Advertisement
১৬ মে ২০২৪

অনাস্থায় হেরে লটারিতে জিতে সেই প্রধান পদেই

অনাস্থায় হেরেও লটারিতে জিতে প্রধান পদে থেকে গেলেন বান্দোয়ানের কুইলাপাল পঞ্চায়েতের প্রধান। তৃণমূলের সনকা সোরেনকে প্রধান নির্বাচিত করে পঞ্চায়েত চলছিল। পঞ্চায়েত গঠনের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে সরব হন বিরোধীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৬ ০২:২৬
Share: Save:

অনাস্থায় হেরেও লটারিতে জিতে প্রধান পদে থেকে গেলেন বান্দোয়ানের কুইলাপাল পঞ্চায়েতের প্রধান।

তৃণমূলের সনকা সোরেনকে প্রধান নির্বাচিত করে পঞ্চায়েত চলছিল। পঞ্চায়েত গঠনের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে সরব হন বিরোধীরা। এই পঞ্চায়েতে তৃণমূলের তিন, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার দুই ও সিপিএমের একটি আসন রয়েছে। পরে বিরোধীদের সঙ্গে মিলে দলের সদস্য উপপ্রধান নির্মল সোরেনও সনকাকে সরাতে চেয়ে জোট বেঁধে বিডিওকে চিঠি দেন।

সনকাকে সরাতে চেয়ে কয়েকবার অনাস্থা আনা হয়েছিল। প্রথম বারের অনাস্থার চিঠি কার্যকর হয়নি। সেই সময় পঞ্চায়েত আইন সংশোধন করে বলা হয়েছিল পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ গঠনের আড়াই বছরের আগে অনাস্থা আনা যাবে না। আনলেও তা কার্যকর হবে না। যুক্তি খাড়া করা হয়েছিল অনাস্থার টানাপড়েনে উন্নতি ব্যহত হবে। দ্বিতীয় দফায় চলতি বছরের মার্চ মাসে ফের অনাস্থার চিঠি দেন বিরোধীরা। সেই সময় অনাস্থার পক্ষে থাকা সদস্যদের জানানো হয়েছিল নির্বাচনী বিধি চালু থাকায় অনাস্থা আনা যাবে না। ১৪ জুন তৃতীয়বার অনাস্থা চেয়ে চিঠি দেন বিরোধীরা। তখন অনাস্থা ঠেকাতে শাসক দল আদালতের দ্বারস্থ হন। শেষ পর্যন্ত বান্দোয়ানের বিডিও ৮ অগস্ট অনাস্থার তলবি সভা ডাকেন। তলবি সভার দিনে প্রধান সনকা সোরেন এবং তৃণমূলের আরও এক সদস্য হাজির হননি। বিডিও অমলেন্দু সমাদ্দার জানিয়েছিলেন, তলবি সভায় অনাস্থার পক্ষে থাকা বিরোধীরা জয়ী হয়েছেন। সনকাদেবী সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন। পঞ্চায়েত আইন অনুসারে নতুন প্রধান নির্বাচন করা হবে। শুক্রবার প্রধান নির্বাচনের দিন ছিল।

কী হল? বিডিও অমলেন্দু সমাদ্দার জানান, এ দিন প্রধান নির্বাচনে ছয় সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূলের সনকাদেবী এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সদস্য উপেল কিস্কু প্রধান পদের জন্য দাবি জানান। নিয়মমাফিক ভোটাভুটি হয়। ভোটে দুটি পক্ষ তিনটি করে ভোট পান। টাই হয়ে যাওয়ায় লটারি হয়। তাতে জিতে যান সনকাদেবী। ফলে তিনি ফের প্রধান পদে নির্বাচিত হন।

এলাকার রাজনীতির কারবারীদের মতে, ভোটের ফল এমন হওয়ার কথা ছিল না। তৃণমূলের উপপ্রধান নির্মল সোরেন-সহ বিরোধীরা চার জন ছিলেন। অনাস্থার পক্ষে চার জনের সই ছিল। হিসাব অনুযায়ী, সনকাদেবীর পক্ষে দু’টি ভোট পড়ার কথা। কিন্তু তিনি পান তিনটি ভোট। স্থানীয় বাসিন্দা তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য মনীন্দ্রনাথ সোরেনের অভিযোগ, ‘‘বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলে বলেন উপপ্রধান নির্মল সোরেন এবং এলাকার এক তৃণমূল নেতা টাকার বিনিময়ে বর্তমান প্রধানকে ভোট দিয়েছেন। মানুষ এর জবাব দেবে।’’

উপপ্রধান নির্মল সোরেনের সঙ্গে বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। দলের বান্দোয়ান ব্লকের সভাপতি রঘুনাথ মাঝি বলেন, ‘‘দলের কুইলাপাল পঞ্চায়েতের সদস্যদের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। শেষমেষ তা মিটে গিয়েছে।’’ প্রধান পদে ফের নির্বাচিত হয়ে সনকাদেবীর দাবি তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Pradhan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE