতিম ভাই’, ‘ঘরের ছেলে’ উল্লেখ করে সদস্যদেরা বৃদ্ধাশ্রমের জন্য সরকারি জমি এবং সংস্থার নিজস্ব ভবন নির্মাণে আর্থিক সাহায্য দানের আবেদন করেন। মন্ত্রী অবশ্য তাঁদের নিরাশ করেননি। ভবন নির্মাণে এক লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করতেই খুশির রোল ওঠে প্রবীণদের মধ্যে। আশ্বাস মেলে বৃদ্ধাশ্রমের জমির বিষয়েও।

সভা শেষ করলেন নিজেদের স্বপ্ন আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর ওই প্রবীণেরা।

Rampurhat Old age home gandhi stadium
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy