Advertisement
E-Paper

সভার আগেই হামলা, ফুঁসল বাম

এই প্রথম বীরভূমে পা রাখতে চলেছেন ত্রিপুরার বাঙালি মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার। তার ২৪ ঘণ্টা আগেই রাতের অন্ধকারে ওই সভার সমর্থনে সিউড়ি শহরে থাকা হাজার খানেক দলীয় পতাকা, শতাধিক ফ্লেক্স ছিঁড়ে এবং মূল তোরণটিই ভেঙে খুলে নিল দুষ্কৃতীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
দুষ্কৃতীদের ধরার দাবিতে সিউড়ি থানায় স্মারকলিপি সিপিএমের।

দুষ্কৃতীদের ধরার দাবিতে সিউড়ি থানায় স্মারকলিপি সিপিএমের।

এই প্রথম বীরভূমে পা রাখতে চলেছেন ত্রিপুরার বাঙালি মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার। তার ২৪ ঘণ্টা আগেই রাতের অন্ধকারে ওই সভার সমর্থনে সিউড়ি শহরে থাকা হাজার খানেক দলীয় পতাকা, শতাধিক ফ্লেক্স ছিঁড়ে এবং মূল তোরণটিই ভেঙে খুলে নিল দুষ্কৃতীরা।

শনিবার গভীর রাতে জেলা সদরের এসপি মোড় থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার অংশের ঘটনা। যথারীতি অভিযোগের তির শাসকদলের দিকে। যদিও দায় অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এমন তাণ্ডবে ক্ষুব্ধ হয়ে রবিবার সকালেই দুষ্কৃতীদের ধরার দাবিতে শহরে প্রতিবাদ মিছিল করে সিপিএম। থানায় একটি স্মারকলিপিও দেন সিপিএম নেতৃত্ব। সরাসরি না হলেও ঘটনার জন্য তৃণমূলকেই দায়ী করেছে সিপিএম। তাদের যুক্তি, শহরের এই অংশের নজরদারিতে বহু সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। পুলিশ তার ফুটেজ খতিয়ে দেখলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।

আজ সোমবার দুপুরে সিউড়ির জেলা স্কুলের মাঠে একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছে জেলা সিপিএম। জেলায় সংগঠনের ভিত মজবুত করতেই এই সম্মেলন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা, ১০০ দিনের কাজ চালু করা, চিটফান্ডে প্রতারিতদের টাকা ফেরত, চাষিদের ফসলের লাভজনক দাম দেওয়ার মতো বেশ কয়েকটি দাবিকে তুলে ধরা হবে সম্মেলন থেকে। মূল বক্তা মানিক সরকারর। সম্মলেনের প্রস্তুতি স্বরূপ জেলার পাশাপাশি ফ্লেক্স, ব্যানার, দলীয় পতাকা, তোরণ, প্রচার স্তম্ভ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল সিউড়ি। সেগুলিই রাতের অন্ধকারে কেউ তছনছ করে দিয়েছে। এ দিন প্রতিবাদ মিছিল শেষে সিউড়ি থানায় স্মারকলিপি দিয়ে সিপিএম দাবি করে, যে বা যাঁরা জড়িত তাদের ধরুক পুলিশ। আইসি সমীর কোপ্তী না থাকায় স্মারকলিপি নেন ডেপুটি পুলিশ সুপার (আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক) আনন্দ সরকার। তিনি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের ধরার আশ্বাস দেন। যদিও পুলিশ তা না করলে সমাবেশ থেকেই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা।

ছেঁড়া ফ্লেক্স।

এ দিন সিপিএমের জেলা কার্যালয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন মনসা। তিনি বলেন, ‘‘কে বা কারা এ কাজ করেছে, সেটা পুলিশ দেখুক। তবে একটা কথা, আমাদের পতাকা নামিয়ে সেখানে শাসকদলের পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিপক্ষ রাজনৈতিক দলেকে কোনও সভা সমাবেশ করতে দেবে না বলে শাসকদল চেষ্টা চালাচ্ছে। তার নমুনা আগেই পেয়েছি।’’ তাঁর অভিযোগ, সমাবেশের জন্য জেলার ১১০টি বাসমালিককে অগ্রিম টাকা দেওয়া হলেও শাসকদলের কাছ থেকে হুমকি পেয়ে সব বাসমালিকই সে টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। ‘‘এ কেমন গণতন্ত্র? এ ভাবে বিপক্ষ রাজনৈতিক দলকে সভা সমাবেশ করা থেকে আটকানো যাবে না। সমাবেশ হবেই। এবং তা সফল ভাবে।’’—বলছেন মনসা। বিকল্প পরিবহণ ব্যবস্থা করে দলের কর্মী-সমর্থকেরা সমাবেশ আসবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের সিউড়ি শহর সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার। তাঁর দাবি, সিপিএম নিজেরাই এ কাজ করে আমাদের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। এ দিনই সাঁইথিয়ায় দলের যুব ও ছাত্র সংগঠনের অনুষ্ঠানে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী নাকি সিউড়িতে আসছেন। ওরা বলেছে তৃণমূল নাকি ওদের ফ্ল্যাগ ছিঁড়ে দিয়েছে। তৃণমূল কেন ফ্ল্যাগ ছিঁড়তে যাবে? তোমাদের লোক নেই। পাঁচ হাজার লোক হলেই জেলা স্কুলের মাঠটা ভরে যায়। তোমরা সেই লোকও আনতে পারবে না। আর তৃণমূলের নামে দোষ!’’ এমনকী, বাম তাঁদের কাছে ‘দরখাস্ত’ করলে, নিজেদের লোক দিয়ে তিনি ওই সভা ভরিয়ে দেবেন বলেও তাচ্ছিল্য করেন অনুব্রত।

যা শুনে জেলার এক প্রবীণ বাম নেতা বলছেন, ‘‘তৃণমূল কতটা ভয়ে রয়েছে, তা শনিবার রাতের ঘটনা এবং অনুব্রতর ওই প্রতিক্রিয়াতেই পরিষ্কার। আসলে ওরা ভীষণ ভীত। কারণ, ওরা জানে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ভরসা ওরা জোগাড় করতে পারেনি। তাই তো আমাদের নিয়ে তৃণমূলের এত মাথাব্যথা!’’

(নিজস্ব চিত্র।)

Manik Sarkar Assembly Suri Attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy